Google Alert – ইউনূস
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবার শিগেরুর সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। গতকাল শুক্রবার টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উভয়পক্ষই পারস্পারিক সম্পর্কসহ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জাতি গঠন প্রচেষ্টা, সংস্কার উদ্যোগ ও বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ হস্তান্তরের প্রতি পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। এ সময়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন বাড়াতে অব্যাহত সহায়তার জন্য জাপান সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। বৈঠকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। প্রফেসর ইউনূস রোহিঙ্গাদের প্রতি জাপানের মানবিক সহায়তা, বিশেষ করে ভাসানচরে অবস্থানরতদের প্রতি সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান। জাপান এ বিষয়ে তাদের অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে। পরে প্রধানমন্ত্রী ইশিবাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর আগে, বৈঠকের জন্য জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
এদিকে, জাপান ও বাংলাদেশ একটি চুক্তিপত্র বিনিময় করেছে, যার অধীনে টোকিও বাজেট সহায়তা, রেলপথ উন্নয়ন এবং অনুদান হিসেবে বাংলাদেশকে মোট ১ দশমিক ০৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করবে। মোট অর্থের মধ্যে, জাপান ৪১৮ মিলিয়ন ডলার ডেভেলপমেন্ট পলিসি ঋণ হিসেবে দেবে, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির জন্য বরাদ্দ করা হবে। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফরের তৃতীয় দিনে গতকাল শুক্রবার এই চুক্তি পত্র বিনিময় হয়। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা শিগেরু উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও, টোকিও ৬৪১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী রুটকে ডুয়েল-গেজ ডাবল রেললাইন হিসেবে উন্নীত করার জন্য এবং আরও ৪ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেবে স্কলারশিপের জন্য।
গতকাল টোকিওতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আজ জাপানের সঙ্গে আমাদের যে বিদ্যমান সম্পর্ক, এটা এক নতুন উচ্চতায় উঠলো। এক অভূতপূর্ব যে গণঅভ্যুত্থান হলো, এর পরপর জাপান আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সৌহার্দ্যপূর্ণ একটি মিটিং হলো। জাপান থেকে বাংলাদেশ ১ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার পাচ্ছে। ফলে আমরা যে অর্থনীতিক পুনুরুদ্ধারের মধ্যে আছি, তাতে এটি আমাদের সহায়তা করবে।
শফিকুল আলম বলেন, আর অন্যান্য অনেক বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে, জাপান বাংলাদেশের সঙ্গে আরও নিবিড় বন্ধুত্ব করতে চায়। জাপান বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে পাঁচটি টহল বোট দিচ্ছে। বৈঠকে ৬টি সমঝোতা স্বারকও সই হয়েছে। তার মধ্যে একটি হচ্ছে ইলেকট্রিক সাইকেল ফ্যাক্টরি স্থাপনের। জাপান বলছে, তারা বাংলাদেশকে সর্বত্র সহায়তা করবে। আমাদের নির্বাচনি কাজেও জাপান সহায়তা করবে। এখানে কিছু কিছু ইস্যু আছে, সেখানে আমরা সহায়তা চেয়েছি। তারা জানিয়েছে যে, তারা আমাদের পাশে থাকবে। তিনি আরও বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি প্রবাসীদের কাছ থেকে অনেক বক্তব্য শুনলেন। অনেকে তাকে লিখিতভাবেও জানিয়েছেন।