Google Alert – সামরিক
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির বিষয়ে ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তি করার আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারীদের সর্বশেষ প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাস।
গোষ্ঠীটির এক সূত্র বিবিসি-কে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন। মিশর ও কাতারের পক্ষ থেকে দেওয়া প্রস্তাবটি যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গত জুনে যে দুই-পর্যায়ের কর্মপরিকল্পনা দিয়েছিলেন, তার ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে।
নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রাথমিক ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির মধ্যে হামাস অবশিষ্ট ৫০ জিম্মির প্রায় অর্ধেককে দুই দফায় মুক্তি দেবে। যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনাও চলবে।
তবে ইসরায়েল কী প্রতিক্রিয়া জানাবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর জানিয়েছে, তারা এখন কেবল এমন একটি চুক্তি মেনে নেবে যেখানে “সব জিম্মিকে একসঙ্গে মুক্তি দিতে হবে।”
হামাসের সম্মতির খবর প্রকাশ হওয়ার পর নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় সরাসরি মন্তব্য না করলেও বলেন, গোষ্ঠীটি “তীব্র চাপে” রয়েছে বলে তার ধারণা।
ওদিকে, চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখলের সামরিক পরিকল্পনা অনুমোদন করতে পারে। সেখানে ইসরায়েলি হামলা জোরদার হওয়ায় হাজারো ফিলিস্তিনি পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
গত মাসে যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন, ইসরায়েল সামরিক অভিযান আরও বিস্তৃত করবে এবং গোটা গাজা দখল করবে।
রোববার তেল আবিবে লাখো ইসরায়েলি সমবেত হয়ে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন হামাসের সঙ্গে অবিলম্বে চুক্তি করে সব জিম্মিকে ঘরে ফেরানো এবং যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য।
কিন্তু নেতানিয়াহু অভিযোগ করেছেন, এসব বিক্ষোভ হামাসের দর-কষাকষির অবস্থানকে আরও শক্ত করছে।
তিনি বলেছেন, সব জিম্মির মুক্তি, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, গাজার পূর্ণ সামরিক নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ এবং হামাস বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক থাকবে না- এমন একটি প্রশাসন গাজায় প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ শেষ হবে না।
অন্যদিকে, হামাস বলেছে, তারা একটি সমন্বিত চুক্তি চায় যাতে জিম্মিদের বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারের ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি, যুদ্ধের অবসান এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার অন্তর্ভুক্ত থাকবে। স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া তারা অস্ত্র ছাড়বে না বলেও ঘোষণা দিয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাস-নেতৃত্বাধীন আক্রমণে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নেওয়া হয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এখন পর্যন্ত সেখানে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৬২ হাজার ৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।