জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়: সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্টের দাবি

Google Alert – পার্বত্য চট্টগ্রাম

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।


সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের শঙ্কার প্রতিনিধি হিসেবে ভূমিকা রাখবে হেফাজতে ইসলাম। এ বিষয়ে হেফাজতের মতামত সরকারকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।


“দেশের সকল অংশীজন, বিশেষ করে বড় রাজনৈতিক দলের সাথে খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি এবং ভূমিকা পরিষ্কার করতে হবে। সবার সম্মিলিত সিদ্ধান্তকে হেফাজতে ইসলাম স্বাগত জানাবে।


“দেশ এবং ইসলামের প্রশ্নে আমরা কারো চেহারার দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারব না। দেশ ও ইসলামের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিতে হলে হেফাজতে ইসলাম কখনোই পিছপা হবে না।”


সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন খোলা নিয়ে হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।


ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় খোলার বিষয়ে দিন কয়েক আগে সংস্থাটির সঙ্গে সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) সই করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর আগে থেকেই এ উদ্যোগের বিরোধিতা করে আসছে হেফাজতে ইসলাম।


সংগঠনটির মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, “হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের বিরোধী। এটা ইহুদি-নাসারাদের সংগঠন।


“এই সংগঠন মুসলিমদের স্বার্থে কাজ করবে না, তাদের স্বার্থে কাজ করবে। এ কারণে হেফাজত এমন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করার বিরোধী।”


আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের বিষয়ে বাকিদের মত বিএনপিও উদ্বিগ্ন। অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা ছাড়া, মানুষের সঙ্গে কোনো ধরনের সংলাপ, মতামত ছাড়া এই চুক্তি করেছে- যা ন্যায়সঙ্গত হয়নি।


“নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো মৌলিক অধিকার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। বৃহৎ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক আলোচনা দরকার।”


বিএনপির এ নেতা বলেন, “বাংলাদেশের সামাজিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় সংস্কৃতি যেসব বিষয়ে অনুমোদন করে না- সেটা বিবেচনায় রাখা উচিত।


“মানবাধিকার বাস্তবায়ন করার জন্য এখানে যদি এলজিবিটিকিউকে নিয়ে আসা হয়, সেটা কি আমাদের সমাজ ব্যবস্থা, আমাদের ধর্মীয় কালচার মেনে নেবে? আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে সার্বভৌমত্বের অনেক ইস্যু আছে, সেখানে মানবাধিকারের দোহাই দিয়ে রাষ্ট্রের অখণ্ডতা হুমকির মুখে ফেলা হয় কি না, সেটাও চিন্তা করতে হবে।”


গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, “বর্তমান সরকারের বেশিরভাগ লোক ‘প্রো-ইউএস’, তবে সরকার দুর্বল হওয়ায় বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রপাগান্ডার জবাব দিতে ভয় পাচ্ছে। এ কারণেই ঢাকায় জাতিসংঘের কার্যালয় স্থাপনের অনুমতি দিতে চাচ্ছে।


“কিন্তু এই সরকার কারা চালাচ্ছে? তাদের বেশিরভাগই ‘প্রো ইউএস’ লোকজন। ড. ইউনূস আন্তর্জাতিকভাবে একজন লিবারেল ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তার সরকারের আমলে মানবাধিকার লঙ্ঘন হবে না- এটা তারা সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারতেন। তা না করে তারা বিপদ ডেকে আনছেন। এটার ইতিবাচকের চেয়ে আমার কাছে নেতিবাচক দিক বেশি মনে হচ্ছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন।”


গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামের নূর মোহাম্মদ, আব্দুর রউফ ইউসুফি, আমার বাংলাদেশ পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, মাহফুজুল হক, সালাহ উদ্দিন নানুপুরি।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *