আতঙ্কের নাম গাজীপুর, সাত মাসে ১০২ খুন

Bangla Tribune

গাজীপুরে একের পর এক হামলা, পিটুনি, হত্যা ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে সবসময় আতঙ্কে থাকেন জেলার বাসিন্দারা। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের গত সাত মাসে ১০২টি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। যা স্থানীয়দের মাঝে চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এখানে নিরাপত্তা সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডগুলো বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা নয়, বরং একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের কাজ বলে জানায় পুলিশ।

স্থানীয়রা বলছেন, রাজধানীর পার্শ্ববর্তী এই জেলা শিল্প-বাণিজ্যিক অঞ্চল হওয়ায় বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মানুষজন বসবাস করেন। বর্তমানে হত্যা ও ছিনতাইয়ের নগরে পরিণত হয়েছে। সকাল-সন্ধ্যা, রাত-ভোর এবং দিনদুপুরে ছিনতাইয়ের পাশাপাশি ঘটছে হত্যাকাণ্ড। প্রকাশ্যে অটোরিকশা থামিয়ে ছিনতাই, অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই ঘটছে অহরহ। ছিনতাইকারীদের অস্ত্রের আঘাতে ঝরছে প্রাণ, অনেকে হচ্ছেন আহত। চুরি-ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও সশস্ত্র সংঘর্ষের মতো অপরাধের হার তুলনামূলক অনেক বেড়েছে।

সম্প্রতি প্রকাশ্যে এক সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা ও আরেকজনকে আহতের ঘটনায় পুরো জেলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ ১১ আগস্ট টঙ্গীতে ছিনতাইয়ের অভিযোগে গণপিটুনিতে অজ্ঞাত এক যুবক (২৪) নিহত হন। বিভিন্ন সময়ে ছিনতাই এবং হত্যার যথাযথ তদন্ত ও বিচার হলে এসব ঘটনা ঘটতো না বলে মনে করছেন সচেতন মহল। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পোশাকশিল্পসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের এই শহরে খুন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাত মাসে ১০২ খুন

গাজীপুর পুলিশের তথ্যমতে, চলতি বছরের সাত মাসে (১০ আগস্ট পর্যন্ত) মহানগরের আট থানা এলাকায় ৪৩টি হত্যার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় মামলাও হয়েছে। পাশাপাশি জেলার চার থানা এলাকায় ৫৯টি খুনের ঘটনা ঘটে। সবমিলিয়ে ১০২টি খুন হয়। ২০২৪ সালে মহানগরের আট থানায় হত্যা মামলা হয়েছিল ৪৮টি। এর মধ্যে সদর থানায় হত্যা মামলা হয়েছিল আটটি। চলতি বছরের সাত মাসে সদর থানায় ১১টি হত্যা মামলা হয়েছে; যা মহানগরের অন্যান্য থানার তুলনায় বেশি। এ ছাড়া গত সাত মাসে কালিয়াকৈর থানা এলাকায় ১৭ জন, শ্রীপুর থানা এলাকায় ২২ জন, কাপাসিয়া থানা এলাকায় ১০ জন, কালীগঞ্জ থানা এলাকায় ১০ জন খুন হন। জেলা ও মহানগরের ১৩ থানার মধ্যে শুধুমাত্র জয়দেবপুর থানা এলাকায় কোনও খুনের ঘটনা ঘটেনি।

চলতি বছর মহানগরের কাশিমপুর থানায় চার, কোনাবাড়ীতে সাত, টঙ্গী পশ্চিম থানায় ছয়, টঙ্গী পূর্ব থানায় আট, গাছা থানায় পাঁচ, পুবাইল থানায় চার ও বাসন থানায় পাঁচটি হত্যা মামলা হয়। অপরদিকে ২০২৪ সালে কাশিমপুর থানায় পাঁচ, কোনাবাড়ী থানায় আট, টঙ্গী পশ্চিম থানায় পাঁচ, টঙ্গী পূর্ব থানায় ছয়, গাছা থানায় নয়, পুবাইল থানায় তিন এবং বাসন থানায় চারটি হত্যা মামলা হয়।

১৮টি লাশ উদ্ধার

৯ আগস্ট মহানগরের চাপুলিয়া রেলব্রিজের নিচ থেকে পানিতে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৮ আগস্ট টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকা থেকে ট্রাভেল ব্যাগে পলিথিনে মোড়ানো পরিবহন শ্রমিক অলি মিয়ার (৩৫) মাথাবিহীন আট টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়। ৬ আগস্ট সাহাপাড়া এলাকায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আনোয়ার হোসেন সৌরভ (৩৫) নামে এক সাংবাদিক পুলিশের সামনেই চাঁদাবাজদের বেধড়ক মারধরের শিকার হন। একই দিন কোনাবাড়ী এলাকা থেকে অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৯ জুলাই রাত সাড়ে ১২টার দিকে আব্দুল্লাহপুর ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে বরিশালের সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সম্মান প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমানের (২১) মৃত্যু হয়। এভাবে গত তিন মাসে অন্তত ১৮টি লাশ উদ্ধার করা হয়।

গত ১৭ মে টঙ্গী উড়ালসেতুতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে পাবনার মজিদপুরের শামসুল হক খানের ছেলে রঞ্জু মিয়া (৩২) খুন হন। ২৭ মে রাত সাড়ে ১১টায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের দায়ের কোপে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২ জুলাই নাসির পালোয়ান মারা যান। গত ২৭ জুন রাতে কোনাবাড়ীতে গ্রিনল্যান্ড পোশাক কারখানার ভেতর চোর সন্দেহে মেকানিক হৃদয়কে (১৯) হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

নগরবাসীর অভিযোগ, অপরাধীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়া, অভিযোগ বা মামলা নিতে গড়িমসি করা, মামলা হলেও তদন্তে ধীরগতির কারণে পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা কমেছে। কেউ কেউ মনে করেন, পুলিশের অনেক সদস্যের সঙ্গে ছিনতাইকারীদের সখ্যতা থাকতে পারে। তা না হলে সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ কীভাবে আসামিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতরা করতে পেরেছে?

সচেতন নাগরিকরা মনে করেন, নাইট পুলিশিং বাড়াতে হবে, সিসিটিভি মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে, পথচারী নিরাপত্তায় মোবাইল ইউনিট চালু করতে হবে, ভুক্তভোগীদের নিরাপদে মামলা করার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

যেসব এলাকা আতঙ্কজনক

টঙ্গী পূর্ব এবং পশ্চিম থানা এলাকার স্টেশন রোড, আব্দুল্লাহপুর, চেরাগআলী, মিলগেট, কলেজ গেট, এরশাদ নগর, মুন্নু নগর, দত্তপাড়া, মাজার বস্তি, টঙ্গী বাজার, গাজীপুরা, আউচপাড়া, দিঘীরচালা, বাঁশপট্টি, কাদেরিয়া টেক্সটাইল, কোনাবাড়ী বাইমাইল (ময়লার ভাগাড়) ও কাশিমপুর এলাকা। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এসব স্থান আতঙ্কজনক। প্রতিনিয়তই ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড ঘটছে। ছিনতাইকারীরা এসব স্থানে সন্ধ্যার পরপরই সক্রিয় হয়ে ওঠে। পথচারীদের অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনিয়ে নেয় মোবাইল, মানিব্যাগ, স্বর্ণালঙ্কার। অনেক সময় ভুক্তভোগীরা মুখ খোলেন না। আইনের আশ্রয়ে গেলে সময়, টাকা-পয়সা আর হয়রানি বাড়ে। এমন ভীতি তাদের মনে গেঁথে গেছে। নিরাপত্তাহীনতার এই বাস্তবতা এখন সবার জানা। পাশাপাশি সন্ধ্যা নামলেই চান্দনা চৌরাস্তা, শিববাড়ী, রেলগেট, শাহপাড়া, কলাপট্টি, ভুরুলিয়া, শ্মশান এলাকা, টাঙ্কিরপাড়, হ্রদখলা, লক্ষ্মীপুরা, ছোট দেওড়া, উত্তর বিলাশপুর, ওয়্যারলেস, ঝিগাতলী এলাকাতেও ছিনতাই ও খুনের ঘটনা ঘটছে। 

চার থানা এলাকায় ৫৯ হত্যায় গ্রেফতার ৫২ 

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, জেলার চার থানা এলাকায় ৫৯টি হত্যাকাণ্ডের মধ্যে ৪৮টির রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এসব ঘটনায় ৫২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার আসফাকুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে এত তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মান্নান বলেন, ‘গত সাত মাসে কালিয়াকৈরে ১৭ জন খুন হয়েছেন। এসব ঘটনায় অনেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘গত সাত মাসে উপজেলায় ২২ জন খুন হয়েছেন। এসব ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’

কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আদেীন মন্ডল বলেন, ‘গত জানুয়ারি থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত উপজেলায় ১০ জন খুন হয়েছেন। এসব ঘটনায় মামলার পর আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলাউদ্দিন বলেন, ‘গত জানুয়ারি থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত উপজেলায় ১০ জন খুন হয়েছেন। এসব ঘটনায় মামলা ও আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’

জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদ আহমেদ বলেন, ‘গত সাত মাসে আমাদের থানা এলাকায় কোনও হত্যার ঘটনা ঘটেনি।’

যা বলছেন স্থানীয়রা

চান্দনা চৌরাস্তা দিয়ে নিয়মিত অফিসে যাওয়া-আসা করেন পোশাকশ্রমিক জয়নুল মিয়া। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মাসখানেক আগে রাত ১০টায় অফিস ছুটির পর বাসায় ফিরছিলাম। চৌরাস্তা উড়ালসেতুর নিচ দিয়ে হেঁটে আসার সময় আমার মোবাইল ও এক হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয় তিন যুবক। থানায় গিয়েছিলাম, অভিযোগ নিতেই চায়নি পুলিশ। পরে থানা থেকে ফিরে আসি। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু জয়নুল মিয়া নন, গত দুই মাসে অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন। তার মধ্যে শিক্ষার্থী ও নারী পোশাকশ্রমিকও আছেন। যারা থানায় অভিযোগ পর্যন্ত করেননি।

পোশাক শ্রমিক রোজিনা বেগম বলেন, ‘রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় মোবাইল কেড়ে নেয় ছিনতাইকারীরা। আমি ভয় পেয়েছিলাম। কাউকে কিছু বলিনি। কারণ একই পথে আসার সময়ে আবার ক্ষতি করবে। এজন্য থানায়ও অভিযোগ করিনি।’

নগরের শিববাড়ী এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মেডিসিন বিভাগে কাজ করি। প্রতিদিন রোগীর চাপ থাকায় রাতে দেরি করে বাসায় ফিরতে হয়। বাসায় ফেরার পথে শিববাড়ী মোড়ে কিছু যুবক দাঁড়িয়ে থাকে। তাদের কাছে ছুরি-চাকু থাকে। প্রায় সময় পথচারীদের আটকে টাকা-পয়সা, মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। আগে এমন ছিল না, সম্প্রতি বেড়ে গেছে।  আগে পুলিশ আসতো। এখন তো পুলিশ আসেই না। তাই ছিনতাইকারীরাও সুযোগ পেয়ে ছিনতাই বাড়িয়ে দিয়েছে।’

ভুরুলিয়া এলাকার বাসিন্দা ও একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাবিবুর রহমান বলেন, ‘পেশাগত কারণে আমি প্রায় সময় রাতে দেরিতে বাড়ি ফিরি। একদিন রাতে বাসায় ফিরছিলাম। তখন নতুন বিআরটিএ স্ট্যান্ডের সামনে কিছু পোলাপান আমার রিকশা থামায়। কোমরে ছুরি ঠেকিয়ে আমার কাছ থেকে ২০০ টাকা ও মোবাইল নিয়ে যায়। রিকশা ভাড়াটা পর্যন্ত দিতে পারি নাই। কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে ফিরেছি। আমার ফোনের কাগজগুলো হারিয়ে যাওয়ায় থানায় অভিযোগ দিতে পারিনি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে আগে রাত ৮টার পর থেকে নিয়মিত পুলিশের টহল থাকতো। গত বছরের ৫ আগস্টের পর পুলিশের টহল চোখে পড়ে না।’

দৈনিক মুক্ত সংবাদের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক এবং বিটিভির অভিনয় শিল্পী সৈয়দ শামসুল হুদা লিটন বলেন, ‘গাজীপুর শহরের জনসংখ্যা ও আর্থিক গতিশীলতা বাড়লেও আইনশৃঙ্খলা অনুপাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়েনি। ফলে অপরাধীরা সুযোগ নিচ্ছে। প্রতিটি সড়কের মুখে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও কার্যকর ব্যবহার নেই। ফলে অপরাধ বেড়েছে। সেইসঙ্গে খুনের ঘটনাও।’

আইনের শাসন না থাকলে অপরাধ বেড়ে যায়

গাজীপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক অধ্যাপক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আইনের শাসন না থাকলে, গণতন্ত্র না থাকলে অপরাধ বেড়ে যায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত এসব ঘটতেই থাকবে। আমরা চাই পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনুক। প্রশাসন কঠোর হোক। যতদিন তারা কঠোর না হবে ততদিন এসব অপরাধ ঠেকাতে পারবে না।’

পুলিশের সামনেই সাংবাদিককে পেটালেন ‌‘চাঁদাবাজরা’

গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য এমদাদুল হক মাসুম বলেন, ‘মোড়ে মোড়ে ছিনতাই হচ্ছে। নানা কারণে পুলিশের ওপর থেকে মানুষের আস্থা উঠে যাচ্ছে। এতে জনগণের সঙ্গে পুলিশের দূরত্ব বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও তৎপর হতে হবে। গাজীপুর পুলিশে যারা দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন তাদের বিভিন্ন ইউনিটে বদলি করা হয়েছে। যারা বদলি হয়ে গাজীপুরে এসেছেন তারা গাজীপুরের কর্মকাণ্ড ও ছিনতাইয়ের স্থানগুলো সম্পর্কে বুঝে উঠতে সময় নিচ্ছেন। এতে ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।’

পুলিশের দায়িত্বশীলরা বলছেন অপরাধ আগের মতোই আছে

গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. নাজমুল করিম খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত বছরের আগস্টের পর অনেকগুলো শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এক শ্রেণির লোক ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়েছে। যেকোনো জায়গায় কর্ম বন্ধ হয়ে গেলে তখন সেখানে অপরাধ কর্মকাণ্ড বেড়ে যায়, এটাই স্বাভাবিক। আমরা শিল্পকারখানা বন্ধ হওয়াকে হুমকি মনে করছি। তবে আগের পরিসংখ্যান যদি দেখেন, অপরাধ কিন্তু আগের মতোই আছে। আগের মতো থাকা আমার জন্য স্বস্তির নয়। আমরা মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে চাই।’

বিশাল আয়তনের এই সিটি করপোরেশনের নিরাপত্তায় পুলিশের জনবল সংকট আছে উল্লেখ করে মহানগর পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ‘তবে শহরে আমাদের যথেষ্ট টহল আছে। মাত্র এক হাজার ১০০ পুলিশ সদস্য দিয়ে কাজ চলছে পুরো মহানগর এলাকায়। তারপরও নগরবাসীর নিরাপত্তায় কাজ করছেন তারা। সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে, সিটি করপোরেশনের জনসংখ্যা প্রায় ৬৫ লাখ। হিসাবে পাঁচ হাজার ৯০৯ জনের নিরাপত্তায় কাজ করছেন একজন পুলিশ সদস্য। যা খুবই কম। তবু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি আমরা।’

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ক্রাইম-উত্তর) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘রাতে নগরের স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ছিনতাইকারীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।’

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *