RisingBD – Home
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঝালডাঙ্গা বিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা। এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উৎসবের আমেজ তৈরি হয়।
প্রতিযোগিতা দেখতে সকাল থেকেই বিলের দুই পাড়ে জড়ো হতে থাকেন হাজারো মানুষ। নৌকাবাইচ এ এলাকার মানুষের তীব্র ভালোবাসার অপর নাম সেটা দর্শকের ঢল দেখলেই বোঝা যায়।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় পৃষ্ঠপোষকতা করেন মুজাহিদ বেগ।
বাইচের নৌকাগুলো বাদ্যের তালে তালে তীব্র গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল। মাঝিদের প্রাণপণ বৈঠা চালনার পারদর্শিতা ও নৌকার গতি মুগ্ধ করছিল দর্শকদের। তাদের উল্লাস ও করতালি আনন্দের মাত্রা কয়েকগুণ বাড়িয়ে তোলে।
নৌকা বাইচকে আরো উপভোগ্য করে তুলতে বিলের পাশে আয়োজন করা হয়েছিল গ্রামীণ মেলার। সেখানে বিভিন্ন ধরনের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন বিক্রেতারা। এই মেলায় স্থানীয় কারুশিল্প, খাবার ও খেলনাসহ নানা জিনিসপত্র পাওয়া যাচ্ছিল। দর্শনার্থীরা নৌকা বাইচ দেখার পর মেলা উপভোগ করেন।
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে রেফ্রিজারেটর ও টেলিভিশন তুলে দেওয়া হয়। পুরো আয়োজন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও তৎপর ছিলেন।
ফরিদপুর সদর থেকে আসা কলেজ শিক্ষার্থী লামীম ইসলাম এই আয়োজন দেখে ভীষণ আনন্দিত। তিনি বলেন, “এত মানুষের উৎসাহ আর নৌকার দৌড়ের উত্তেজনা সত্যিই অসাধারণ। এমন আয়োজন আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যকে জীবন্ত করে তুলছে। প্রতি বছর এখানে আসতে চাই।”
স্থানীয় বাসিন্দা এবং গৃহবধূ সামিরা খাতুন বৃষ্টি জানান, বিয়ের পর এটাই তার প্রথম নৌকা বাইচ দেখা। তিনি বলেন, “এত সুন্দর পরিবেশ, মানুষের উৎসাহ আর মেলার আমেজে মন ভরে গেছে। এমন আয়োজন আমাদের গ্রামের মানুষের আনন্দকে আরো বাড়িয়ে দেয়।”
প্রতিযোগিতার পৃষ্ঠপোষক মুজাহিদ বেগ বলেন, “নৌকা বাইচ আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির একটি অমূল্য সম্পদ। এই আয়োজন কেবল বিনোদনই নয়, আমাদের ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার একটি মাধ্যম। আমরা চাই, প্রতি বছর এই উৎসব আরো বড় পরিসরে হোক, যাতে নতুন প্রজন্ম আমাদের এই সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম হতে পারে।”