Samakal | Rss Feed
ইউক্রেন চায় যুদ্ধবিরতি, ট্রাম্প ও পুতিন চান শান্তিচুক্তি
বিশ্ব
সমকাল ডেস্ক 2025-08-21
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের স্থায়ী শান্তিচুক্তির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। এ অবস্থায় কয়েক ইউরোপীয় নেতা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সুর মিলিয়ে সাময়িক যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তা আমলে নিচ্ছেন না।
গতকাল বুধবার সিএনএনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এমন নয় যে, কিয়েভ ও তার মিত্ররা শান্তি চায় না। তবে তারা মনে করে, রাশিয়া যে ধরনের চুক্তি চাচ্ছে, তা ততক্ষণ পর্যন্ত ঘটতে পারে না, যতক্ষণ না বিশ্ব ব্যবস্থার মূলনীতির পরিবর্তন আসছে। কারণ, যে কোনো দেশ বলপ্রয়োগের মাধ্যমে যা ইচ্ছা তা করতে পারে না। কিয়েভের ইউরোপীয় মিত্ররা সেই ঝুঁকি নিতে ইচ্ছুক নয়। তাদের শঙ্কা, পরবর্তী সময়ে তারাই রুশ আগ্রাসনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে।
গত সোমবার ওভাল অফিসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও বেশ কয়েকজন ইউরোপীয় নেতা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় ট্রাম্প তিন দিন আগে আলাস্কায় হয়ে যাওয়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গেও আলোকপাত করেন। প্রশ্ন ওঠে, একটি বৃহত্তর শান্তিচুক্তি অর্জনের জন্য যুদ্ধবিরতি ‘প্রয়োজনীয়’ কিনা।
আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেনের জনগণের ওপর রুশ বাহিনী যে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, তা বন্ধ করতে রাশিয়াকে ভূমি দেওয়ার মাধ্যমে কোনো চুক্তি হবে জাতিসংঘ সনদের অধীনে সম্পূর্ণ অবৈধ। গুরুত্বপূর্ণ ওই সনদে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার পর বেশির ভাগ দেশ সই করেছিল।
দেখতে একই রকম মনে হলেও আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে একটি শান্তিচুক্তি ও যুদ্ধবিরতির মধ্যে বড় পার্থক্য রয়েছে। যুদ্ধবিরতির সময় যুদ্ধরত পক্ষগুলো প্রতিটি পক্ষকে তাদের সামরিক নিয়ন্ত্রণে অঞ্চল ধরে রাখার সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করতে সম্মত হয়। এ সময়ে বোঝাপড়া এগিয়ে নিয়ে আলোচনা চলতে থাকে। সেই সঙ্গে মানবিক সহায়তা দেওয়া ও বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। কিয়েভ ও তার ইউরোপের মিত্ররা বলছে, জেলেনস্কি ও পুতিনের মধ্যে বৈঠকের আগে যুদ্ধবিরতি একটি উপায় হতে পারে। তারপর ট্রাম্প, জেলেনস্কি ও পুতিনের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
গত সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্ৎজ বলেন, তিনি ‘কল্পনা করতে পারেন না যে, পরবর্তী বৈঠকটি যুদ্ধবিরতি ছাড়া হবে।’ ১৯১৪ সালের স্বল্পস্থায়ী ক্রিসমাস যুদ্ধবিরতির মতো একটি যুদ্ধবিরতি হতে পারে, অথবা এটি কয়েক দশক ধরে প্রসারিত হতে পারে। সাইপ্রাস ও তুরস্কের মধ্যে এবং ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কয়েক দশক ধরে চলছে, যদিও কোনো স্থায়ী শান্তি সমাধানের সম্ভাবনা নেই। পুতিন যা চান, এখন স্পষ্টতই ট্রাম্পও এটা চান। তা হলো, একটি স্থায়ী শান্তিচুক্তি।
ইউক্রেনে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে কোনো মার্কিন সেনা পাঠানো হবে না বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত মঙ্গলবার ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইউক্রেন সীমান্তে কোনো সেনাসদস্য পাঠানো হবে না। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট। আমি আপনাকে নিশ্চিত করছি, সেখানে আমি কেবল মানুষ হত্যা ঠেকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।’