BD-JOURNAL
ইসির সংলাপে ‘মব ভায়োলেন্স’ নিয়ে সতর্ক করলেন নাগরিকরা
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘মব ভায়েলেন্সের’ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
বাংলাদেশ
জার্নাল ডেস্ক 2025-09-28
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘মব ভায়েলেন্সের’ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রথমবারের মত অংশীজনদের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপে বসে এ এম এম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। সংলাপ শেষে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা তাদের পরামর্শ রেখেছেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এন নাসির উদ্দিন স্বাগত বক্তব্যে উপস্থিতিদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আগামী নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে এ সংলাপ ভূমিকা রাখবে আশা করি।…বিশ্বাসযোগ্য সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আপনাদের মতামত ইসির কাজকর্মে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমরা শুনবো বেশি, বলব কম। আপনাদের পরামর্শ আমাদের পথ চলায় সাহায্য করবে।
সহযোগিতা চেয়ে সিইসি বলেন, অনেক কাজ শেষ করেছি। ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার পাশাপাশি আইনি সংস্কার করেছি। সুষ্ঠুভাবে ভোট করার জন্য অনেক এগিয়ে গেছি। এ সংলাপ শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়। দেরি সংলাপ শুরু করলেও ঐমত্য কমিশন আলোচনা করে ইসির কাজ হালকা হয়ে গেছে। যেটুকু গ্যাপ আছে সেটুকু আপনারা ফিলআপ করে দেবেন।
প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিংয়ের উদ্যোগ তুলে ধরে, তিনি বলেন দেশের ভেতরে ভোটে নিয়োজিত ১০ লাখের বেশি লোকবলের জন্য ভোটের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকারি কর্মকর্তা, আইনে হেফাজতে থাকা লোক ভোট দিতে পারবের। যা এবার মাইলফলক হয়ে থাকবে।
সংলাপে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির পর্যবেক্ষক ও ভোটার হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
ইসির সংলাপ উদ্যোগের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি চলছে। বড় চালেঞ্জ ও অর্জনের বিষয় হচ্ছে সফলভাবে নির্বাচন করা। দেশের জন্য এটা ট্রানজিশন, এর সফলতার উপর নির্ভর করবে বাংলাদেশ কোন দিকে যাবে। ৭০ এর নির্বাচন যেমন টার্নিং পয়েন্ট ছিল, এবারের নির্বাচনটিও টার্নিং পয়েন্ট হবে।
একটি প্রজন্মেন প্রত্যাশা ও মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের ভাবনার সাথে সামঞ্জস্য কীভাবে রাখব ভাবতে হবে। এ প্রজন্মের প্রত্যাশা একেবারেই ভিন্ন, তরুণরা আধুনিক, বিশ্বের সাথে যুক্ত; দায়বদ্ধ ও স্বচ্ছ ব্যবস্থার সাথে রয়েছে।…১৯৬৮-৬৯ সালে একবার দেখেছি, সেরকম পরিবর্তন হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের প্রতি সাধারণ মানুষের ভাবনার কথা উঠে আসে সাবেক এই রাষ্ট্রদূতের কথায়।
তিনি বলেন, ইসিকে উঁচু নৈতিক মানদণ্ডে দেখতে চাইবে মানুষ। দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচন মানুষের প্রত্যাশা। মানুষ কি চায়, কোন উঁচুতে উঠতে হবে ভাবতে হবে, পারসেপশনও দেখতে হবে। কত কাজ করলেন সেটা বিষয় নয়, কি প্রত্যাশা পূরণ দেখতে হবে। এখনকার জটিল প্রেক্ষাপটে সুষ্ঠু নির্বাচন করা প্রয়োজন।
পেশাদারিত্বের সাথে ইসিকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন হুমায়ুন কবীর।
তিনি বলেন, সোজা পথে হাঁটতে হবে বা সিরাতুল মোস্তাকিম ধরে হাঁটতে হবে, তা হলে ভালো নির্বাচন করতে পারবেন।…কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়ন ও দক্ষ করতে হবে সঠিক সিদ্ধান্ত যেন নিতে পারে। এবারের নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে।
গেল ১৫ বছরে ‘ভায়োলেন্স নরমালাইজেশন’ হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
হুমায়ুন কবীর বলেন, এটা যেন হ্যান্ডেল করতে পারে সেজন্য কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়ন করতে হবে। আমার উপলব্ধি –এবারের নির্বাচনে ক্যাম্পেইন সোশাল মিডিয়ায়, অনলাইনে হবে ৮০%। এটার জন্য ইসি কতটুকু প্রস্তুত? মিথ্যা তথ্য, অপতথ্য, এআই জেনারেটেড তথ্য আসবে। নির্বাচনের আগেই অনেক উত্তেজনা করবে সোশাল মিডিয়া।
তিনি মনে করেন, এ ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্বাচন কমিশনকে কৌশল হাতে রাখতে হবে। ভোটের পরেও ফলাফল বিভ্রান্ত করতে অনেক কিছু করা হতে পারে। উন্নত দেশও তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এক্ষেত্রে ফ্যাক্ট চেক, সঠিক তথ্য নিশ্চিতে দল, নাগরিক সমাজসহ সতেনতামূলক সবার সহযোগিতা নিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌসের ভাষ্য, ৫৪ বছরেও ক্ষমতার ট্রানজিশন কেমন হবে তা আমরা ঠিক করতে পারিনি। তিনজন সাবেক প্রধান বিচারপতির পরিণতি আপনারা দেখেছেন। সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পরিণতি আপনারা দেখেছেন। আইন শৃঙ্খলায় পুলিশের আস্থা নেই। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। এমন এক পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নিয়েছেন- সিইসির ভাষায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ চ্যালেঞ্জে আছেন।
কমিশনকে স্বাধীনভাবে মেরুদণ্ড সোজা করে নির্বাচন উপহার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
রুবায়েত ফেরদৌস বলেন, যদি সাহসী হতে পারেন, সত্যি মেরুদণ্ড থাকে তাহলে স্বাধীন হতে পারবেন। স্বাধীন হলে জাতিকে সুন্দর. ভালো নির্বাচন উপহার দিতে পারবেন। চ্যালেঞ্জ কিন্তু ভয়ঙ্কর অবস্থা। …গতবারও এসেছি। তারা সেই সাহস মেরুদণ্ড দেখাতে পারে নি, তারা ফেইল করেছেন।
অতীতে সব কমিশন নিজেদের স্বাধীন ও মেরুদণ্ড শক্ত দাবি করলেও সেটার বাস্তবায়ন 'দেখাতে পারেনি' বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পুরো বিশ্ব আগামী নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস।
তিনি বিশ্বাসযোগ্য ভোটার তালিকা, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং আচরণবিধি সঠিকভাবে বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন। দলগুলোর মনোনয়নবাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।…গণমাধ্যমে অবাধ তথ্য প্রবাহ দিতে হবে। জাতীয় ও দেশি পর্যবেক্ষক বাড়াতে হবে। সাহসের বিকল্প নেই, সাহসী হন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেছেন, এ ধরনের সংলাপে তার দ্বিতীয়বার আসা। এ সময় ঢাকার বাইরে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইসির প্রশংসা করে তিনি বলেন, গতবারও এসে অনেক ভালো বক্তব্য দিয়েছি। আমলে নেয়নি। এবার আমলে নিয়ে খুশি হব।…আলোচনা সাধুবাদ পেতে পারে। কিন্তু এমন একটা পরিস্থিতিতে নির্বাচন করতে যাচ্ছেন, বলতে হবে ভয়াবহ পরিস্থিতি। গেল ১৫-২০ বছরে প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের কার্নিশে। যার যা খুশি করেছেন।
এমন ‘ভায়বহ’ পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারলে ইতিহাসের পাতায় ইসির নাম লেখা থাকবে বলে মনে করেন তিনি।
মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, একটা সময়ে গতানুতিক স্টাইলে নির্বাচন করলে কি হবে আপনারা জানেন।…নির্বাচন দিকে সবাই তাকিয়ে আছেন। বিগত সময়ে রাতের ভোট, ১৬৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোটের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এবারের ইসির বিরুদ্ধে তেমন অভিযোগ নেই। এটা বড় শক্তি। দলীয় সরকারের অধীনে এ ইসি নয়। এখনকার নির্দলীয় সরকার। এ সরকারের কোনো দল নেই।
এ শিক্ষক জানিয়েছেন, পোস্টাল ভোটিংয়েরে নতুন চ্যালেঞ্জ। বিতর্কিত হওয়ার অনেক সুযোগ। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আচরণবিধি প্রতিপালনে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিলে নির্বাচন কিছুটা শান্তিপূর্ণ হতে পারে।
সরকার পরিবর্তন হলেও আমলাতন্ত্র পরিবর্তন হয়নি মন্তব্য করে করে তিনি জানান, ইসির অনেক লোকবল রয়েছে যারা প্রশিক্ষিত। আমলাদের বাইরে রেখে নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন।
পিআর ভোট পদ্ধতি সচেতনতা সৃষ্টি না করে কোনোভাবে পদ্ধতিটির পক্ষে অবস্থান না নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
‘কোনো নতুন সিস্টেম চালু করতে হলে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হয়, তারপর চালু করতে হয়। পিআর সিস্টেম এখন দাবি উঠেছে, এ অনেক পরে করার জন্য পরামর্শ দেবো।…সচেতনতা, জ্ঞান দরকার । ইভিএম ১০-১৫ বছর চেষ্টা করেও পারে নি। পিআর সিস্টেম চালুর আগে হাজারোও চিন্তা করবেন।’
শাপলা প্রতীক নিয়ে এনসিপির দাবির বিষয়টি ইঙ্গিত করে এ অধ্যাপক বলেন, ইসি যে প্রতীক দেয় সে প্রতীকেই ভোট করতে হবে। বিশেষ মার্কা না দিলে ভোটে রাজি না এমন দাবি- এটা ঠিক না। স্বাধীন ইসির নিজস্ব এখতিয়ার এটা। ইসিকে চাপ দেবেন না। মার্কা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির কোনো অধিকার নেই।
স্থানীয় নির্বাচন না করে জাতীয় নির্বাচন করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। সেই সঙ্গে ১১টি কমিশন থাকলেও শিক্ষা সংস্কার কমিশন না করায় সরকারের সমালোচনা করেন তিনি।
আরপিও সংস্কারের বেশ কিছু প্রস্তাবনার বিষয়ে ভিন্নমত দিয়ে টিআইবি পরিচালক বদিউজ্জামান বলেছেন, হলফনামার তথ্য যাচাই বাছাইয়ের কার্যকর ব্যবস্থা ও আচরণবিধি প্রয়োগের ‘দুর্বলতা রয়েছে’।
নির্বাচনি ব্যয় তদারকি ও প্রকাশের বিষয়ে ব্যবস্থা রাখার পরামর্শ দেন তিনি। ঋণখেলাপিদের বিষয়ে (পরিশোধ/তফসিল করা) মনোনয়নপত্র জমার আগের দিন পর্যন্ত সময় দেওয়ায় তারা উৎসাহিত হবে। নতুন প্রস্তাবে আমরা পেছনে ফিরে যাচ্ছি, প্রকারান্তরে ঋণখেলাপিদের উৎসাহিত করা হবে। ‘না’ ভোটের বিধান শুধু একক প্রার্থীর আসনে নয়, সব আসনে ব্যবস্থা রাখা জরুরি।
নারী মনোনয়ন বাড়াতে দলগুলোর প্রতিশ্রুতি ও প্রচারণায় তহবিল করার অনুরোধ করেন তিনি।
পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিসার্চ সেন্টারের সিনিয়র ফেলো আব্দুল ওয়াজেদ অন্তবর্তীকালীন সরকারের আমলে ভালো নির্বাচনের প্রত্যাশা করছেন। তিনি বলেন, ‘এ সরকারের ভিন্ন ক্যারেক্টার রয়েছে।’
মাঠ প্রশাসনে ডিসি ও ইউএনও নিয়ন্ত্রণ থাকার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ইসি কর্মকর্তারা তা পারবে কী না ভাবতে হবে। ইতোমধ্যে আলোচনা হচ্ছে -ইসি তারিখ ঘোষণা করলে অনেক কিছু বন্ধ হয়ে যাবে। তখন পুরো প্রশাসনের ইসির অধীনে থাকবে, আপনি কাজ করবেন। ইসি কর্মকর্তাদের মাঠ প্রশাসন কমান্ড ও কন্ট্রেল করা খুবই ইম্পর্টেন্ট নির্বাচন পরিচালনার জন্য।
ভোটের সময় অভিযোগ সামাল দিতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পরিবর্তে ইসি কর্মকর্তাদের ‘হিমশিম খেতে হবে’ বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন এ শিক্ষক।
অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তিনি বলেন, ইতিহাস ভুলে যাই- ১৫ ফেব্রুয়ারির কথা ভুলে যাই। মাগুরা উপ নির্বাচনের সময় সিইসি চলে এসেছেন ঢাকায়। তিনি কেন বন্ধ করেনি? আমি নির্দেশ দিচ্ছি বন্ধ, অথচ তিনি ঢাকায়। এ সিচুয়েশনটা অবশ্যই প্রার্থনা করি আপনার জন্য হবে না। মব তৈরি হয়ে যেতে পারে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বলেছেন অনেকে এখনও স্বাভাবিক অবস্থা না। ট্যাগিং করাটা বন্ধ নয়। ইসির বিরুদ্ধেও অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা নেওয়া হচ্ছিল, হতে পারে আগামীতে।
এসময় মব ভায়োলেন্স পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে বলে সতর্ক করেন আব্দুল ওয়াজেদ। তিনি বলেন, যে কোনো সময়ে মব জাস্টিস ভায়োলেন্সে চলে যেতে পারে; পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেছেন, ভোটের আগে-ভোটের সময় ও পরে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অতীতে যারা জিততে পারেনি, নারী ও শিশুর প্রতি তাদের নির্যতনের কথা ভুলে গেলে চলবে না।
সংলাপে আসা সব পরামর্শ আমলে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ইসি অনেক কাজ করেছেন। তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশার সাথে নবীন প্রবীন ধনী দরিদ্র সবার কথা মনে রাখতে হবে, যেন ভুলে না যাই। আস্থার সঙ্কট লৈতরি হয়ে গেছে। নারীর বিষয়ে প্রচণ্ড রকম ক্ষোভ রয়ে গেছে। ৫১% নারী, অথচ আসন ৫-৭% নারীর প্রতিনিধিত্ব। আমরা ক্ষুব্ধ হয়েছি।
তিনি জানান, জনগণের মনোভাবকে সম্মান দিয়ে এ ইসি যেন সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারে সে প্রত্যাশা সবার। অবাধ তথ্য প্রবাহ রাখতে হবে; দায় দায়িত্ব শুধু ইসির নয়, সবার। নারীদের নির্বিঘ্ন ভোটের পরিবেশ থাকতে হবে। আশা করবো ইসি বিষয়টা নিশ্চিত করবে। প্রতিবন্ধীদের ভোটাধিকার ও ভোট দেওয়ার সুপরিবেশ রাখতে হবে। সব আসনে ‘না’ ভোট চালুর পক্ষে মত দেন তিনি।
হারুন চৌধুরী বলেন, সপ্তাহব্যাপী সারাদেশে মোটিভেশনাল প্রোগ্রাম নিলে, কোন জিনিস করা যাবে, কি করা যাবে না, সাহসের সাথে কি করতে হবে, আমরা ভোট নির্ভয়ে ভোট দেব- কিছু স্লোগান নিয়ে এগোলে উজ্জীবিত হবে।
তিনি বলেন, এখনও শঙ্কা মানুষের মধ্যে সুষ্ঠু ভোট হবে নাকি আগের মত হবে, প্রচারণা নিলে মানুষের মধ্যে শঙ্কা কেটে আসবে…রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আসছে। এটা মনে রাখতে হবে ইসির। হটকারী সিদ্ধান্ত নিলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। মহিলা ভোটকেন্দ্রের জন্য মহিলা পুলিশ রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
নারী ভোটারদের উপস্থিতি বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান পুলিশ সংস্কার কমিশনের এ সদস্য।
সাবেক লেফট্যানেন্ট জেনারেল মাহফুজুর রহমান বলেছেন, ভোটের আগে বাহিনীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে ভালো হবে। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানিক ভিত্তি তৈরি করতে ইসিকে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে, যাতে অন্যরা অনুসরণ করতে পারে। শুধু নির্বাচন নয়, নির্বাচনের পরেও অন্যান্য ইন্সটিটিউট যেন ফলো করতে পারে, সে দায়িত্ব ইসির।
অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানউজ্জামান বলেছেন, আস্থা অর্জনই প্রধান সমস্যা। এটা তৈরি করা ইসির প্রধান দায়িত্ব। … আইনানুগভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসিকে প্রমাণ করতে হবে, নিরপেক্ষ ভোট আয়োজন করতে হবে। ভুয়া তথ্য রোধে ইসিকে বড় ভূমিকা রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান শাপলা প্রতীক কোনো দলকে না দেওয়ায় ইসির কঠোর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
তিনি বলেন, জাতীয় প্রতীক শাপলা বিশেষ দলের চাওয়া, চাপ এবং নানা ধরনের অপচেষ্টার সামনে এ নির্বাচন কমিশন দৃঢ় সংকল্প থেকেছে। মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়িয়েছে। আমার মাথা নত হয় না-ইসিকে বলতে হবে। আগামী নির্বাচন অবাধ করতে চাইলে ইসির সদিচ্ছার কথা তুলে ধরেন তিনি।
মোহন রায়হান বলেন, মুখে একটা মনে একটা, আমার ভীষণ খারাপ লাগে। যে দলমত পথের হোক না কেন আপনার, সুষ্ঠু নির্বাচনের সংকল্প থাকতে হবে।
বিজিএমইএ পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসাইনি জানান, মেরুদণ্ড শক্ত-মেরুদণ্ডহীনের কথা বলেছে অনেকে, সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আইনের বাস্তব প্রতিফলন ঘটানো গেলে ভালো নির্বাচন দিয়ে ইসি অনুপ্রেরণা হয়ে থাকতে পারবেন।
শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জায়িফ রহমানের কথায় নির্বিঘ্ন ভোটের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ইসি দৃশ্যমান উদ্যোগ নিলে জনগণের মধ্যে ভরসা বাড়বে ইসির প্রতি। মিস ইনফরমেশন, এআই জেনারেটেড তথ্যের অপব্যবহার রোধে তৎপর থাকার অনুরোধ করেন শিক্ষার্থী।
সাংবাদিক সোহরার হোসেনের ভাষ্য, এ সরকারের আগামী পাঁচ মাসে কি কি করণীয় তা জনসমক্ষে জানাতে হবে। এটি করতে পারলে ইসির প্রতি আস্থা আসবে জনগণেরর। নির্বাচন করে জনগণ। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা সব পক্ষের। সবাইকে এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।
সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না হলে সরে আসা বা পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসি সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। সংলাপে আমন্ত্রিতদের মধ্যে ১২ জন আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন।
তারা হলেন- সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টার রাশেদা কে চৌধুরী, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাহমুদ হাসানউজ্জামান, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মো. মাহফুজুর রহমান, অধ্যাপক আব্দুল ওয়াজেদ, বিজিএমইএ পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসাইনি, কবি মোহন রায়হান, পুলিশ রিফর্ম কমিশনের মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জারিফ রহমান, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, টিআইবি পরিচালক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান।
(function(i,s,o,g,r,a,m){i[‘GoogleAnalyticsObject’]=r;i[r]=i[r]||function(){
(i[r].q=i[r].q||[]).push(arguments)},i[r].l=1*new Date();a=s.createElement(o),
m=s.getElementsByTagName(o)[0];a.async=1;a.src=g;m.parentNode.insertBefore(a,m)
})(window,document,’script’,’https://www.google-analytics.com/analytics.js’,’ga’);
ga(‘create’, ‘UA-103843996-1’, ‘auto’);
ga(‘send’, ‘pageview’);
(function(i,s,o,g,r,a,m){i[‘GoogleAnalyticsObject’]=r;i[r]=i[r]||function(){
(i[r].q=i[r].q||[]).push(arguments)},i[r].l=1*new Date();a=s.createElement(o),
m=s.getElementsByTagName(o)[0];a.async=1;a.src=g;m.parentNode.insertBefore(a,m)
})(window,document,’script’,’https://www.google-analytics.com/analytics.js’,’ga’);
ga(‘create’, ‘UA-115090629-1’, ‘auto’);
ga(‘send’, ‘pageview’);
_atrk_opts = { atrk_acct:’lHnTq1NErb205V’, domain:’bd-journal.com’,dynamic: true};
(function() { var as = document.createElement(‘script’); as.type=”text/javascript”; as.async = true; as.src=”https://certify-js.alexametrics.com/atrk.js”; var s = document.getElementsByTagName(‘script’)[0];s.parentNode.insertBefore(as, s); })();