চ্যানেল আই অনলাইন
এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ‘তিন মাস দেশে থাকা’র বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটরের বক্তব্য প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, “আমরা জানিনা, আমরা যদি জানতাম অবশ্যই ধরে ফেলতাম।”
আজ মঙ্গলবার সেগুনবাগিচায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে ‘ঢাকা বিভাগীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির’ সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন কথা বলেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে ‘গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ’ সংঘটনের অভিযোগে বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করার জন্য দুই মাস সময় দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালের এমন নির্দেশনার পর চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও ওবায়দুল কাদের কীভাবে তিন মাস দেশে ছিলেন এবং পরে কীভাবে বিদেশে চলে গেলেন– সে বিষয়ে আদালতের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিকে আদালত নির্দেশনা দিয়েছে।

“যদি কেউ আদালতের নির্দেশনা থাকার পরও কাউকে পালাতে সাহায্য করেন, তাহলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।”
এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ওনি কোথা থেকে জানল যে তিনমাস বাংলাদেশে লুকায়ে ছিল। আমরাতো জানিনা। আমরা যদি জানতাম অবশ্যই ধরে ফেলতাম। যদি আগে এই খবরটা ওনারা দিতে পারত, ওনি ওই জায়গায় লুকিয়ে আছে, আমরা অবশ্যই ধরে ফেলতাম।”
“আপনারা বলেন আপনারা একটা খবর দিছেন কেউ ওই জায়গায় লুকায়ে আছে আমরা ধরিনাই। এমন একটা এক্সাম্পল দেন। আমরা কি ছাড় দিচ্ছি?”
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন: “ইন্টারপোলের ক্ষেত্রে আমরা অলরেডি আবার রিমাইন্ডার দিছি। আমরা টাইম টু টাইম অবহিত করতেছি তাড়াতাড়ি পাবলিশডের জন্য।”
‘গায়েবী’ মামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন: “আপনাদের মাধ্যমে আবারও আশ্বস্ত করতে চাই। আমরা এটা বিজ্ঞপ্তি আকারেও দিছি। আজকেও আলাপ হইছে। আমরা আশ্বস্ত করি যারা দোষী না তাদের কোন কিছু হবেনা। বলেন এমন একটা ঘটনা নির্দোষী তারে আইনের আওতায় নিছি। এখন তাদের ভেতরে যদি অন্য সন্দেহে থাকে, সে তো অন্য সন্দেহে ভুগতেছে।”
পুলিশের পলাতক সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যারা পালিয়ে আছে, তারা আমাদের চোখে ক্রিমিনাল। তাদের যে কোনভাবে পাওয়া হলে ধরা হবে। আপনারা যদি খবর দিতে পারেন আমরা ধরে ফেলব।”
‘অনেকে কাজে যোগ দিয়েও মামলার আসামি হওয়ার পর পালিয়ে গেছে’ এমন অভিযোগের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “কাজে যোগ দিয়েছে তারপর পালিয়ে গেছে এমন সংবাদটা আমার কাছে নাই। তারা কাজে যোগই দেয় নাই। যেমন ধরেন আগের সরকারের প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনের ১৬ জন এমপি ছিল, সবকয়টারেই কিন্তু আগে ওনি ভাগায়ে দিছে। ওরকমতো এক্ষেত্রেও হইছে।”
পুলিশের মনোবলের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আগের যে মনোবল ছিল এখন কি চেঞ্জ হইছেনা? আপনাদের কাছে কী মনে হয়? অনেক চেঞ্জ হইছে, মনোবল কিন্তু আগের থেকে অনেক বাড়ছে। আস্তে আস্তে বাড়বে। একটা ঘটনা ঘটার পরে এমন কিছু নাই যে দুইদিনে চেঞ্জ করে ফেলব। সময় লাগবে।”
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সকল বিভাগেই সভা করার ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিভাগেও সভা করা হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “পরিস্থিতিতো আপনারাই বুঝতে পারছেন, আগের চেয়ে ভাল। অনেকেই বলছেন ১৬ ডিসেম্বর এই হইতে পারে, ওই হইতে পারে। সবকিছু ভালভাবেই হয়ে গেছে, ১৪ ডিসেম্বর ভালভাবে হয়ে গেছে। ২৫ ডিসেম্বরও আল্লাহ চায়তো ভালভাবে হয়ে যাবে।”