কাতারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ট্রাম্পের

Google Alert – সামরিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে ঘোষণা দিয়েছেন, কাতারের নিরাপত্তা রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কোনো দেশ কাতারের ওপর আবার হামলা করলে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক প্রতিক্রিয়া জানাবে।


এই ঘোষণা এসেছে গত মাসে ইসরায়েলের নজিরবিহীন বিমান হামলার পর, যা কাতার ও বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়।


ইসরায়েল দাবি করেছিল, তারা দোহায় হামাস নেতাদের ওপর হামলা চালিয়েছে, যারা তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করছিল। এই হামলায় হামাসের কয়েকজন সদস্য নিহত হন, যদিও শীর্ষ নেতারা বেঁচে যান। কাতারের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন।


সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কাতারের নাগরিক হত্যার ঘটনায় ক্ষমা চান। হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর বৈঠক চলাকালে যৌথ ফোনালাপে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানির কাছে ক্ষমা চান তিনি।


ট্রাম্প তার নির্বাহী আদেশে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতার ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা, পারস্পরিক স্বার্থ ও দুই দেশের সেনাদের বন্ধনে আবদ্ধ। তিনি কাতারকে ‘শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির এক দৃঢ় মিত্র’ বলে উল্লেখ করেন।


আদেশে বলা হয়েছে, কাতারের ওপর কোনো বিদেশি হামলা হলে সেটিকে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা হবে।


৯ সেপ্টেম্বর দোহায় ইসরায়েলি হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা করছে কাতারের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত সম্পর্ক মেরামত করতে, একই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতি তাদের অবিচল সমর্থন দেখাতে। কাতার এই হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত ও বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে অভিহিত করেছে।


১৬ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কাতারে যান আলোচনায় অংশ নিতে। এর আগের দিন আরব ও ইসলামি দেশগুলোর নেতারা দোহায় জরুরি বৈঠকে কাতারের পাশে দাঁড়ান। রুবিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-কাতার নিরাপত্তা অংশীদারত্ব অটুট এবং উভয়ে মিলে একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল অঞ্চল গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, ‘আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের হামলা আর না ঘটে তার জন্য ব্যবস্থা নেব। ’


তবে ট্রাম্পের এই নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি কতটা কার্যকর হবে তা অনিশ্চিত। সাধারণত এ ধরনের প্রতিশ্রুতি বা চুক্তি কার্যকর হতে হলে মার্কিন সিনেটের অনুমোদন লাগে। তবে অনেক সময় প্রেসিডেন্টরা একক সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক চুক্তিতে অংশ নেন, যেমন বারাক ওবামা করেছিলেন ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে করা পারমাণবিক চুক্তিতে। শেষ পর্যন্ত সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাতেই থাকে।


কাতার দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অংশীদার। কাতারের আল উদেইদ এয়ার বেসে মার্কিন সেনাদের সেন্ট্রাল কমান্ডের অন্যতম বড় ঘাঁটি রয়েছে। ২০২২ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কাতারকে ‘প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র’ ঘোষণা করেছিলেন, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে সহযোগিতার কারণে।


কুয়েত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ বাদার আল-সাইফ লিখেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে উপসাগরীয় অঞ্চলের গুরুত্ব এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এর তাৎপর্য কেবলমাত্র ট্রাম্পের মৌখিক আশ্বাস বা নৈশভোজ বৈঠকের বাইরে গিয়ে নির্দিষ্ট মার্কিন নিরাপত্তা নিশ্চয়তার দাবি রাখে। ’


সূত্র: আল জাজিরা


এমজেএফ

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *