জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে মূলবার্তায় যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

Google Alert – প্রধান উপদেষ্টা

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এসময় তিনি ন্যায়বিচার, সংস্কার ও নতুন আন্তর্জাতিক সংহতির আহ্বান জানান।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দেওয়া এই ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ সনদের ৮০ বছর পূর্তিতে সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও সব সদস্য রাষ্ট্রকে অভিনন্দন জানান। তিনি জাতিসংঘের ঐতিহাসিক সাফল্যের প্রশংসা করেন এবং বহুপাক্ষিকতা জোরদার ও উন্নয়নশীল দেশের কণ্ঠস্বরকে গুরুত্ব দিতে জাতিসংঘে সংস্কারের জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব জাতিসংঘের দেওয়া ভাষণের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানান।

অধ্যাপক ইউনূস ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের পরিবর্তনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও সংস্কার অনুপ্রাণিত করতে তরুণরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, যা এখন ‌‘জুলাই ঘোষণা’র ভিত্তিতে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাচ্ছে।

তিনি প্রতিষ্ঠানগত জবাবদিহি, অবাধ নির্বাচনের প্রস্তুতি, স্বচ্ছতা ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কারের অগ্রগতির কথাও উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশটি আন্তর্জাতিক কনভেনশনে যোগ দিয়েছে, জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তরের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়িয়েছে এবং অতীতের অপব্যবহার রোধে পদক্ষেপ নিচ্ছে।

প্রবাসী শ্রমিকদের অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তারা দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন এবং তাদের অবদান স্বাগতিক দেশেও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের দিকে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং রোহিঙ্গাদের সহায়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি ইসরায়েলি গণহত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে গাজায় সহিংসতা বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধান উপদেষ্টা নারীর ক্ষমতায়ন, জলবায়ু উদ্যোগ, তরুণদের উদ্ভাবন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ নতুন প্রযুক্তির ন্যায্য বণ্টন, পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ও অপ্রসারণ, আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার সংস্কার, উন্নয়নশীল দেশ থেকে অর্থ পাচার রোধ, প্রাকৃতিক সম্পদের ন্যায্য বণ্টন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর পুনরুজ্জীবন এবং বহুপাক্ষিকতার সংস্কারের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার তুলে ধরেন। তিনি তার ‘থ্রি-জিরো ওয়ার্ল্ড’ বা তিন শূন্যের বিশ্ব—শূন্য কার্বন, দারিদ্র্য দূরীকরণে শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ এবং শূন্য বেকারত্ব-দর্শন উপস্থাপন করেন।

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের সময় সরকারের উপদেষ্টারা এবং বিভিন্ন প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভাকক্ষে উপস্থিত ছিলেন।

এমইউ/এসআর

 

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *