জুলাইয়ে ছাত্রদলের এক অকুতোভয় যোদ্ধার গল্প

চ্যানেল আই অনলাইন

জুলাইয়ের উত্তাল আন্দোলন। রাজপথে যখন ছাত্র-জনতার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল র‌্যাব, পুলিশ আর আওয়ামী লীগের সশস্ত্র নেতাকর্মীরা, ঠিক তখনই জীবনের ঝুঁকি স্বত্ত্বেও ছাত্রজনতাকে সাথে নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহিন রেজা শিশির।

জানা যায়, মোহাম্মদপুরের রাজপথে সহ-যোদ্ধাদের সাথে সম্মুখ সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় এই নেতার উপর আক্রমণ চালিয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের অস্ত্রধারী বাহিনী। কিন্তু পিছু হটেননি শাহিন রেজা শিশির। তার বজ্রকণ্ঠের স্লোগানে, তার প্রতিরোধের বজ্রআঘাতে— জুলাই-আগস্টের সেই দিনগুলোতে কেঁপে উঠেছিল ঢাকার অন্যতম হটস্পট মোহাম্মদপুর।

শাহিন রেজা শিশির বলেন, মোহাম্মদপুর ছিল গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান হটস্পট। সেসময় মুহূর্মুহু গুলির মুখেও ছাত্রজনতাসহ আমরা পিছু হটিনি। বরং আমরাই প্রথমে ছাত্রজনতাকে সাথে নিয়ে গণভবনের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলাম। এরপর থেকেই আতঙ্কিত হয়ে গণভবন এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছিল।

জুলাইয়ের স্মতিচারণ করে তিনি বলেন, আমার সাথে থাকা বেশ কয়েকজন অভ্যুত্থানে শহীদ হয়েছেন। দু’পাশ থেকে দু’জন গুলিতে লুটিয়ে পড়েছেন। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি বেঁচে গেছি। সেসময় নিরস্ত্র জনতার উপর বেপরোয়া গুলি করেছিল আওয়ামী লীগের সশস্ত্র নেতাকর্মীরা। এক দুঃসহ সময় পার করে শেষ পর্যন্ত আমাদের ছাত্রজনতার বিজয় হয়েছে।

শিশির জানান, শুধু জুলাই অভ্যুত্থান নয়, দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমাদের সংগ্রাম ছিল বহু বছরের। তবে শেষ পর্যন্ত ছাত্রজনতা রাস্তায় নেমে আসায় গণঅভ্যুত্থান পরিপূর্ণতা পেয়েছে। স্বৈরাচার পালিয়েছে। এ অভ্যুত্থানের মূল স্পিরিট আমাদের ধরে রাখতে হবে। গণতন্ত্রের দিকে আমরা সম্মিলিতভাবে এগিয়ে গেলে, জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর হলে এ অভ্যুত্থান পরিপূর্ণ হবে।

উল্লেখ্য, জুলাই অভ্যুত্থানের আগে ২৮ অক্টোবরে বিএনপির সমাবেশে যখন আওয়ামী লীগ ও পুলিশ হামলা করেছিল বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর, ঠিক তখনই দুর্দান্ত সাহসের কাণ্ডারী হয়ে ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিশির। সেসময় পুলিশের উপর হামলার মামলায় ডিবি তাকে হন্যে হয়ে খুঁজেছিল ঢাকাসহ সমগ্র বাংলাদেশে।

তিনি বলেন, কী এক দুঃসহ সময় গিয়েছে আমাদের। ডিবি পুলিশ আমাকে এমন কোন দিন নাই, যেসময় খুঁজে বেড়ায়নি। ডিবি হারুন নিজে এ বিষয়টি তদারকি করত। আমার অপরাধ ছিল দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশনায় গণতন্ত্রের পক্ষে কার্যক্রম করা। দিনের পর দিন পালিয়ে থেকেছি। কষ্ট করেছি। তবে এখন স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ায় সেসব কষ্ট দূর হয়ে গেছে। জনগণ নির্বিঘ্নে কথা বলতে পারছে দেখে সেসব এখন আর কোন কষ্ট মনে হয় না।

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মূল চেতনাকে আমাদের ধারণ করতে হবে, জনগণের দুয়ারে গিয়ে জনগণের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে হবে, এর কোন বিকল্প নেই’, বলেন ছাত্রদল নেতা শাহিন রেজা শিশির।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *