Google Alert – পার্বত্য চট্টগ্রাম
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি নিম্নচাপ এবং সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলার সব উপজেলায় টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। রবিবার (২৭ জুলাই) রাত থেকে শুরু হওয়া এ বৃষ্টি সোমবার সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে, আবার কখনও মুষলধারে অব্যাহত রয়েছে।
বৃষ্টির সঙ্গে সাগরের প্রবল জোয়ারের চাপে কর্ণফুলী ও হালদা নদীর পানি উপচে পড়ে নগরীর নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ফলে কাতালগঞ্জ, কাপাসগোলা, চান্দগাঁও, প্রবর্তক মোড়, পাঁচলাইশ, জিইসি মোড়, আগ্রাবাদ, হালিশহরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
সকাল থেকে অফিসগামী ও স্কুল-কলেজগামী মানুষেরা গণপরিবহন সংকটে ভোগান্তির শিকার হন। অনেকে অতিরিক্ত ভাড়ায় রিকশা বা অটোরিকশায় গন্তব্যে পৌঁছান। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টিতেই পরিবহন ভাড়া দ্বিগুণ আদায় করছেন চালকরা।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৬.৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একই সময়ে আমবাগান কেন্দ্রে রেকর্ড হয়েছে ৫৫ মিলিমিটার। আবহাওয়াবিদ মাহমুদুল হাসান জানান, নিম্নচাপ উপকূল অতিক্রম করলেও এর প্রভাব এখনও রয়ে গেছে। বৃষ্টিপাত আরও দুই-তিন দিন অব্যাহত থাকবে।
এদিকে কর্ণফুলী নদীতে রবিবার বিকাল ৩টায় জোয়ারের উচ্চতা ছিল ৩.৬৫ মিটার, যা বিপদসীমা ৪.১৫ মিটার থেকে সামান্য নিচে। হালদা নদীর পানি এখনও স্বাভাবিক রয়েছে, তবে স্রোত বেড়েছে।
চট্টগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আনিস হায়দার খান বলেন, ‘‘জোয়ারের সময় কর্ণফুলী নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। হালদার পানি এখনও বিপদসীমার নিচে।’’
চট্টগ্রামের প্রধান প্রধান সড়ক হাঁটু থেকে কোমরসমান পানিতে তলিয়ে থাকায় রিকশা-অটোরিকশা চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। আগ্রাবাদ, বিবিরহাট, তিনপোল, ওয়াসা মোড়, চকবাজার, ইপিজেড এলাকাতেও জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে দুর্ভোগে পড়ে স্কুলগামী শিশুরাও।
নগরবাসী অভিযোগ করেন, খাল ও ড্রেনে আবর্জনা জমে থাকায় পানি নামতে পারছে না। স্থানীয় গৃহিণী শাকিলা ফারজানা বলেন, ‘‘প্রতিদিন যেখানে ৫০-৬০ টাকা ভাড়া লাগে, আজ সেখানে দিতে হয়েছে ২০০ টাকা।’
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘আগের মতো এখন দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা হয় না। পানি ঘণ্টাখানেকের মধ্যে নেমে যাচ্ছে। নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৪ হাজার ৩৯ কোটি টাকার চারটি প্রকল্প চলমান রয়েছে।’’
আবহাওয়াবিদ মাহমুদুল আলম বলেন, ‘‘আগামী দুই-তিন দিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। এ সময়ে পাহাড় ধসের আশঙ্কাও রয়েছে।’’
আর এইচ/