খাগড়াছড়িতে রাতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ প্রত্যাহারের পর সকালে আবার বহাল

Samakal | Rss Feed


খাগড়াছড়িতে রাতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ প্রত্যাহারের পর সকালে আবার বহাল

সারাদেশ

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

<time class="op-modified" dateTime="2025-09-28"2025-09-28
2025-09-28

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি স্কুলছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ শনিবার রাতে প্রত্যাহার করে রোববার সকাল থেকে আবার বহালের কথা জানানো হয়েছে।

‘জুম্ম ছাত্র জনতা’ নামক ফেসবুক পেইজে রোববার সকাল থেকে অবরোধ আবার বহাল রাখার আহ্বানে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভয় আর শঙ্কা থেকে রোববার সকাল থেকে শহরতলীতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোনো বাস।

তবে সাজেকে আটকে পড়া প্রায় ২ হাজার ১৪৭ জন পর্যটককে শনিবার রাতেই সেনাবাহিনীর বিশেষ প্রটোকলে পৌঁছানোর পর ঢাকার উদ্দেশে বিশেষ স্কটে নিয়ে যাওয়া হয়।

জানা যায়, গতকাল শনিবার অবরোধ চলাকালীন সময়ে দুপুর থেকে দুপক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু সংখ্যক দোকানপাট ভাঙচুর করা হয়। এতে অন্তত ২৭ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে গুরুতর বেশ কয়েকজন চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আপাতত শহরতলীতে কঠোর নিরাপত্তা দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অতিরিক্ত নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশসহ জেলা পুলিশের ৩ প্লাটুন আর্মড পুলিশ অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছে। জরুরি সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি ছাড়া সেনাবাহিনী কোনো প্রকার প্রয়োজনহীন সাধারণ মানুষকে চলাচল করতে দিচ্ছে না।

এদিকে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস)’-এর পক্ষ থেকে সম্প্রীতির স্বার্থে সকলকে ধৈর্য ধারণ এবং প্রশাসনের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

এর আগে গতকাল শনিবার ভোর ৫টার দিকে অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়। বিভিন্ন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে বিক্ষোভ করেন অবরোধকারীরা। এতে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুর পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত ছিল। পরে কয়েকজন অবরোধকারী একজন নির্মাণ শ্রমিককে মারধর করে। এ সময় ২০-২৫ জন বাঙালি যুবক তাদের ধাওয়া দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুই পক্ষে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টিয়ার গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

স্থানীয় প্রশাসন জানায়, শনিবার দুপুর ২টার দিকে খাগড়াছড়ি শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এ ছাড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মোতায়েন করা হয় সাত প্লাটুন বিজিবি। আর বেলা ৩টার দিকে গুইমারা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন সেখানকার ইউএনও।

যেভাবে ঘটনার শুরু
গত মঙ্গলবার রাতে শহরের সিঙিনালায় এক স্কুলছাত্রীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন অভিভাবকরা। অভিযোগ রয়েছে, দুই দুর্বৃত্ত ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে। পরে শয়ন শীল নামে একজনকে আটক করে পুলিশ। ধর্ষণের প্রতিবাদে বুধবার শহরে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ থেকে বৃহস্পতিবার জেলাজুড়ে সড়ক অবরোধের ডাক দেওয়া হয়।

তিন পার্বত্য জেলায় নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে গত শুক্রবার শহরে মহাসমাবেশ ডাকা হয়। সেই কর্মসূচির অন্যতম সংগঠক উক্যনু মারমাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বৃহস্পতিবার রাতে আটক করে। পরে জনতার চাপে ছেড়ে দেয়। এর জেরে শুক্রবার মহাসমাবেশ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি গাড়িতে হামলা হয়।

জুম্ম ছাত্র-জনতার মুখপাত্র উক্যেনু মারমা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ অবরোধ করছি। কিছু দুষ্কৃতকারী আমাদের অবরোধকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেছে।

© Samakal

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *