Google Alert – পার্বত্য চট্টগ্রাম
জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান চলাকালে আজকের দিন সকাল থেকেই আন্দোলনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছিল পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিতেও।
এক দফা দাবির আন্দোলনকে সফল করতে জেলাজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। রাঙ্গামাটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুল আহাদ ও মো. শরীফুল ইসলামের নেতৃত্বে এবং রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাসহ শহরে বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিবাদ সভা ও মিছিল করেন।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ঠেকাতে মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির কারণে জেলা শহরে পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে উঠে। দুই সংগঠনের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আব্দুল আহাদ বাসসকে জানান, মূলত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখে রাঙ্গামাটিতে বিভিন্ন পয়েন্টে আমরা রাঙ্গামাটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী ও রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা মিলে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাসহ শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করি।
জুলাই মাসের শেষের দিক থেকে রাঙ্গামাটিতে আন্দোলনের তীব্রতা শুরু হয়। আগস্টের ৪ তারিখ সকাল থেকে রাঙ্গামাটি শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এক দফা বাস্তবায়নের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে ব্যাপক কর্মসূচি পালন করে।
এ সময় শহরে যান চলাচল বন্ধ থাকে। চব্বিশের ৪ আগস্ট সকাল থেকে শহরের কলেজগেট, ভেদভেদী, কোর্ট বিল্ডিংসহ বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার উপর ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আমাদের উপর হামলা করে।
তবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা একটানা ৪-৫ আগস্ট মাঠে থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। ফলে আন্দোলনের তীব্রতা জেলা শহর থেকে বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নের ছড়িয়ে পড়ে।
আব্দুল আহাদ বাসসকে আরো জানান, ৪ আগস্ট রাঙ্গামাটি ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থানরত রাঙ্গামাটির শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুরুতর আহত হন। চট্টগ্রামে আন্দোলনে অংশ নিয়ে লংগদু উপজেলার এক শিক্ষার্থী চোখ হারান, পায়ে গুলিবিদ্ধ হন মুজাহিদুল ইসলাম সাজিদ নামের আরেক শিক্ষার্থী।
আহাদ বলেন, রাঙ্গামাটিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মো. শরীফুল ইসলাম শাকিল, মো. রাকিব হাসান, মো. বাহাদুর শাহ, মো. শাহাজাহান, সাদিয়া ইসলাম, আফিয়া আকতার ও আছিয়াসহ বেশ কয়েকজন ছাত্র নেতৃবৃন্দ রাঙ্গামাটিতে আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তবে পার্বত্য এলাকা রাঙ্গামাটিতে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থানের কারণে হতাহতের কোনো বড় ঘটনা ঘটেনি।
মূলত ১১ জুলাই থেকে রাঙ্গামাটিতে আন্দোলনে প্রথম মাঠে নামেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা। এরপর রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ ও কাপ্তাই উপজেলার সুইডেন পলিটেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।
তবে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা এখন যেন কোনোভাবেই ভেঙে না পড়েন সেজন্য সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক জেলা প্রশাসন সবসময় জুলাই যোদ্ধাদের পাশে রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ মারুফ।
তিনি বাসসকে বলেন, ইতোমধ্যে জুলাই আন্দোলনে আহতদের তালিকা করে সরকারি বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা হয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।