গাজায় অভিযান জোরদারে ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনা নামাচ্ছে ইসরায়েল

Independent Television

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় পূর্ণাঙ্গ স্থল অভিযান চালানোর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রায় ৬০ হাজার রিজার্ভ সেনাকে ফেরাচ্ছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী–আইডিএফ। বুধবার আইডিএফের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয় বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

ইসরায়েলি এক সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, এসব রিজার্ভ সেনা আগামী সেপ্টেম্বর থেকে দায়িত্ব পালন শুরু করবে। তবে অভিযানে অংশ নেওয়া অধিকাংশ সেনা হবেন সক্রিয় দায়িত্বে থাকা সদস্যরা। ইতোমধ্যে গাজা সিটির জেইতুন ও জাবালিয়া এলাকায় সেনারা অভিযান চালাচ্ছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ গতকাল মঙ্গলবার এ পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন। চলতি সপ্তাহেই বিষয়টি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। 

আইডিএফের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযানে পাঁচটি ডিভিশন অংশ নেবে। ধাপে ধাপে ও নির্ভুলভাবে এ অভিযান চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীটির ভাষ্য অনুযায়ী, এ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন গিডিওনের চ্যারিয়টস’। ইতোমধ্যে ২০ হাজার রিজার্ভ সেনার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। 

ইসরায়েল কাৎজ হারেৎজ পত্রিকাকে বলেছেন, ‘অভিযান শেষ হলে গাজার চেহারা আর আগের মতো থাকবে না। দক্ষিণে বাস্তুচ্যুতদের জন্য আশ্রয় ও চিকিৎসা কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।’ 

নতুন করে অভিযানের আগে গাজা সিটি থেকে কয়েক লাখ ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন সংস্থা বলছে, নতুন এ অভিযান ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে। ইতোমধ্যে সীমিত জায়গায় বিপুলসংখ্যক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এতে দেখা দিয়েছে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসার ঘাটতি।

হামাসপন্থী গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘জেইতুন ও সাবরা এলাকায় পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার থেকে বিরামহীন গোলাবর্ষণ চলছে। বুধবার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছেন।’ 

বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, শাতি শরণার্থী শিবিরে এক পরিবারের পাঁচজন বোমায় নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, অভিযানের লক্ষ্য সব জিম্মিকে মুক্ত করা এবং হামাসকে পুরোপুরি পরাজিত করা। তবে আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারীরা একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইসরায়েলের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে। নতুন প্রস্তাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি এবং অর্ধেক জিম্মি মুক্তির বিনিময় করা হতে পারে। হামাস এ প্রস্তাবে সম্মত হলেও ইসরায়েল এখনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় অন্তত ৬২ হাজার ১২২ জন নিহত হয়েছে। প্রায় সব ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস, স্বাস্থ্যসেবা ও পানি-স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। খাদ্য সংকটে গাজার বহু অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *