এই দেশ সবার এখানে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না

Google Alert – সেনাপ্রধান

এই দেশ সবার। এখানে ধর্ম, জাতি, বর্ণ ও গোত্রের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকবে না। শনিবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ও নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি (জেনারেল অফিসার কমান্ডিং) মেজর জেনারেল মো. মঈন খান উপস্থিত ছিলেন।

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, আমরা সবসময় আপনাদের পাশে থাকব। আপনারা নিশ্চিন্তে এ দেশে বসবাস করবেন। আপনাদের যত ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপন করবেন। আনন্দ উদযাপন করবেন। আমরা একসঙ্গে এই আনন্দ ভাগাভাগি করে নেব।

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, শত শত বছর ধরে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, বাঙালি, পাহাড়ি, উপজাতি সবাই মিলে এই দেশে অত্যন্ত শান্তিতে ও সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করছে।

ঢাকা শহরে জন্মাষ্টমীর মিছিলের কথা তুলে ধরে সেনাপ্রধান বলেন, উনিশ শতকে এবং বিশ শতকে এটা সবসময় হতো। তারপর একসময় বন্ধ হয়ে যায়। আবার শুরু হয়েছে। তিনি আশা করেন, এই উৎসব সবসময় জারি

থাকবে। আমাদের পক্ষ থেকে যত ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা আপনারা চান, ইনশা আল্লাহ আমরা সেসব সাহায্য-সহযোগিতা দেব।

সেনাপ্রধান বলেন, আজকে আমাদের অঙ্গীকার হবে সেই সম্প্রীতি, সেই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ আমরা সবসময় বজায় রাখব। আমরা একসঙ্গে এই দেশে, এই দেশ সবার, এই দেশে আমরা শান্তিতে, সুন্দরভাবে সবাই বসবাস করব।

সেনাপ্রধানের বক্তব্যের আগে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলেন, জন্মাষ্টমী কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয় বরং শান্তি, সম্প্রীতি এবং মানবতার এক উদাত্ত আহ্বানও। শ্রীকৃষ্ণের শিক্ষা-জীবনাদর্শ শুধু অসত্য-অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহসই জোগায় না, একই সঙ্গে অসহায়-আর্তমানবতার পাশে দাঁড়াতে এবং সমাজে সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, সহনশীলতা ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে। তিনি বলেন, জন্মাষ্টমীর এই শোভাযাত্রা আবারও বিশ্বের কাছে প্রমাণ করবে, বাংলাদেশ একটি শান্তি ও সম্প্রীতির দেশ। যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

নৌবাহিনী প্রধান আরও বলেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে দেশ পেয়েছি, যে স্বাধীনতা পেয়েছি, সেই স্বাধীনতাকে রক্ষা করা আমাদের সবার পবিত্র দায়িত্ব। আর এই দেশকে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুখী ও সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসাবে গড়ে তুলতে আমরা সবাই বদ্ধপরিকর। বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন বলেন, সত্যের পথে অটল থাকতে হবে। অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে রুখে দাঁড়াতে হবে। সবার সঙ্গে সৌহার্দ্য, সহমর্মিতা ও ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

এদিকে আনন্দ-উল্লাস আর ভক্তিভাবের আবহে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন তাদের আরাধ্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি জন্মাষ্টমী উদযাপন করেছেন। শনিবার ভোর থেকে ঢাকায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে ভক্তদের ভিড় বাড়তে থাকে। সকাল ৮টায় দেশ ও জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি কামনায় গীতাযজ্ঞের মাধ্যমে জন্মাষ্টমীর মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সকাল ৯টার দিকে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সন্তোষ শর্মা, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক তাপস চন্দ পালসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা গুরু বরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। গীতাযজ্ঞ পরিচালনা করেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের শংকর মঠ ও মিশনের পুরোহিতরা। দিনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে শুরু হওয়া বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। ছিল আলোচনা সভাও। সভা শেষে অতিথিরা প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিলের উদ্বোধন করেন। এরপর শোভাযাত্রা রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়ক অতিক্রম করে। এটি পলাশী মোড়, জগন্নাথ হল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, সুপ্রিমকোর্ট এলাকা, বঙ্গবাজার, নগর ভবন, গোলাপশাহ মাজার, গুলিস্তান মোড়, নবাবপুর রোড, রায় সাহেব বাজার মোড় হয়ে বাহাদুর শাহ পার্কে গিয়ে শেষ হয়। পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণিল আয়োজনের মধ্যে দিয়ে জন্মাষ্টমী উদযাপন করা হয়।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *