Google Alert – পার্বত্য চট্টগ্রাম
বাংলাদেশ একটি বহু জাতির, বহু ধর্মের, বহু ভাষার ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যময় জনপদ। ঐতিহাসিক কাল ধরে এই ভূখণ্ডে বসবাসকারী বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ইতিহাসের গতিধারায় বিরোধ ও সম্মিলনের মধ্য দিয়ে বিকশিত হয়ে এসেছে। জাতিগত ভিন্নতা ও সাংস্কৃতিক নানা ভেদ-বিভেদের মধ্যেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিই এই জনপদের মানুষের মূল চরিত্র। ইতিহাস তাই বলে। তবে এই ভূখণ্ডে ঔপনিবেশিক শাসনের ‘ভাগ করো, শাসন করো’ নীতির প্রয়োগের ফলে সৃষ্টি হয়েছে বহুমাত্রিক বিভাজন।
১৯৪৭-এর দেশভাগের পর পাকিস্তানের শাসকদের ২৪ বছরের নিপীড়নের ইতিহাস সবার কাছে জানা। উল্লেখযোগ্য যে, এই ভূখণ্ডের ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রাম, ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০-এর গণ-আন্দোলন ও ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানসহ প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সংগ্রামে বাঙালির পাশাপাশি অপরাপর জাতিসমূহেরও রয়েছে সমঅংশগ্রহণ। কিন্তু ইতিহাসের নির্মম পরিহাস—যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার শপথে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেই লক্ষ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সবার জন্য বাংলাদেশ নির্মাণের কোনো চেষ্টা দেখা যায়নি বরং এযাবৎকালে শাসকদের দ্বারা যতগুলো নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে, তার অধিকাংশই বাংলাদেশকে এক জাতির রাষ্ট্রে পরিণত করার পথে ভূমিকা রেখেছে।
বাহাত্তর থেকে চব্বিশ: অন্তর্ভুক্তির বিপরীতে নির্মিত বিভাজন
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম মূলমন্ত্র ছিল অসাম্প্রদায়িকতা। বাঙালি মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছেন বীর বিক্রম উক্যচিং মারমা, খাসি নারী কাঁকাথেয় নিয়তা—যাকে বাংলাভাষীরা কাঁকন বিবি নামে চেনেন—এবং অসংখ্য আদিবাসী মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতার পর দেশের বাঙালি ছাড়া ৫৪টিরও বেশি জাতিগোষ্ঠীর স্বপ্ন ছিল—সংবিধানে আত্মপরিচয়ের স্বীকৃতি পাওয়া, নিজেদের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও অধিকার নিয়ে রাষ্ট্রে বিকশিত হওয়া।
কিন্তু সেই স্বপ্ন মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের এক বছরের মাথায় ভেঙে যায়। সংবিধান প্রণয়নের সময়। ১৯৭২ সালের সংবিধানের ৬(খ) অনুচ্ছেদে লেখা হয়—“বাংলাদেশে বসবাসকারী সকল জনগণ জাতি হিসেবে বাঙালি বলিয়া গণ্য হইবে।” এর বিরোধিতা করেন পার্বত্য চট্টগ্রামের তৎকালীন গণপরিষদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আদিবাসীদের অবিসংবাদিত নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা। তার ঐতিহাসিক উচ্চারণ—“আমার বাপ, দাদা, চৌদ্দ পুরুষ—কেউ বলে নাই আমি বাঙালি”—রাষ্ট্র উপেক্ষা করে তার দাবি। ফলে সংবিধানেই আদিবাসীদের আত্মপরিচয়ের অধিকারকে অস্বীকার করে তাদের প্রান্তিকীকরণের ভিত্তি গড়ে দেওয়া হয়।
এর পরের পাঁচ দশকে রাষ্ট্রীয় নীতি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, মূলধারার রাজনীতি, সাহিত্য, আর্থ-সামাজিক কাঠামো—সবখানেই আদিবাসীদের ক্রমে হয় ‘বাঙালিকরণ’, নয় ‘অ-জনকরণ’-এর মাধ্যমে একপাশে ঠেলে দেওয়ার প্রবণতা চলেছে।
আমরা দেখতে পাই ‘অপরকরণ নীতি’ (অপারেশন দাবানল) মধ্য দিয়ে ১৯৭০-এর দশকের শেষভাগে পাহাড়ে ব্যাপক গণ-অশান্তি সৃষ্টি হয় এবং আদিবাসীদের প্রান্তিকীকরণের উদ্দেশ্যে সমতল এলাকার অ-পাহাড়িদের পাহাড়ে পুনর্বাসনের মাধ্যমে সেনা কর্তৃত্বে পাহাড়িদের শাসনের একটি নীতি গৃহীত হয়। এর ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ দুই দশক ধরে সংঘাত চলেছে, যেখানে সামরিক ও বেসামরিক, পাহাড়ি ও বাঙালি উভয় পক্ষের বহু প্রাণহানি ঘটেছে।
১৯৯৭ সালে ২৬ বার আলোচনার পর একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা পাহাড়ের মানুষের জীবনে পরিবর্তন ও আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আশ্বাস দেয়। আশা করা হয়েছিল পাহাড়ে কাঙ্ক্ষিত শান্তি ফিরবে। বিগত স্বৈরাচারী সরকারসহ অন্যান্য সরকারসমূহ সেই চুক্তি বাস্তবায়ন না করে নানা মিথ্যাচারের মাধ্যমে কালক্ষেপনের নীতি গ্রহন করে। যার ফলে পাহাড়ে এখনও উন্নয়ন, শান্তি ও স্থিতিশীলতা আসেনি।
অন্যদিকে, সমতল ভূমির আদিবাসী জাতিসমূহ ক্রমশ ভূমিহীন হয়ে পড়ছে। নিরাপত্তাহীনতা, ভূমি হারানোর যন্ত্রণা এবং প্রান্তিকতায় তারা দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে, অনেকেই দেশ ছেড়ে গেছে। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি হলো পৃথক মন্ত্রণালয় এবং ভূমি অধিকার সুরক্ষার জন্য কার্যকর ভূমি কমিশন গঠন, যা স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে এখনও পূরণ হয়নি।
ফলশ্রুতিতে, গত ৫৪ বছরে রাষ্ট্রীয় কাঠামো পাহাড় ও সমতলের আদিবাসীদের জন্য নিরাপদ হয়নি; বরং তাদের জীবন আরও সংকটপূর্ণ ও নিরাপত্তাহীনতায় জর্জরিত হয়েছে।
২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান: সম্ভাবনা ও আমার পর্যবেক্ষণ
২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সূচনা হয়েছিল ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। মূল দাবি ছিল সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কার। কিন্তু ক্ষমতায় থাকা ফ্যাসিস্ট সরকার এই দাবিকে তোয়াক্কা না করে ছাত্রদের দমন-পীড়নের পথে যায়। শুধু তাই নয়, দেশের সব ক্ষেত্রে ভিন্নমত দমন, বিরোধীদের হয়রানি, মিথ্যা মামলা, গুম, খুন, অন্যায় আটক—সবই তীব্র আকারে বাড়ে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
পার্বত্য চট্টগ্রামেও আমরা অধিকারকর্মীদের ওপর নির্যাতনের অসংখ্য ঘটনা দেখেছি। বিগত ১৬ বছরে বহু অধিকারকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলায় আটক, এলাকা ছাড়া, গুম, হত্যা বা দেশান্তরে বাধ্য করা হয়েছে। সমতলেও আদিবাসীরা ক্রমাগত ভূমি হারাচ্ছেন; আদিবাসী নারীরা ধর্ষণ, হত্যা ও সহিংসতার শিকার হচ্ছেন, আর এসব ঘটনার বিচার প্রায় কখনোই হয়নি। ফলে বিচারহীনতার এক দীর্ঘস্থায়ী সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে।
২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুক্তি আসতে পারে, এমন আশায় আদিবাসী তরুণরা উল্লেখযোগ্য হারে অংশ নেয়। উদাহরণ হিসেবে আমরা বলতে পারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রূপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা—যিনি অভ্যুত্থানের সময়ে ছাত্রলীগের নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অং মো ক্য অং অং মারমা, যিনি পুলিশের গুলিতে দুই দফা আহত হন।
সরকার পতনের তিন দিন আগে, ২ অগাস্টের দ্রোহযাত্রায় পাহাড় ও সমতলের আদিবাসী তরুণরা ব্যানার হাতে অংশ নেয়, যেখানে লেখা ছিল—‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, সেনাশাসন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম মুক্তি পাক’। এবারের অভ্যুত্থানে বিজয় অর্জনের পর সবচেয়ে নজর কেড়ে ছিল নানান দাবি সম্বলিত গ্রাফিতি—যেখানে ছিল অন্তর্ভুভুক্তিমূলক ভিন্ন আয়োজন, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আবেদন ও নিখাদ আবেগে ভরা বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় তারুণ্যের নানা স্লোগান। জেন-জি প্রজন্মের এই ভাবনা ও কাজ আমাদের আশাবাদী করেছিল।
তবে সরকার পতনের এক মাস পর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বন্যা দেখা দেয়। সমতলের পাশাপাশি খাগড়াছড়িতেও পাহাড়ি বহু মানুষ গৃহহীন হন। গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা পাহাড়ের বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ সহায়তায় অংশ নেন—যা আমাদেরকে আরও আশাবাদী করেছিল।
প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পর মুহাম্মদ ইউনূস তার ভাষণে বাঙালি-আদিবাসী সবার অংশগ্রহণে দেশ গড়ার যে স্বপ্নের কথা বলেন, তাতে আমরা উদ্দীপ্ত হয়েছিলাম। কিন্তু সামষ্টিকভাবে পথচলার সেই চেতনা দ্রুত ফিকে হয়ে আসছে—যা আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও পূর্ববর্তী ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থাপনা বদলাতে না পারায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বরং এই সরকারের এক বছরে আদিবাসীরা চরম নিরাপত্তাহীনতা ও বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক মাস না যেতেই, ১৮–২০ সেপ্টেম্বর তিন পার্বত্য জেলায় উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী হামলা করে এবং আগুন দেয় এখানে-ওখানে। এর সঙ্গে পাহাড়িদের ভূমি বেদখল ও নারী নিপীড়নও অব্যাহত রয়েছে।
গেল ১৫ জানুয়ারি, ঢাকা শহরের রাজপথে আদিবাসী শিক্ষার্থী ও তরুণরা একটি গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে মৌলবাদী সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন। এর আগে বহুবার বহু দাবিতে আদিবাসীরা ঢাকায় কর্মসূচি পালন করেছে, সেদিন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো হামলার শিকার হয়। এতে রূপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা, ডন জেত্রাসহ অন্তত ২০ জন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা হলেও আসামিরা আজও মুক্তভাবে চলাফেরা করছে—যা গভীর হতাশার জন্ম দিয়েছে।
তবে এর মাঝেও কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। বিশেষ করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি উদ্যোগ আমাদের আশাবাদী করেছে। বাঙালি সংস্কৃতির পাশাপাশি বিভিন্ন জাতিসমূহের সংস্কৃতিও তুলে ধরার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়টির উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো। জাতিবৈচিত্র্য দিবস পালনের মতো ইতিবাচক আয়োজনও রয়েছে এগুলোর মধ্যে। এছাড়াও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান আইন–২০১০’ সংশোধন করে ‘নৃ-বৈচিত্র্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান অধ্যাদেশ, ২০২৫ (প্রস্তাবিত)’ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে—যা ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যেতে পারে।
আমরা এসব উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তবে নামকরণের ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরি—কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন জাতিসমূহের আত্মপরিচয় ও অধিকারের স্বীকৃতি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলছি, ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী’, ‘উপজাতি’, ‘ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী’—এসব শব্দ আমাদের জন্য মানহানিকর ও বিব্রতকর। ‘বৈষম্যহীনতা ও অন্তর্ভুক্তি’র প্রতিশ্রুতি দেওয়া সরকার সংস্কার কার্যক্রমে আদিবাসীদের কার্যকরভাবে যুক্ত করবে—এমন প্রত্যাশা করি। আমাদের প্রত্যাশা—লোকদেখানো আয়োজনের পরিবর্তে সত্যিকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়তে রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারকরা আন্তরিক হবেন। এ ক্ষেত্রে আদিবাসী নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত সংলাপ অপরিহার্য। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের চলমান সংস্কার প্রক্রিয়াতেও এর প্রতিফলন দেখতে চাই। যদিও এখনও কার্যকর কোনো রাজনৈতিক সংলাপ হয়নি, তবুও আমরা এই সংস্কার ও রাষ্ট্রগঠন প্রক্রিয়ার অংশীদার হতে চাই। কারণ এতে আদিবাসীদের সঠিক অন্তর্ভুক্তি না হলে বিভিন্ন জাতিসমূহের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হবে।
এই বাস্তবতার মধ্যেও আমাদের আশা আছে। সরকারের গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটি ১৯ জুলাই রাঙামাটিতে সভা করেছে এবং ফলপ্রসূ আলোচনার মাধ্যমে বৈঠক শেষ হয়েছে—যা দেশে-বিদেশে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে।
এছাড়া ২৫ মে ২০২৫-এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান টাঙ্গাইলের মধুপুরে গিয়ে আদিবাসী বনবাসীদের বিরুদ্ধে করা ১২৯টি মিথ্যা বন মামলা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন এবং তা কার্যকরও করেন।
ঐতিহাসিকভাবে যে নিপীড়ন ও বঞ্চনা আদিবাসীরা সহ্য করে এসেছে, তার অবসানে বড় পরিসরে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ প্রয়োজন। প্রথমত দরকার বৃহত্তর জাতিগোষ্ঠীর মানুষের মানসিকতা ও সংবেদনশীলতার আমূল পরিবর্তন। বড় জাতির মানুষ হিসেবে উন্নত মনোভাব ধারণ করে মূলধারার জনগণকে আদিবাসীদের এগিয়ে যাওয়ার সহায়ক শক্তি হতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা ও নিরাপত্তার দৃষ্টিভঙ্গি বাদ দিয়ে, তাদের রাষ্ট্রীয় নীতি-নির্ধারণ প্রক্রিয়ার অংশীদার করতে হবে। তবেই দীর্ঘকাল ধরে পীড়নের মধ্যে থাকা আদিবাসী জীবন হবে নিরাপদ, উন্নত ও সম্ভাবনাময়।