চট্টগ্রামে হামলার জন্য ছাত্রশিবিরের গ্রেপ্তার দাবি ছাত্রজোটের

Google Alert – সশস্ত্র

চট্টগ্রামে পুলিশের উপস্থিতিতে জামায়াত-শিবিরের ’সশস্ত্র ক্যাডাররা’ পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট‘।


বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন বাম ছাত্র জোটটির নেতারা।


বুধবার বিকালে জামায়াতনেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পাওয়ার প্রতিবাদে ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলায় ছয়জন আহত হয়। তাদের দাবি, ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে।


এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে এবং কোতয়ালী থানার এসআই নওশের কোরেশী বাদি হয়ে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা করে। বুধবার রাতে গ্রেপ্তার দুইজনকে ছাড়িয়ে আনতে ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য‘র ব্যানারে ৫০-৬০ জন যুবক কোতয়ালী থানার বাইরেও অবস্থান নেয়।


বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এ্যানি চৌধুরী বলেন, “বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করি। আমরা লক্ষ্য করি হঠাৎ গজিয়ে ওঠা তথাকথিত ‘শাহবাগবিরোধী ঐক্য’ নাম দিয়ে একটি সংগঠন বুধবার সকাল থেকে আমাদের কর্মসূচি প্রতিহত করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে উসকানি ও মব সৃষ্টি করেছে।”


ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘আমাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশ শুরুর জন্য প্রেস ক্লাব চত্বরে জমায়েত হলে বিকালে পুলিশের উপস্থিতিতেই জামায়াত-শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। নারী কর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে, নেতাকর্মীদের মারধর করে।”


এ ঘটনায় তাদের ১৫ জন আহত হয়েছেন দাবি করে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর।


এ্যানি চৌধুরীর অভিযোগ, হামলাকারীদের মধ্যে ছাত্রশিবির নগর উত্তরের প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আবরার হোসাইন রিয়াদ, জামায়াতনেতা আকাশ চৌধুরী, তৌকির ও আফসার রয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, হামলাকারীরা গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’, ‘আওয়ামী লীগের দোসর’, ‘শাহবাগী’ ইত্যাদি বলে স্লোগান দেয়। অথচ হামলায় আহত রিপা মজুমদার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চট্টগ্রামের সমন্বয়ক ছিলেন।


‘‘গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছে। যারা ফ্যসিবাদের দোসর ট্যাগ দিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ওপর হামলা চালালো, তারা ছাত্রলীগের মতোই ফ্যাসিবাদী চেহারা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করছে।‘‘


সংবাদ সম্মেলনে হামলাকারী ছাত্রশিবিরের কর্মীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।


এছাড়া জামায়াতনেতা আজহারের বিচার প্রক্রিয়াটি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত দাবি করে এ্যানি চৌধুরী বলেন, “এর মাধ্যমে আদালতের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বিচার ব্যবস্থা যে আওয়ামী আমলের মত এখনো পুরোমাত্রায় রাজনৈতিক প্রভাবাধীন তাই প্রমাণিত হল।


‘‘আওয়ামী লীগ সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের গণদাবিকে প্রহসনে পরিণত করেছিল। একে নিজের ক্ষমতায় টিকে থাকার হাতিয়ার বানিয়ে ত্রুটিপূর্ণ বিচার করেছিল। প্রকৃত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে তারা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, জাতির সাথে বেঈমানি করেছে।“


তিনি বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ আমলে ঘোষিত আজহারের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন থাকলে নতুন করে শুনানি শুরু করা যেত। অথচ তা না করে রিভিউ শুনানির রায়ে তাকে নির্দোষ ঘোষণা করা হল। মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামী লীগ যেভাবে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করেছে তাকে প্রতিরোধ করেছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থান। এই অভ্যুত্থান গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার এবং স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করেছিল। দুঃখজনকভাবে এই রায় সেই প্রত্যাশাকে ভেঙে দিয়েছে।‘‘


সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগরের সভাপতি রিপা মজুমদার, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সহ-সভাপতি ঈশা দে, বৃহত্তর চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অংহ্লাসিং মারমা।

আরও পড়ুন:

চট্টগ্রামে ছাত্রজোটের ওপর হামলা: গ্রেপ্তারদের একজনের জামিন

চট্টগ্রামে ছাত্রজোটের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশের মামলা, গ্রেপ্তার ২

চট্টগ্রামে ছাত্রজোটের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শিবিরের হামলার অভিযোগ

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *