অ্যাটর্নি জেনারেল’র সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ বাদ দেয়ার বক্তব্যে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চ

Hill Voice on Facebook

অ্যাটর্নি জেনারেল’র সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ বাদ দেয়ার বক্তব্যে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার প্রতিবাদ

হিল ভয়েস, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ঢাকা: পঞ্চদশ সংশোধনীর রুলের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল’র সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ বাদ দেয়ার বক্তব্যে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা গতকাল তাদের এক সভায় প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং এটর্নি জেনারেলের উক্ত বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংগঠনসমূহের সমন্বয়ে গঠিত সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা গতকাল ১৮ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় মহামান্য হাইকোর্টে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর প্রশ্নে রুলের শুনানিতে অ্যাটর্নিআ জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বিদ্যমান সংবিধানের অষ্টম অনুচ্ছেদের ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ বাদ দেয়া এবং তদস্থলে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ প্রতিস্থাপনের যে বক্তব্য রেখেছে তাতে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার দোহাই দিয়ে বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদি রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে সংবিধানের পরিবর্তন হবে আত্মঘাতী।

সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তে বলা হয়, রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম মৌলনীতি ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’কে বাদ দেয়ার বিষয়টি গনতন্ত্র, পরমতসহিষ্ণুতা, সংখ্যালঘুর অধিকার, আইনের শাসনের নাগরিকের সমতা, ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহির ব্যবস্থা, মুক্তিযুদ্ধ ও বৈষম্য বিরোধী চেতনার সম্পূর্ন পরিপন্থী। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী মনে করে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের পরিপন্থী হিসেবে সংবিধানে পরিবর্তন এবং পরবর্তীতে সংবিধানের ২ক অনুচ্ছেদে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ সংযোজন করার মধ্য দিয়ে নাগরিকদের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টির পাশাপাশি তাদেরকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে। সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার সংগঠনসমূহ তিন যুগ যাবৎ রাষ্ট্রধর্ম বাতিল এবং অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রতিষ্ঠার দাবি করে আসছে। সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা মনে করে অ্যাটর্নি জেনারেল’র শুনানিতে প্রদত্ত বক্তব্য একদিকে যেমন মুক্তিযুদ্ধের মূলচেতনা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের পরিপন্থী, অন্যদিকে জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চেতনার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা মাননীয় অ্যাটর্নি জেনারেলকে সংশ্লিষ্ট শুনানিতে তার প্রদত্ত বক্তব্য প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন ও মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে জাতি-ধর্ম-বর্ন নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সাংবিধানিক সমঅধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ হিন্দুলীগের মহাসচিব শংকর সরকারের সভাপতিত্বে এবং ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট(প্রভাষ-পলাশ) নির্বহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, সনাতন সংগঠন বাংলাদেশের সাজু চৌধুরী, রিসার্স এ্যান্ড এমপায়ারমেন্ড (রিও) সভাপতি প্রফেসর চন্দন সরকার, সনাতন একতা মঞ্চের স্বামী মহেশ্বরানন্দ মহারাজ, সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মিথুন ভট্টাচার্য্য (শুভ), বাংলাদেশ হিন্দু যুব মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক রাজেস নাহা, বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সজীব সরকার, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জাতিক সম্পাদক থিওফিল রোজারিও, ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ্মাবতি দেবী প্রমুখ।


হিল ভয়েস, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ঢাকা: পঞ্চদশ সংশোধনীর রুলের শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল’র সংবিধান থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ….

(Feed generated with FetchRSS)

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *