জড়িতরা ‘রাতারাতি’ গ্রেপ্তার না হলে প্রশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর হুঁশিয়ারি সারজিসের

BD-JOURNAL

গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের ‘রাতারাতি’ গ্রেপ্তার করতে না পারলে ‘প্রশাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাওয়ার’ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘বিগত দিনগুলোতে আমরা গ্রেপ্তার গ্রেপ্তার খেলা দেখতে পেয়েছি। একদল গ্রেপ্তার করে, দুইদিন পর আদালতে বিচারক নামের কিছু অকালকুষ্মান্ড, খুনি হাসিনার দোসররা জামিন দিয়ে দেয়।’

শনিবার বিকেলে গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ভাওয়াল রাজবাড়ী সড়কে বিক্ষোভ-সমাবেশে এসব কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এ সমন্বয়ক।

এ সময় ওই আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহসহ স্থানীয় বৈষম্যবিরোধী নেতাকর্মীরা ছিলেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘রক্ত ও জীবনের বিনিময়ে ছাত্র-জনতা বাংলাদেশকে মুক্ত করেছে’। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, খুনি হাসিনার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা এখনো গাজীপুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই সন্ত্রাসীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এখনো আমার যোদ্ধাদের হুমকি দিচ্ছে। এসব সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করার জন্য নতুন এক অপারেশন চালাতে হবে। বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাসীদের বের করতে হবে।’

শুক্রবার রাতে গাজীপুর নগরের ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। এতে অন্তত ১৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ডাকা শনিবারের বিক্ষোভ-সমাবেশে যোগ দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। সমাবেশে বক্তব্যে টাকার বিনিময়ে অনেক ‘দাগি আসামিকে জামিন দেয়া হচ্ছে’ দাবি করে সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলি, হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট থেকে, প্রত্যেকটা জেলা থেকে ওই খুনির দোসর বিচারকদের অপসারণ করতে হবে।’

সকালে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি, পুরো বাংলাদেশে গর্ত থেকে বের হয়ে যেসব সন্ত্রাসী মাঝে-মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে রাজপথে উঁকি দিচ্ছে, তাদের সবাইকে জেলখানার ভেতরে দেখতে চাই। গাজীপুরের রাজপথ থেকে একটি কথা স্পষ্ট করে বলি, বাংলাদেশের কোথাও আমার কোনো সহযোদ্ধার গায়ে কেউ হাত দেয়ার চেষ্টা করলে পুরো দেশ নতুন করে জেগে উঠবে। আমরা যেমন গাজীপুরে আসতে পারি, তেমনি প্রয়োজনে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারি।

সারজিস বলেন, প্রশাসন থেকে শুরু করে, যারা কাজ করছেন, তারা যদি আমাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে ফেলেন, তাহলে এই বাংলাদেশে নতুন আরেকটি বিপ্লব আপনাদের দেখতে হবে। স্পষ্ট করে বলছি, গতকালকের হামলায় যেসব সন্ত্রাসীরা জড়িত ছিল, তাদের আজকের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সমাবেশে সারজিস আলম অভিযোগ করেন, ‘ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যখন নিরীহ ছাত্রদের ওপর হামলা করে, তখন বার বার পুলিশকে খবর দিলেও তারা সঠিক সময়ে আসেনি। পুলিশ ঘটনার প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর আসে।’

সমাবেশে এসে বক্তব্য দেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. নাজমুল করীম খান। হামলার ঘটনায় নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করে ক্ষমা চান। পাশাপাশি এ ঘটনায় সদর থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্তের ঘোষণা দেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *