কুচকাওয়াজে সেনাদের সঙ্গে নামছে ‘রোবট সেনা’

Google Alert – সামরিক

আগামীকাল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চীনের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ সামরিক কুচকাওয়াজ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি এবং জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বিজয় দিবসের বিশাল এই সামরিক কুচ্কাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে দেশটির রাজধানী বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারে। তবে এদিন চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) শুধু ঐতিহ্যবাহী সামরিক শক্তি নয়, বরং যুদ্ধক্ষেত্রের নতুন প্রজন্মের প্রযুক্তি তুলে ধরতে চলেছে। আকাশে উড়বে স্টেলথ ড্রোন, মাটিতে গর্জে উঠবে আধুনিক ট্যাঙ্ক। কিন্তু সব আলো কাড়বে এক নতুন সংযোজন। দেশটির সেনাদের সঙ্গে এবার কুচ্কাওয়াজে পা ফেলতে চলেছে রোবোটিক ‘নেকড়ে সেনা’। বিশ্লেষকরা বলছেন, বন্দুকবাহী এই চারপেয়ে যান্ত্রিক যোদ্ধারা শুধু প্রযুক্তির প্রদর্শনী নয়, চীনের ভবিষ্যৎ যুদ্ধকৌশলের দিকনির্দেশও বটে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের সামরিক কুচ্কাওয়াজে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হতে যাচ্ছে নতুন প্রজন্মের মনুষ্যবিহীন যুদ্ধবিমান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কয়েকটি মহড়ার ছবি এবং ভিডিও বিশ্লেষণ করেছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। স্যাটেলাইট ছবি ও ফাঁস হওয়া মহড়ার দৃশ্যে দেখা গেছে, কয়েক মিটার লম্বা ৪টি এন্টি-শিপ মিসাইল (ওয়াইজে-১৫, ওয়াইজে-১৭, ওয়াইজে-১৯, ওয়াইজে-২০), দুটি বড় ডুবোযান, ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধক ব্যবস্থা, এবং আরও অনেক অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। ওয়াইজে-১৭, ওয়াইজে-১৯ এবং ওয়াইজে-২০ মিসাইলগুলো শব্দের গতির পাঁচগুণ গতিতে উড়তে পারে। যে কারণে এগুলোকে ইগল মিসাইলও বলা হয়। যুক্তরাাষ্ট্রের হুমকি মোকাবিলায় এগুলো সক্ষম বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। মহড়ার দৃশ্যে একাধিক নতুন মডেলের স্টেলথ মানববিহীন যুদ্ধবিমান (ইউসিএভি) দেখা গেছে, যেগুলোর দৈর্ঘ্য ৯ থেকে ১২ মিটার এবং ডানার বিস্তার ৬ থেকে ১১ মিটার। বিশেষজ্ঞদের মতে, এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নেক্সট জেনারেশন এয়ার ডমিন্যান্স প্রোগ্রামের কোলাবরেটিভ কমব্যাট এয়ারক্রাফটের সমতুল্য। ড্রোনের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে চীনের চারপেয়ে রোবোটিক যুদ্ধযান বা ‘নেকড়ে রোবট’। চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক সিসিটিভির প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, মহড়ায় অংশ নেওয়া চারপেয়ে রোবোটিক নেকড়ে যেগুলো অ্যাসল্ট রাইফেল বহন করছে। ৬৮ কেজি ওজনের এসব রোবটকে ব্যবহার করা হয়েছে গোয়েন্দা, শ্যুটার ও গোলাবারুদ বহনকারী হিসাবে। উন্নত এ রোবটগুলো ১০০ মিটার দূরত্বে নির্ভুল হামলা চালাতে সক্ষম।

কুচ্কাওয়াজের আয়োজন কমিটি জানিয়েছে, ‘এ বছর অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শনের ধরন আলাদা। প্রতিটি ড্রোন, রোবট বা সেনা কেবল আলাদা অস্ত্র নয়; বরং একটি নেটওয়ার্কভিত্তিক যুদ্ধ কাঠামোর অংশ।’ সাবেক প্রশিক্ষক সং ঝংপিংয়ের বলেছেন, ‘এবারের কুচ্কাওয়াজের আসল তাৎপর্য কোনো একক অস্ত্রে নয়, বরং সামগ্রিক সমন্বয়ে। মানুষ ও যন্ত্র মিলেই যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।’ সিঙ্গাপুরের নানইয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির সামরিক বিশ্লেষক মাইকেল রাস্কা বলেছেন, ‘পিএলএর লক্ষ্য কেবল নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি নয়, বরং একটি এআই-চালিত সামরিক বাহিনী গড়ে তোলা।’ এর আগে ২০১৯ সালের কুচ্কাওয়াজে প্রথমবার ড্রোন প্রদর্শন করেছিল পিএলএ। সে বছর তিনটি স্বতন্ত্র ইউসিএভি ফরমেশন প্রদর্শিত হয়।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *