চীনের সমরাস্ত্র ব্যবসায় কী প্রভাব পড়বে

Google Alert – সামরিক

ভারত পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনায় চীনের সরবরাহ করা অস্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, তাদের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস৪০০এর কাছে চীনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তেমন সুবিধা করতে পারেনি। এছাড়াও, চীনের তৈরি ড্রোনগুলোও ভারতীয় আকাশসীমা ভেদ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক যুদ্ধ বিমানের বাজার এবং চীনের সমরাস্ত্র প্রযুক্তি সম্পর্কে বিশ্লেষক সমরবিদরা কী বলছেন।

পাশাপাশি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল নিয়েও কথা উঠেছে। যখন পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে তারা রাফালকে ভূপাতিত করেছে।

তবে ভারতীয় বিমানবাহিনী স্পষ্ট করে সরল কথা উত্তর না দিয়ে, তারা জানিয়েছে তাদের সব পাইলটই নিরাপদে ঘরে ফিরেছে।

যুদ্ধের সময় কৌশল হিসেবেই শতভাগ তথ্য প্রকাশ করেন না যুদ্ধরত কোন পক্ষ। রাফাল ভূপাতিতের খবরে ফ্রান্সের পক্ষ থেকেও দাসো এভিয়েশন কোন বিবৃতি দেয় নি। বা চীনের পক্ষ থেকেও তাদের যুদ্ধবিমান বা বা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ফেল করা না করার বিষয়েও কোন বক্তব্য নজরে আসেনি।

যুদ্ধের প্রেক্ষাপট চীনের অস্ত্রের ভূমিকা:

সাম্প্রতিক সংঘাতে পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ড্রোন উল্লেখযোগ্য।

তবে, ভারতীয় গণমাধ্যম এবং কিছু আন্তর্জাতিক সূত্র দাবি করছে যে এই অস্ত্রগুলো প্রত্যাশিত ফল দিতে পারেনি। ভারতের এস৪০০ ব্যবস্থা চীনা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল প্রমাণ করেছে এবং চীনের ড্রোনগুলো ভারতীয় রাডার ফাঁকি দিতে পারেনি।

সমরাস্ত্র বাজারে প্রভাব:

যদি এই খবর সত্যি হয়, তবে আন্তর্জাতিক সমরাস্ত্রের বাজারে চীনের অস্ত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা কিছুটা হলেও কমতে পারে।

ক্রেতা দেশগুলো অস্ত্রের কার্যকারিতা এবং আধুনিক প্রযুক্তির মোকাবিলার সক্ষমতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হবে।

বিশেষ করে, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ড্রোনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে দেশগুলো আরও উন্নত বিকল্পের দিকে ঝুঁকতে পারে।

তবে, এখনই চীনের সমরাস্ত্র বাজার রাতারাতি ধসে পড়বে, এমনটা মনে করার কারণ নেই। কারণ, চীনের অস্ত্রের দাম সাধারণত পশ্চিমা দেশগুলোর অস্ত্রের চেয়ে কম হয়ে থাকে

অনেক উন্নয়নশীল দেশ বাজেট সীমাবদ্ধতার কারণে চীনের অস্ত্রের দিকে আকৃষ্ট হতে পারে।

এছাড়াও, চীন তাদের প্রযুক্তি উন্নত করার চেষ্টা করছে এবং ভবিষ্যতে তারা আরও উন্নত কার্যকর সমরাস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন:

এই সংঘাতের ফলাফল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রদের জন্য চীনের সামরিক প্রযুক্তি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পেতে সহায়ক হতে পারে।

দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা সামরিক বিশেষজ্ঞরা চীনের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে বিভিন্ন মতামত দিয়ে আসছেন।

এই সংঘাতের মাধ্যমে অর্জিত ডেটা এবং অভিজ্ঞতা চীনের অস্ত্রের দুর্বলতা এবং সক্ষমতা উভয়ই বুঝতে সাহায্য করবে।

মার্কিন সামরিক বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিশ্চয়ই এই সংঘাতের প্রতিটি দিক গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

চীনের রাডার, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক যুদ্ধ সরঞ্জামের কার্যকারিতা তারা বিশ্লেষণ করবে। এর ফলে ভবিষ্যতে চীনের বিরুদ্ধে সামরিক কৌশল তৈরিতে সুবিধা হবে।

বিশ্লেষক সমরবিদদের মতামত:

আন্তর্জাতিক সামরিক বিশ্লেষক এবং সমরবিদরা এই পরিস্থিতিকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন।

কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, কোনো একটি নির্দিষ্ট সংঘর্ষের ফলাফলের ভিত্তিতে সামগ্রিকভাবে কোনো দেশের সামরিক প্রযুক্তির মূল্যায়ন করা কঠিন।

কারণ, যুদ্ধের পরিস্থিতি, ব্যবহৃত কৌশল এবং প্রতিপক্ষের সক্ষমতাএই সবকিছুই অস্ত্রের কার্যকারিতার ওপর প্রভাব ফেলে।

আবার কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, যদি ভারতীয় দাবি সত্যি হয়, তবে এটি চীনের জন্য একটি সতর্কবার্তা।

তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা এবং ড্রোন প্রযুক্তিতে আরও উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে, যাতে তারা আধুনিকতম হুমকির মোকাবিলা করতে পারে।

অন্যদিকে, কিছু সমরবিদ মনে করেন যে পশ্চিমা দেশগুলো চীনের সামরিক উত্থানকে যেভাবে ভয় পায়, হয়তো এই সংঘাত সেই ভয় কিছুটা কমাতে সাহায্য করবে।

যদি চীনের অস্ত্র তাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ না করে, তবে পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক আধিপত্য বজায় থাকার সম্ভাবনা আরও জোরালো হবে।

চীনের প্রতিক্রিয়া:

এখন পর্যন্ত চীন এই সংঘাত এবং তাদের অস্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে, তারা সম্ভবত অভ্যন্তরীণভাবে এই বিষয়টির মূল্যায়ন করছে এবং ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।

চীন তাদের সামরিক গবেষণা উন্নয়ন খাতে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারে এবং তাদের অস্ত্রের মান নির্ভরযোগ্যতা বাড়ানোর চেষ্টা করতে পারে।

ভারতপাকিস্তান যুদ্ধে চীনের অস্ত্রের কথিত দুর্বলতা আন্তর্জাতিক সমরাস্ত্র বাজারে একটি ছোটখাটো প্রভাব ফেলতে পারে।

ক্রেতা দেশগুলো হয়তো আরও সতর্ক হবে এবং উন্নত বিকল্পের সন্ধান করবে। তবে, চীনের অস্ত্রের কম দাম এবং তাদের ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তিগত উন্নতিএই দুটি বিষয় তাদের বাজার ধরে রাখতে সাহায্য করতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলো এই সংঘাত থেকে চীনের সামরিক প্রযুক্তি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করবে, যা তাদের ভবিষ্যৎ সামরিক পরিকল্পনা এবং কৌশল নির্ধারণে কাজে লাগবে।

তবে, সামগ্রিকভাবে চীনের সামরিক সক্ষমতার মূল্যায়ন একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া এবং কেবল একটি সংঘর্ষের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা উচিত নয়।

সামরিক বিশ্লেষক এবং সমরবিদরা এই পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং ভবিষ্যতে তারা বিষয়ে আরও বিস্তারিত মতামত দেবেন বলে আশা করা যায়।

লেখক: মো: আবু সাঈদ ; ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক।

#ভারত #পাকিস্তান #যুদ্ধবিমান #ট্রাম্প #চীন

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *