অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখায় নবজাতকের মৃত্যু, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

Dhaka Tribune

শরীয়তপুরে রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখায় নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে এই ঘটনার মূলহোতা সবুজ দেওয়ানকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব ও পুলিশের যৌথ বাহিনী।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) রাতে মামলাটি দায়ের করেন ওই নবজাতকের বাবা নূর হোসেন। মামলায় পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে একটি ক্লিনিকের সামনে অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় কয়েকজন চালকের বিরুদ্ধে। পরে ওই অ্যাম্বুলেন্সে থাকা অসুস্থ এক নবজাতকের মৃত্যু হয়। ওই নবজাতক ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ছাতিয়ানি গ্রামের নূর হোসেন সরদার ও রুমা বেগম দম্পতির সন্তান।

র‍্যাব-৮–এর মাদারীপুর ক্যাম্পের অধিনায়ক পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন বলেন, “রোগীসহ অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখার ঘটনার প্রধান আসামিকে আজ ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সদর উপজেলার চিকন্দি এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য র‍্যাব ও পুলিশ কাজ করছে।”

শিশুর স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই নবজাতক শিশুটির জন্ম হয়। জন্মের পর পরই শ্বাসকষ্টসহ শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে রাত ৮টার দিকে তারা ঢাকাগামী একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে রওনা হলে পথিমধ্যে চৌরঙ্গী মোড়ে সবুজ দেওয়ান নামের একজন স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্সচালক তাদের অ্যাম্বুলেন্স আটকে দেন। স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার না করার কারণ দেখিয়ে তিনি চালককে মারধর করেন ও চাবি ছিনিয়ে নেন। 

স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স থাকতে কেন ঢাকার অ্যাম্বুলেন্সে রোগী নেওয়া হচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলে অ্যাম্বুলেন্সটি আটকে রাখা হয়। সবুজের সঙ্গে আরও তিন-চারজন অ্যাম্বুলেন্সচালক তাতে অংশ নেন। অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখার পর দীর্ঘ সময় ওই শিশুর স্বজনদের সঙ্গে স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্সচালকদের তর্কাতর্কি ও ধস্তাধস্তি হয়। তখন চিকিৎসা না পেয়ে ওই নবজাতকটি মারা যায়।

শুক্রবার গভীর রাতে সদরের পালং মডেল থানায় মামলা করেন মৃত নবজাতকের বাবা নূর হোসেন। তিনি ওই মামলায় অ্যাম্বুলেন্সচালক সবুজ দেওয়ানকে প্রধান আসামি করেছেন। এছাড়া আরও চার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

নূর হোসেন বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। আমাদের জীবনধারনের জন্য ব্যয়বহুল চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করা কষ্টকর। তাই অসুস্থ ছেলেকে ঢাকা নেওয়ার জন্য অল্প টাকায় অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করেছিলাম। তাতেই কাল হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের নির্মমতায় ছেলেকেই হারাতে হলো। প্রথমে মামলা করতে চাইনি। পরবর্তী সময় অনেকে সাহস জুগিয়েছেন, তাই মামলা করেছি। দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হবে, এমন দাবি জানাই।”

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, “রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়। প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *