Google Alert – পার্বত্য চট্টগ্রাম
নিউজ ডেস্ক
‘আদিবাসী’ পরিচয়ের দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীর বক্তব্য ও উদ্যোগের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) চট্টগ্রাম মহানগর শাখা।
শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
পিসিসিপির অভিযোগ, ২৩ জুন অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত ‘নৃ-বৈচিত্র্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর আলোচনায় সাতটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের নাম পরিবর্তন এবং ‘আদিবাসী’ পরিচয়কে প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চলছে। সুপ্রদীপ চাকমার বক্তব্যে বলা হয়, “আমরা আদিবাসী শব্দটি চাচ্ছি শুধু আমাদের আইডেন্টিফিকেশনের জন্য।” এ বক্তব্যকে সংবিধানবিরোধী, দ্ব্যর্থবোধক এবং জাতিগত উত্তেজনামূলক বলে আখ্যায়িত করেছে সংগঠনটি।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পিসিসিপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন এবং প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি আসিফ ইকবাল।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৬(২) অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের জনগণকে জাতি হিসেবে ‘বাঙালি’ এবং নাগরিক হিসেবে ‘বাংলাদেশের নাগরিক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অথচ দায়িত্বশীল রাষ্ট্রীয় পদে থাকা ব্যক্তিরা সাংবিধানিক কাঠামোর বাইরে গিয়ে বিভাজনমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন, যা ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
এ সময় পিসিসিপি চার দফা দাবি পেশ করে:
১. ‘আদিবাসী’ শব্দের ব্যবহার ও প্রচার বন্ধে রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা জারি করতে হবে।
২. রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকেও সংবিধানবিরোধী অবস্থান নেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অধিকার যেন সাংগঠনিক আধিপত্যের হাতিয়ার না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. পার্বত্য অঞ্চলে সব জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহাবস্থান ও সমবিকাশ নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে সক্রিয় হতে হবে।
সমাবেশে পিসিসিপি নেতারা আরও বলেন, পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা অতীতে বরাদ্দ বণ্টনে অনিয়ম এবং পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন। তাঁর কর্মকাণ্ড পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতির পরিপন্থী। একইসঙ্গে তাঁরা রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণকাজে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হস্তক্ষেপের ঘটনাকে জাতিগত সহাবস্থানের জন্য হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেন।
বক্তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র মহড়ার ফলে নির্মাণ শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে কাজ বন্ধ রেখেছে। এই সন্ত্রাসীদের দ্রুত আইনের আওতায় না আনলে শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ চরমভাবে বিঘ্নিত হবে। পিসিসিপির দাবি, ইউপিডিএফ ও পিসিজেএসএস-এর মতো সশস্ত্র সংগঠনের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রত্যেক সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রামে সম্প্রতি ‘আদিবাসী’ পরিচয়কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারিভাবে যেখানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিচিতি প্রচলিত, সেখানে একশ্রেণির প্রতিনিধির ‘আদিবাসী’ তকমা প্রয়োগের চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কের জন্ম দিয়ে আসছে।
- অন্যান্য খবর জানতে এখানে ক্লিক করুন।
- ফেসবুকে আমাদের ফলো দিয়ে সর্বশেষ সংবাদের সাথে থাকুন।
- ইউটিউবেও আছি আমরা। সাবস্ক্রাইব করে ঘুরে আসুন ডিজিটাল কন্টেন্টের দুনিয়ায়।