চ্যানেল আই অনলাইন
কক্সবাজারের টেকনাফে চারদিন পর ‘সাত লাখ টাকা মুক্তিপণ’ আদায়ের পর অপহৃত দুই কৃষককে ছেড়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের জাহাজপুরা সংলগ্ল পাহাড়ী এলাকায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান বাহারছড়া ইউনিয়ন ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম।
ছাড়া পাওয়া ভূক্তভোগীরা হলো- টেকনাফের জাহাজপুরা এলাকার আবছার আহমদের ছেলে আহমদ উল্লাহ (৪৮) ও আবদুস সালামের ছেলে জসিম উদ্দিন (১৮)।
গত মঙ্গলবার সকালে টেকনাফের জাহাজপুরা সংলগ্ন পাহাড়ে গরু চড়ানোর সময় মুখোশধারী কয়েকজন দুর্বৃত্ত ওই দুই কৃষককে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায়। পরদিন বুধবার অজ্ঞাত পরিচয়ের এক দুর্বৃত্ত মোবাইল ফোনে কল দিয়ে তাদের ছেড়ে দিতে স্বজনদের কাছে ২৫ লাখ মুক্তিপণ দাবি করে। আর ঘটনাটি অবহিত হওয়ার পর তাদের উদ্ধারে পুলিশ ও নৌবাহিনী যৌথ অভিযান চালায়।
ভূক্তভোগীদের স্বজনের বরাতে রফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় দুই কৃষক অপহৃত হওয়ার পর থেকে ছেড়ে দিতে মোবাইল ফোনে মোটা অংকের টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল। কিন্তু ভূক্তভোগীদের স্বজন দাবিকৃত টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় দুর্বৃত্তরা চারদিন জিন্মি করে রাখে।
“পরে দূর্বৃত্তদের সাথে ৭ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের আপোষে অপহৃতদের ছেড়ে দিতে রাজী হয়। এদের মধ্যে আহমদ উল্লাহ’র স্বজনরা ৬ লাখ টাকা এবং জসিম উদ্দিনের স্বজনরা ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করেছে।“
অবশেষে মুক্তিপণ আদায়ের পর শুক্রবার বিকাল ৪ দিকে জাহাজপুরা সংলগ্ন পাহাড়ী এলাকায় দুর্বৃত্তরা অপহৃত ওই দুই কৃষককে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানান স্থানীয় এ ইউপি সদস্য।
তবে মুক্তিপণের টাকা কোথায়, কিভাবে; কাদের কাছে আদায় করা হয়েছে- এমন তথ্য স্বজনরা দেননি জানিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, “ অপহৃত দুই কৃষককে জিন্মি রেখে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য মারধর করে নির্যাতন চালানো হয়েছে। নির্যাতনে তারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। জিন্মি অবস্থা থেকে ছাড়া পাওয়ার পর স্বজনরা তাদের চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল ভর্তি করেছেন।“
এ নিয়ে টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়টি পুলিশ অবহিত নয়। তবে দুর্বৃত্তরা অপহৃত দুই কৃষককে ছেড়ে দেওয়ার স্থানীয়দের মাধ্যমে শুনেছেন। আর ঘটনার ব্যাপারে স্বজনরা এখন পর্যন্ত কোন ধরণের অভিযোগ দেননি।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্য বলছে, এনিয়ে গত ১৪ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২২৭ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে, একই সময়ে উখিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৮৭ জনকে অপহরণ করা হয়।