খাগড়াছড়ি-গুইমারায় পাহাড়িদের উপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় মশাল মিছিল

CHT NEWS


ঢাকা প্রতিনিধি, সিএইচটি নিউজ

সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

খাগড়াছড়িতে এক স্কুল ছাত্রীকে সংঘবব্ধ ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র
করে শান্তিপূর্ণ অবরোধ চলাকালে সেটলার কর্তৃক খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারায় হামলা-হত্যা-অগ্নিসংযোগের
ঘটনার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে ঢাকায় মশাল মিছিল করেছে সংক্ষুব্দ
ছাত্র-জনতা।

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে
টিএসসি থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ভিসি চত্ত্বর, কলা ভবন, ঢাবি গ্রন্থাগার হয়ে শাহবাগ মোড়
প্রদক্ষিণ করে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরে সম্মুখে এক সমাবেশে মিলিত হয়।

মশাল মিছিলের ব্যানার শ্লোগান ছিল “রাষ্ট্র ও সেনাবাহিনীর
মদদে পাহাড়িদের উপর সেটলার বাঙালিদের হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার কর
”।

বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অমল
ত্রিপুরার সঞ্চলনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক
রাফিকুজ্জামান ফরিদ, সম্মিলিত পাহাড়ি ছাত্র-জনতার সদস্য মন্টি চাকমা, বাংলাদেশ ছাত্র
ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক রথীন্দ্র নাথ বাপ্পি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র
সংসদ (ডাকসু)-এর সদস্য হেমা চাকমা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর দপ্তর সম্পাদক তৈয়ব ইসলাম,
বিপ্লবী ছাত্র যুব-আন্দোলনের ঢাকা নগরে আহ্বায়ক নাঈম উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থী তামজিদ হোসেন, ঢাকা ট্রেনিং টিচার্স কলেজের শিক্ষার্থী রেকসন চাকমা প্রমুখ।

মন্টি চাকমা গুইমারা ঘটনা তুলে ধরে বলেন, গুইমারায় সেনা-সেটলার
হামলায় ৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে, দফায় দফায় হামলা করা হয়েছে। যারা আহত রয়েছে তাদেরকে
হাসপাতালে নিতে দেয়া হচ্ছে না, বিনা চিকিৎসার রক্তক্ষরণ হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
যারা হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের যদি
আরো কোন একজন পাহাড়ি মারা যায় তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবো।

রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে পর এদেশের মানুষ
নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্বপ্ন দেখেছিল, কিন্তু বাস্তবে তা পূরণ হয়নি।
পার্বত্য চট্টগ্রামের দিনের পর দিন অঘোষিত সেনা শাসন চলছে। সে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে
কথা বলতে হবে, সকলকে ঐকবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে। তিনি পাহাড় থেকে সেনাশাসন প্রত্যাহারে
দাবি জানান।

সমাবেশে হেমা চাকমা বলেন, প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারির মধ্যেও
কিভাবে সেটলাররা মহাজন পাড়ায় হামলা, য়ংড বৌদ্ধ বিহারে দুইজন যুবককে কুপিয়ে যখম এবং
গুইমারায় পাহাড়িদের দোকান, বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করতে পারে? কেনই বা সেনাবাহিনীর গুলিতে
নির্বিচারে ৩ জনকে হত্যা করা হল? জনগণের টেক্সের টাকায় জনগণকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য
যে গুলি ক্রয় করে তা দিয়ে আমাদের উপর হামলা করা হয়। এই অবস্থায় বাংলাদেশ চলছে, গণঅভ্যুত্থান
পরবর্তীতে আমরা কি এমন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম?

তিনি আরো বলেন, খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি নিয়ে আমি যখন খাগড়াছড়ি
জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলি তখন তিনি আমাকে উপদেশ দিয়ে বলেন আপনাদের কমিউনিটি মানুষদের
বুঝান। তিনি প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, আমি কি বুঝাবো, আমি কি বলতে পারি ধর্ষণ হয়েছি আমরা সবাই
ঘরে বসে থাকি? ধর্ষণের ঘটনায় উপযুক্ত শাস্তি না হলে অপরাধের সংখ্যা আরো বাড়তে থাকবে।
অবিলম্বে ধর্ষণ-হামলা-হত্যার বিচার করতে হবে এবং সকল ধরণের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে
দাঁড়াতে হবে।

সমাবেশে হিল উইমেন্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, বিবর্তন
সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল, বম স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন, লেখক
ও গবেষক, শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সংহতি জানান। 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।


Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *