Bangla Tribune
গাজায় যুদ্ধোত্তর সরকার গঠন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের পর একত্রিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব গ্রহণের আগে একটি অস্থায়ী প্রশাসন পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, আলোচনায় গাজা শাসন, নিরাপত্তা ও পুনর্গঠন বিষয়ক তত্ত্বাবধানে আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের সম্ভাব্য অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অন্তত ১২ জন কূটনীতিক ও পশ্চিমা কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা অংশীদার আমিরাত। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন কয়েকটি দেশের মধ্যে অন্যতমও দেশটি। এ কারণে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রশাসনের ওপর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রভাব রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, আমিরাতের প্রস্তাবিত ধারণাগুলো এখনও নির্দিষ্ট কোনও রূপরেখায় পরিণত হয়নি বা কোনও সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হয়নি। আলোচনায় সংযুক্ত আরব আমিরাত একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের অধীনে গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে সংস্কারকৃত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের শাসনের আহ্বান জানিয়েছে। তবে এই প্রস্তাবে ইসরায়েলের আপত্তি রয়েছে।
আমিরাতের এক কর্মকর্তা বলেছেন, পুনর্গঠিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য রূপরেখার মাধ্যমে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি নিশ্চিত না করে ইউএই কোনও পরিকল্পনায় অংশ নেবে না।
পশ্চিম তীর ও গাজায় সীমিত শাসনের জন্য ১৯৯৩-১৯৯৫ সালের অসলো চুক্তির আওতায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়েছিল। তবে ২০০৭ সালে হামাসের সঙ্গে বিরোধের পর গাজা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয় তারা।
ইসরায়েলের ১৫ মাসের সামরিক অভিযানের ফলে গাজায় যে ক্ষতি হয়েছে তা পুনর্গঠন করতে বহু বছর ও বিপুল অর্থের প্রয়োজন হবে। আমিরাতের প্রস্তাবে গাজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেসরকারি সামরিক বাহিনীর অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে পশ্চিমা দেশগুলো এই প্রস্তাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ দ্বারা বর্তমান আদলে গাজা শাসনের বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। নেতানিয়াহু পশ্চিম তীরের শিক্ষাক্রম ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের পরিবারের জন্য ভাতা প্রদানের সমালোচনা করে বলেছেন, এই নীতিগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঘৃণা উসকে দেয়।
আমিরাত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে সংস্কার আনতে একজন নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে। আলোচনায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্মকর্তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী সালাম ফাইয়াদের মতো ব্যক্তিকে সম্ভাব্য নেতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, গাজার ভবিষ্যৎ শাসন, নিরাপত্তা ও পুনর্গঠনের বিষয়ে আমিরাতসহ বেশ কয়েকটি অংশীদারের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
একই সময়ে, মিসর ও কাতারের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।