আলোচনায় সম্মত হলেও থামেনি সীমান্তে হামলা

Google Alert – সেনা

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে চলমান সীমান্ত সংঘাত অবসানে আজ মালয়েশিয়ায় আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে উভয় পক্ষ। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দুই দেশকে অবিলম্বে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল সকালে নতুন করে গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে উভয় পক্ষ থেকে। এর ঠিক আগের দিনই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, দুই দেশের নেতারা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছেন। তবে এ ঘোষণার পরও বাস্তবে সংঘর্ষ বন্ধ হয়নি। ফলে শান্তি আলোচনা ঘিরে সম্ভাবনার পাশাপাশি এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান ও রয়টার্স।

গত বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া সংঘাতে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৩৪ জন, যার মধ্যে রয়েছে দুই দেশের বেসামরিক নাগরিক ও সেনারা। বাস্তুচ্যুত হয়েছে দুই লাখের বেশি মানুষ। থাইল্যান্ডের সিসাকেট ও সুরিন প্রদেশ এবং কম্বোডিয়ার পুরসাত অঞ্চলে গোলাবর্ষণের আওয়াজ নিয়মিত শোনা যাচ্ছে। গোলার আঘাতে মন্দির, তল্লাশিচৌকি ও আবাসিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে উভয় পক্ষ।

যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের সঙ্গে মালয়েশিয়াও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। গতকাল মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া উভয়ই কুয়ালালামপুরে আলোচনায় বসতে ও দেশটিকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মেনে নিতে সম্মত হয়েছে।

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহামাদ হাসান জানিয়েছেন, দুই দেশের নেতারা মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় আলোচনায় অংশ নিতে সম্মত হয়েছেন এবং তারা চেয়েছেন, এ বিরোধে অন্য কোনো দেশ যেন জড়িত না হয়। কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত ও থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম উইচায়াচাই আজ সন্ধ্যায় মালয়েশিয়ায় পৌঁছবেন বলে জানা গেছে।

উভয় দেশের মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা শুরু হয় মে মাসে। ওই সময় একটি বিতর্কিত এলাকায় গোলাগুলিতে এক কম্বোডীয় সেনা নিহত হন। এরপর দুই দেশই সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে। কূটনৈতিক সম্পর্কেও টানাপড়েন শুরু হয়। থাইল্যান্ড কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে এবং নিজ দেশের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে আনে। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে কম্বোডিয়া ব্যাংককে তাদের দূতাবাস কার্যক্রম সীমিত করে।

যদিও এ বিরোধ বহু পুরনো। ১৯০৭ সালে ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনামলে একটি মানচিত্র তৈরি করা হয়, যেখানে প্রেয়া ভিহেয়ারসহ কিছু এলাকা কম্বোডিয়ার অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছিল। তখন থেকে ওই অঞ্চলগুলোর মালিকানা দাবি করে আসছে কম্বোডিয়া। তবে থাইল্যান্ড শুরু থেকেই এ মানচিত্র ও কম্বোডিয়ার দাবি মানতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত মন্দির এলাকা কম্বোডিয়ার বলে রায় দিলেও দুই দেশের মধ্যে বিরোধ মেটেনি।

সংঘাতে বড় ভূমিকা রেখেছে দুই দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক পরিবারের দ্বন্দ্ব। কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বর্তমান সিনেট সভাপতি হুন সেন এবং থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার মধ্যে পুরনো বন্ধুত্ব এখন তিক্ততায় রূপ নিয়েছে। হুন সেন সম্প্রতি থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে তার ফোনালাপ ফাঁস করেন, যেখানে তিনি ব্যক্তিগত সম্পর্কের ইঙ্গিত দেন। ওই ফোনালাপ থাই রাজনীতিতে বিতর্ক তৈরি করে এবং পেতংতার্নকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *