BD-JOURNAL
গঙ্গাচড়ায় হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা মানবাধিকারের লঙ্ঘন, বিচার দাবি
বাংলাদেশ
প্রথম আলো 2025-07-29
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে কটূক্তির অভিযোগ তুলে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও নির্যাতনের নিন্দা জানিয়েছে ছয়টি রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন। তারা বলছে, এটি মানবাধিকারের লঙ্ঘন। এই ঘটনা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকারের ওপর আঘাত। এই অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে তারা।
আজ মঙ্গলবার পৃথক ছয়টি বিজ্ঞপ্তিতে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইআরএসএস), নারীপক্ষ ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন।
সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) এক বিবৃতিতে গঙ্গাচড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার নিন্দা জানান। এই হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি এবং এর নেপথ্যের ‘কুশীলবদের’ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তাঁরা।
বিবৃতিতে সিপিবি বলেছে, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা-নির্যাতন এখন সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নাজুক অবস্থার মধ্যে রংপুরে সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর এই হামলা মানুষের মনে আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে। অভিযুক্ত কিশোর গ্রেপ্তার হওয়ার পরও হামলার ঘটনা ঘটেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার কারণে মানুষের নিরাপত্তাহীনতা ও অসহায়ত্ব বাড়ছে। সংখ্যালঘু নির্যাতন কেবল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয় নয়, এটা রাজনৈতিক সংকটের অংশ।
অতীতে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটলেও একটিরও যথার্থ বিচার হয়নি উল্লেখ করে সিপিবি বলেছে, উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে উঠছে। সরকার চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষায় দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হচ্ছে।
এ ঘটনা নিয়ে এক বিবৃতিতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন বলেছে, গঙ্গাচড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা প্রমাণ করে দেশে ধর্মীয় উসকানিকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এখনো নিরাপদ নয়। এ ঘটনায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে ছয় দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের দাবির মধ্যে আছে রংপুরের ঘটনাটিকে ধর্মীয় সহিংসতা হিসেবে চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার করা; প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সুরক্ষা ও পুনর্বাসনের নিশ্চয়তা দেওয়া এবং প্রশাসনের উদাসীনতার তথা হামলাকারীদের প্রশ্রয় দেওয়ার তদন্ত ও বিচার করা; সরকার ও মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করে নিরপেক্ষভাবে হামলার উদ্দেশ্য, উসকানিদাতা ও পৃষ্ঠপোষকদের নাম প্রকাশ এবং দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার করা; রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি বারবার সংঘটিত সহিংসতার বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরোধ নীতি প্রণয়ন করা; অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা কমিশন গঠন ও কার্যকর করা এবং রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক নেতৃত্বকে সাম্প্রদায়িক উসকানি থেকে বিরত থাকার আহ্বান।
গঙ্গাচড়ার বেতগাড়ী ইউনিয়নে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে এই হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনাকে পরিকল্পিত উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন আসক। আজ থক এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, এক কিশোরের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ম অবমাননার অভিযোগের ভিত্তিতে পুরো একটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যেভাবে সহিংসতা চালানো হয়েছে, তা কোনো সভ্য রাষ্ট্র ও সমাজের মানদণ্ডে গ্রহণযোগ্য নয়। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি স্পষ্ট উদাহরণ এবং সংবিধানে দেওয়া সব নাগরিকের সমান অধিকারের পরিপন্থী।
আসক বলেছে, ধর্মীয় অনুভূতির দোহাই দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার এই ধারাবাহিকতা আশঙ্কাজনকভাবে ঘটে চলেছে। এমন ঘটনা বারবার সংঘটিত হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দোষীরা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই দায়মুক্তির সংস্কৃতি বিচারহীনতার এক ভয়াবহ নজির তৈরি করছে, যা সংবিধানের মৌলিক অধিকার ও রাষ্ট্রের মূলনীতির পরিপন্থী।
এই ঘটনার দায় এড়ানোর সুযোগ রাষ্ট্রের নেই উল্লেখ করে বিবৃতিতে আসক বলেছে, যারা অপরাধ করেছে এবং যারা দায়িত্বে থেকেও এই ধরনের হামলার ঘটনা প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছে, উভয়েরই জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত শনাক্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা; আক্রান্ত পরিবারগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং ধর্মীয় উসকানি ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে রাষ্ট্রকে কার্যকর ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের দাবিও জানিয়েছে আসক।
সংখ্যালঘুদের জীবন, সম্পদ ও নিরাপত্তায় সরকার ও প্রশাসনের দ্রুত ও নিরপেক্ষ পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে পৃথক আরেকটি বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে মানবাধিকার সংগঠন এইচআরএসএস। সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলামের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ ধরনের হামলা শুধু সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার প্রতি সরাসরি হুমকি নয়, বরং বাংলাদেশের সংবিধান, ধর্মীয় সহাবস্থান ও মানবাধিকারের মৌলিক নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
গঙ্গাচড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনার স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত করা; ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পূর্ণ পুনর্বাসন নিশ্চিত করা; উসকানিদাতাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা এবং এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে প্রশাসনিক ও সামাজিক নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছে এইচআরএসএস।
নারীপক্ষ আলাদা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, গঙ্গাচড়ার মতো এর আগেও দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকারের ওপর তীব্র আঘাত। এসব ঘটনায় নারীপক্ষ লজ্জিত এবং ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ ও উদ্বিগ্ন। এর পুনরাবৃত্তি রোধে সবাইকে উদ্যোগী হতে ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। তবে এ ধরনের ঘটনা বন্ধে সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্ব সর্বাধিক।
অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে চরমভাবে উদাসীন ও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। সংগঠনটির সভাপতি মশিউর রহমান খান ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গঙ্গাচড়ায় সরকার জনগণের জানমাল রক্ষায় কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর হামলায় ঘটনায় কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি সরকার; বরং সেসব হামলায় সরকার চুপ থেকে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে নিজের আনুকূল্যে রাখার চেষ্টা করছে।
সূত্র: প্রথম আলো
বাংলাদেশ জার্নাল/এমবিএস
(function(i,s,o,g,r,a,m){i[‘GoogleAnalyticsObject’]=r;i[r]=i[r]||function(){
(i[r].q=i[r].q||[]).push(arguments)},i[r].l=1*new Date();a=s.createElement(o),
m=s.getElementsByTagName(o)[0];a.async=1;a.src=g;m.parentNode.insertBefore(a,m)
})(window,document,’script’,’https://www.google-analytics.com/analytics.js’,’ga’);
ga(‘create’, ‘UA-103843996-1’, ‘auto’);
ga(‘send’, ‘pageview’);
(function(i,s,o,g,r,a,m){i[‘GoogleAnalyticsObject’]=r;i[r]=i[r]||function(){
(i[r].q=i[r].q||[]).push(arguments)},i[r].l=1*new Date();a=s.createElement(o),
m=s.getElementsByTagName(o)[0];a.async=1;a.src=g;m.parentNode.insertBefore(a,m)
})(window,document,’script’,’https://www.google-analytics.com/analytics.js’,’ga’);
ga(‘create’, ‘UA-115090629-1’, ‘auto’);
ga(‘send’, ‘pageview’);
_atrk_opts = { atrk_acct:’lHnTq1NErb205V’, domain:’bd-journal.com’,dynamic: true};
(function() { var as = document.createElement(‘script’); as.type=”text/javascript”; as.async = true; as.src=”https://certify-js.alexametrics.com/atrk.js”; var s = document.getElementsByTagName(‘script’)[0];s.parentNode.insertBefore(as, s); })();