এক রাতে ইউক্রেনের ১০০ ড্রোন ঠেকিয়েছে রাশিয়া

Bangla News

কয়েক মাস ধরেই রাশিয়ার ভেতরে বারবার ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে ইউক্রেন। অদ্ভুত ব্যাপার হল, সামরিক স্থাপনার বদলে রাশিয়ার আবাসিক ভবন এবং অন্যান্য বেসামরিক অবকাঠামোগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

এবার ইচ্ছা করে বেসামরিক রাশিয়ান নাগরিকদের ওপর হামলার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ল রাশিয়া।

২৭ জুলাই রবিবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের সেনারা একরাতেই রাশিয়ার বিভিন্ন স্থানের আকাশসীমায় প্রায় ১০০টি ইউক্রেনীয় ড্রোন রুখে দিয়েছে। মস্কোর সঙ্গে কিয়েভ নতুন করে কূটনৈতিক যোগাযোগ স্থাপন করলেও তারা চালকহীন আকাশযান দিয়ে বর্বর আক্রমণ বাড়িয়ে চলেছে। তাই এবার কড়া পালটা ব্যবস্থা নিয়েছে রাশিয়া।


রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক, স্মোলেনস্ক এবং কালুগা অঞ্চলে ৬৭টি ড্রোন গুলি করেই ভূপাতিত করেছে রাশিয়ার সেনারা। দেশটির দক্ষিণে ভলগোগ্রাদ, রোস্তভ, ভোরোনেজ এবং কুরস্ক অঞ্চলের পাশাপাশি ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে লক্ষ্য করে আরও ড্রোন ছুড়েছিল ইউক্রেনীয়রা। সেগুলোর মধ্যেও ৩০টি ইউএভি আটকানো হয়েছে। মস্কোর কাছে এবং নিঝনি নভগোরোদ, ওরিওল এবং তাম্বভ অঞ্চলেও বেশ কয়েকটি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে।


হামলা এবং রাশিয়ান প্রতিরোধ চলার সময় কেউ হতাহত হয়েছে বলে খবর মেলেনি। তবে ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পড়ে ওকটিয়াব্রস্কি জেলায় রেলপথের বৈদ্যুতিক লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর মিলেছে।


এই সপ্তাহের শুরুতে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে নতুন করে শান্তি আলোচনা তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোনো যুদ্ধবিরতি না হলেও মানবিক বিষয়গুলো নিয়ে দেশদুটোর মধ্যে অগ্রগতি হয়েছিল। যুদ্ধবন্দী এবং বেসামরিক নাগরিকদের বিনিময়ের চুক্তিও আলোচনার অংশ ছিল। এসবের মধ্যেই রাশিয়ায় হামলা চালানোর চেষ্টা চালায় ইউক্রেন। অথচ রাশিয়া জানিয়েছে, কূটনৈতিক সমাধানের জন্য তাদের পথ খোলা আছে। তবে দেশটি আরও বলেছে, যেকোনো চুক্তি হলে সেখানে সংঘাতের মূল কারণ এবং নিরাপত্তা নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী উদ্বেগগুলোর সমাধান করা উচিত।


তবে সংঘাত মেটানোর চেয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যেতেই ইউক্রেনের নেতা ভোলোদিমির জেলেনস্কির যেন বেশি আগ্রহ। মার্কিন আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্যাট্রিয়ট সিস্টেম কেনার জন্য এখনো তিনি ইউরোপের দেশগুলোর কাছে হাত পেতে বেড়াচ্ছেন। নরওয়ের একটি আর জার্মানি দুটি প্যাট্রিয়টের দাম দেওয়ার কথা দিয়েছে বলে তিনি বলে বেড়াচ্ছেন। একইভাবে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গেও শুরু করেছেন দেনদরবার। কিন্তু তার মোট দশটি প্যাট্রিয়ট চাই।


মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের কাছে প্যাট্রিয়ট সিস্টেম সরবরাহ বা বিক্রি করতে রাজি হয়েছেন জানিয়ে জেলেনস্কি বলছেন, এখন ইউক্রেনের কাজ হল দশটি সিস্টেমের জন্য টাকা তোলা। আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ক্ষেপণাস্ত্র পেতেও মরিয়া হয়ে উঠেছেন জেলেনস্কি।


এখানেই শেষ নয়। রাশিয়া ও দেশটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পশ্চিমা শিবিরের কাছে আহ্বান জানাচ্ছেন জেলেনস্কি। তার দাবি, রাশিয়া ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে আছে। এসব কথা ছড়ানোর পেছনে তিনি ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের ওপর ভরসা করছেন। কিন্তু পশ্চিমাদের ঘাড়ে চেপে ইউক্রেনের সামরিক হামলা যেভাবে রাশিয়া আটকে দিচ্ছে, তা কিন্তু জেলেনস্কির কথার উলটো তথ্যই দিচ্ছে।

এমএইচডি/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *