Google Alert – পার্বত্য অঞ্চল
ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে ‘মেঘ বিস্ফোরণে’ সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় নিহত হয়েছেন ৪৬ জন। নিহতদের মধ্যে দেশটির কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর (সিআইএসএফ) দুই কর্মীও রয়েছেন। এ ঘটনায় ১০০ জন আহত এবং অনেক মানুষ এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতের সেনাবাহিনীও উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে জম্মু ও কাশ্মীরের কিশতোয়ার জেলার চাশোটি এলাকায় ভয়াবহ এ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে। খুবই অল্প সময়ের মধ্যে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট আকস্মিক এ বন্যার পানি নিচু অঞ্চলে যা ছিল তার সবই ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এতে করে নিচু জায়গাগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাতে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে ১৬৭ জনকে উদ্ধার করেছেন, তাদের মধ্যে ৩৮ জনের অবস্থা গুরুতর।
জম্মু ও কাশ্মীরে প্রতিবছর কিসওয়ারের মাতা চণ্ডী হিমালয় তীর্থস্থানের বার্ষিক যাত্রা হয়। এই তীর্থস্থানে যেতে চাশোটি হয়ে যেতে হয়। চাশোটি হলো তীর্থস্থানে যাত্রা শুরুর স্থান। অঞ্চলটি বেশ দুর্গম। তবে এই চাশোটি গ্রামের পর আর গাড়ি যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। এদিকে মেঘ বিস্ফোরণে আকস্মিক বন্যার কারণে এবারের বার্ষিক যাত্রা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এক কর্মকর্তা।
এদিকে এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্ভাব্য সকল সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সামাজিক যোগযোগমাধ্যম এক্সের এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীরের কিশতওয়ারে মেঘ বিস্ফোরণ ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সকলের প্রতি আমার সমবেদনা এবং প্রার্থনা। পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চলছে। প্রয়োজনে সম্ভাব্য সকল সহায়তা প্রদান করা হবে।’
মেঘ বিস্ফোরণ কী?
কোনো ছোট এলাকায় (এক থেকে ১০ কিলোমিটার বিস্তৃত) এক ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার বা তার বেশি বৃষ্টিপাত হলে সেই ঘটনাকে ক্লাউডবার্স্ট বা মেঘ বিস্ফোরণ বলে চিহ্নিত করা হয়।
ক্লাউডবার্স্টের কারণে অতিভারি বৃষ্টি দেখা যায়। তবে এর সঙ্গে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পার্থক্য আছে। একটা ছোট এলাকায় মেঘ হঠাৎ ঘনীভূত হওয়ার কারণে মেঘভাঙা বৃষ্টি দেখা দেয়। এর তীব্রতা এবং প্রভাব স্বাভাবিক অবস্থায় ভারি বা অতিভারি বৃষ্টির চাইতে অনেক বেশি, ক্ষতি করার শক্তিও বেশি। এই জাতীয় বৃষ্টির ফলে পার্বত্য অঞ্চলে প্রায়শই ফ্ল্যাশ ফ্লাড বা আকস্মিক বন্যা এবং ল্যান্ডস্লাইড বা ভূমিধস দেখা যায়। প্রাণনাশ এবং বড় আকারে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও থাকে।
সম্প্রতি ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের উত্তরকাশীতে মেঘ বিস্ফোরণ বৃষ্টি এবং আকস্মিক বন্যার জেরে বহু প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে । তীব্র বেগে ধেয়ে আসা ক্ষীরগঙ্গা নদীর জল এবং সঙ্গে বয়ে আসা বড় পাথর আর কাদার স্রোতের প্রভাবে কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে উত্তরকাশীর ধরালি গ্রামের বিস্তীর্ণ অংশ। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে হর্ষিল উপত্যকা সংলগ্ন অঞ্চলে।