এক যুগে সর্বনিম্নে এডিপি বাস্তবায়ন

Google Alert – পার্বত্য চট্টগ্রাম

  • বিদেশী সহায়তা খরচে ব্যর্থ ৩৮ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ
  • সরকারি অর্থ ব্যয়ের হার ২০ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের শূন্য
  • জুলাই ২০১৩-১৪ তে ৩ শতাংশ চলতি অর্থবছর ০.৬৯ শতাংশ

পটপরিবর্তনেও দেশের উন্নয়ন প্রকল্প বা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে কোনো ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আসেনি। উল্টো চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে অগ্রগতি গত প্রায় এক যুগের মধ্যে হার সর্বনিম্নে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জুলাই মাসে বাস্তবায়ন হার ছিল ৩ শতাংশ, আর গত জুলাই মাসে এই হার মাত্র ০.৬৯ শতাংশ। যেখানে গত ২০২৪ সালের জুলাই মাসে এত আন্দোলন রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যেও বাস্তবায়ন হার ছিল ১.০৫ শতাংশ। ৫৭টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে ৩৮টিই বিদেশী সহায়তার অর্থ একটিও খরচ করতে পারেনি। জিওবিও খরচ হয়নি ২০ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের। বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য থেকে এসব জানা গেছে।

পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) গতকাল চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এডিপির জুলাই মাসের অগ্রগতির তথ্য প্রকাশ করেছে। চলতি অর্থবছর এডিপির আকার ২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৯৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। যেখানে সরকারি অর্থায়ন এক লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা (৬০.৩৩ শতাংশ), প্রকল্প সহায়তা ৮৬ হাজার কোটি টাকা (৩৬.০৩ শতাংশ) এবং সংস্থার অর্থায়ন ৮ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা (৩.৬৪ শতাংশ)। এক হাজার ১৯৮টি বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এই অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বাস্তবায়ন হার মাত্র ০.৬৯ শতাংশ : উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি কখনোই পাচ্ছে না। বছর গেলেই আগের বছরের তুলনায় অগ্রগতি কম হচ্ছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে এক হাজার ৬৪৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যা মোট বরাদ্দের মাত্র ০.৬৯ শতাংশ। যা আগের অর্থবছর ২০২৪-২৫ এ ছিল ১.০৫ শতাংশ বা ২ হাজার ৯২২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ধারাবাহিকভাবে এই ব্যয় গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরের তুলনায় কম। ওই বছর জুলাইতে অগ্রগতি ছিল ৩ শতাংশ। ২০১২-১৩ তে ৩ শতাংশ, ২০১৪-১৫ অর্থবছর ২ শতাংশ, ২০১৫-১৬ অর্থবছর ১ শতাংশ এবং এরপর ২০১৯-২০ অর্থবছর জুলাই মাসে ১.৮৪ শতাংশ, ২০২০-২১ অর্থবছর ১.৫২ শতাংশ, ২০২১-২২ অর্থবছর ১.১৪ শতাংশ, ২০২২-২৩ অর্থবছর ০.৯৬ শতাংশ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছর জুলাই মাসে ছিল ১.২৭ শতাংশ।

অর্থই ব্যয় হয়নি ১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের : প্রকল্প নিয়েও বাস্তবায়ন বেশ ঢিমেতালে। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো বরাদ্দকৃত অর্থই খরচ করতে পারে না অর্থবছরের প্রথম দিকে। ১৫টি মন্ত্রণালয়ের একটি টাকাও খরচ হয়নি জুলাই মাসে। সেগুলো হলো, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, ধর্ম মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইএমইডি, সংসদ সচিবালয়, দুদক, সরকারি কর্মকমিশন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

বিদেশী সহায়তা খরচে ব্যর্থ ৩৮টি : খরচে ব্যর্থ হওয়ার কারণে পাইপ লাইনে বিদেশী সহায়তার প্রস্তুতির অর্থ বছরের পর বছর পড়ে থাকে। বাস্তবায়নে গতিহীনতার কারণে উন্নয়ন সহযোগীরা অর্থছাড় করে না। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাসেই ৩৮টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রকল্প সহায়তার একটি অর্থও খরচ করতে পারেনি। সেগুলো হলো, কৃষি মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়, সেতু বিভাগ, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, সংসদ বিষয়ক সচিবালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা বিভাগ (উন্নয়ন বরাদ্দ), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় (থোক বরাদ্দসহ), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় (থোক বরাদ্দসহ), জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ

সর্বোচ্চ বরাদ্দপ্রাপ্তদের ০.৭৮ শতাংশ : এডিপিতে সর্বোচ্চ বরদ্দ প্রাপ্ত ১৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য বরাদ্দ ছিল ৭৪.৫৬ শতাংশ অর্থ। যা এক লাখ ৭৭ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। তাদের বাস্তবায়ন হার ০.৭৮ শতাংশ। সর্বোচ্চ ৩.৫৬ শতাংশ বা ৪১৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা এক মাসে ব্যয় করতে পেরেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *