ইউপিডিএফের সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ, ইউনূসের কুশপুত্তলিকা দাহ

CHT NEWS

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ
রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫

গত ৫ আগস্ট ২০২৫ খাগড়াছড়ি সদরের চেঙ্গী
স্কোয়ারে ফ্যাসিস্ট হাসিনা পতনের ১ম বার্ষিকীতে ইউপিডিএফের আয়োজিত সমাবেশে সরকারের
লেলিয়ে দেয়া ঠ্যাঙাড়ে কর্তৃক সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ ও ইউনূসের
কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে ইউপিডিএফভুক্ত তিন সংগঠন।

আজ রবিবার (১০ আগস্ট ২০২৫) সকাল ১০টায়
খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভরে “ইউনূসের ফ্যাসিবাদ রুখো, পূর্ণস্বায়ত্তশাসন কায়েম করো”
 এই শ্লোগানে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি
জেলা শাখাসমূহ যৌথভাবে এই বিক্ষোভের আয়োজন করে।

জেলা পরিষদ এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে
স্বনির্ভর বাজার মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা
ড. ইউনূসের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

সমাবেশে বক্তব্য দেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের
খাগড়াছড়ি জেলা আহ্বায়ক এন্টি চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলার শাখার সাধারণ
সম্পাদক তৃষ্ণাঙ্কর চাকমা।

নারী নেত্রী এন্টি চাকমা বলেন, গত
৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা পতনের ১ বছর উপলক্ষে চেঙ্গী স্কোয়ারে ইউপিডিএফের আয়োজিত শান্তিপূর্ণ
সমাবেশে সরকারের লেলিয়ে দেয়া ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীরা গুলি করে এবং এক বৃদ্ধা গুলিবিদ্ধ
হয়ে আহত হয়। পাশেই দাঁড়িয়ে দেখছিল পুলিশ। আর সেনাদের ব্রিগেড ছিল মাত্র কয়েক গজ দূরে।
স্বৈরাচারী হাসিনার আমলে ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট স্বনির্ভর বাজারে বিজিবি সদর সেক্টর ও
পুলিশ ফাঁড়ির সামনে নির্বিচারে গুলি করে ছাত্র নেতা তপন, এল্টন, যুবনেতা পলাশ চাকমাসহ
৭জনকে হত্যা করা হয়। সেই হত্যার এখনো বিচার হয়নি। গণতান্ত্রিক সভা-সমাবেশে এভাবে বার
বার হামলা, গুলি ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দায় সরকার এড়িয়ে যেতে পারে না। গত ৫ আগস্ট চেঙ্গী
স্কোয়ারে শান্তিপূর্ণ মিছিলের উপর হামলা- গুলিবর্ষণের দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের।
কারণ ড. ইউনূস পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার নীতি পার্বত্য চট্টগ্রামে বহাল রেখেছেন।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের
জনগণকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে যারা বিচ্ছিন্ন করে রাখতে চায় তারা আসলে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ
রূপান্তরের অন্তরায়। পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা জাতীয় সমস্যা। জাতীয়ভাবে গুরুত্ব দিয়ে
এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। অবিলম্বে পাহাড় থেকে সেনাশাসন প্রত্যাহার করে রাজনৈতিক
সমাধান পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবি মেনে নিতে হবে। তিনি অবিলম্বে ৫ আগস্ট সমাবেশে হামলার
সাথে জড়িত ঠ্যাঙাড়ে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান।

ছাত্রনেতা তৃষ্ণাঙ্কর চাকমা বলেন,
চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ড. ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হন। ফ্যাসিস্ট
হাসিনার আমলে পাহাড়ে যেভাবে দমন-পীড়ন নির্যাতন ও সেনা শাসন ছিল বর্তমানে ইউনূস সরকারও
তা বহাল রেখেছেন। গত ৫ আগস্ট চেঙ্গী স্কোয়ারে ইউপিডিএফের বিক্ষোভ কর্মসুচিতে হামলাও
তারই অংশ।

ইউনূসের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। 

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত
দিনে-দুপুরে, রাতের আঁধারে সন্ত্রাসী খোঁজার নামে পাহাড়িদের বাড়ি-ঘরে সেনাদের হয়রানিমূলক
তল্লাশি, লুটপাটসহ নারী ধর্ষণের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। অথচ জুলাই গণঅভ্যুন্থানে পার্বত্য
চট্টগ্রামের জনগনসহ বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল। তাঁরা আশা
করেছিল একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, যেখানে তাঁদের আত্মপরিচয় ও অধিকারের
স্বীকৃতি থাকবে। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের ১ বছরেও কিছুই হয়নি। বরং ড. ইউনূস গণ-অভ্যুত্থানে
শহীদ ও আহতদের রক্তের সাথে বেঈমানী করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

তিনি ৫ আগস্ট চেঙ্গী স্কোয়ারে হামলার
সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।


 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *