ইউনূসের নির্বাচনের ঘোষণা ‘ঐতিহাসিক’, স্বাগত জানাল বিএনপি : সংবাদ অনলাইন

Google Alert – ইউনূস

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ০৬ আগস্ট ২০২৫

আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তার এই ঘোষণাকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি।

বুধবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “বিএনপি মনে করে এই ঐতিহাসিক ঘোষণা বাংলাদেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে সহায়ক হবে এবং গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সুগম করবে।”

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আজ এই মহান দিবসে আপনাদের সামনে এ বক্তব্য রাখার পর থেকেই আমরা আমাদের সর্বশেষ এবং সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে প্রবেশ করব। আমরা এবার একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করব। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠাব, যেন নির্বাচন কমিশন আগামী রমজানের আগে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।”

এর আগে গত জুনে জাতির উদ্দেশে ভাষণে ইউনূস ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু ১৩ জুন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর এক যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ফেব্রুয়ারিতেই রোজার আগে নির্বাচন হতে পারে।

এরপর থেকেই বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের নির্দিষ্ট সময় ও তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছিল। মঙ্গলবার ইউনূসের ভাষণে নির্দিষ্ট তারিখ না থাকলেও তার ঘোষণাকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে বিএনপি।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, “বিএনপি আশা করে, এই নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করার জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। একটি কার্যকর জাতীয় সংসদ গঠনের লক্ষ্যে বিএনপি সকল রাজনৈতিক দল ও জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।”

এই নির্বাচনকে ‘অত্যন্ত জরুরি’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “এখন এই নির্বাচনটাই দেশের জনগণ চায়। জনগণই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সবচেয়ে বড় প্রহরী হয়ে দাঁড়াবে।”

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের পর রাতেই গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এতে সভাপতিত্ব করেন তারেক রহমান। এরপর বুধবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে দলের অবস্থান তুলে ধরেন ফখরুল।

এর আগে মঙ্গলবার বিকালে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করেন প্রধান উপদেষ্টা। এতে বলা হয়, “বাংলাদেশের জনগণ এই অভিপ্রায় ব্যক্ত করছে যে, ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে এবং পরবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের সংস্কারকৃত সংবিধানের তফসিলে এ ঘোষণাপত্র সন্নিবেশিত থাকবে।”

এ ঘোষণাপত্রের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বিএনপি এই ঘোষণাপত্রকে স্বাগত জানায়। বিএনপি বিশ্বাস করে, এতে রাজনৈতিক দলগুলোর যে অঙ্গীকার এসেছে, তা পালনের মধ্য দিয়ে এক নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের রূপান্তর শুরু হবে। সুযোগ সৃষ্টি হবে একটি সাম্য, মানবিক মূল্যবোধ ও ন্যায়বিচারভিত্তিক প্রগতিশীল, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের।”

মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে যারা এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, তাদের স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “যে সকল রাজনৈতিক দল, ছাত্র, কৃষক, শ্রমিকসহ সকল স্তরের জনগণ এই সংগ্রামে অংশ নিয়েছে, শহীদ হয়েছে, আহত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে—বিএনপি তাদের জানায় কৃতজ্ঞতা, ধন্যবাদ ও অভিনন্দন।”

অধ্যাপক ইউনূসের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, “প্রফেসর ইউনূস এখন পর্যন্ত যতগুলো কাজ করেছেন, তাতে করে তিনি প্রমাণ করেছেন, তিনি এমন কিছু করবেন না যা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।”

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *