দেশ রূপান্তর
পাহাড় আর মেঘ মিতালী চোখে পড়ে নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় পাঁচগাও পাহাড়ে। সবুজে আচ্ছাদিত ছোট বড় পাহাড় আর উপরে মেঘালয়ের পাহাড় চোখের তৃষ্ণা মেটায় পর্যটকদের। এখানকার চন্দ্রডিঙ্গা, পাহাড়ি ঝর্ণা ছড়া অন্যতম দর্শনীয় স্থান।
তবে শঙ্কার কথা হচ্ছে ছোট বড় সব পাহাড়ের পড়েছে একেবারে সীমান্তের শূন্য রেখায়। তার ওপর পাহাড়ি ঝর্ণা ছড়ায় গাঁ ভেজাতে অনেক পর্যটকই ভুল করে ভারতের সীমান্তে চলে যাওয়ারও ঘটনা ঘটছে অহরহর।
তাই ঘুরতে আসা পর্যটকদের ঝুঁকি এড়াতে গত কয়েক মাস থেকে সীমান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) সদস্যরা। চেকপোস্ট বসিয়ে চলছে পর্যটকদের সচেতনের চেষ্টা। কিন্তু তাতেও খুব একটা লাভ হচ্ছে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সুযোগ-সুবিধা আর নিরাপত্তা সব দিক দিয়েই পিছিয়ে নেত্রকোনার সবকটি পর্যটক স্পট। যেমন পাঁচগাওয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে চন্দ্রডিঙ্গা রিসোর্ট নামে একটি স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু হলেও তা আর শেষ হয়নি। দীর্ঘ এক বছর বেশি সময় ধরে কাজ বন্ধ হয়ে আছে।
এছাড়া সোমেশ্বরী নদী, পাতলাবন, মহাদেব নদ, লেংঙ্গড়া, গণেশ্বরী নদীসহ অসংখ্য পর্যটন স্পট রয়েছে সীমান্তবর্তী দুই উপজেলায়। এর মধ্যে জেলার অন্যতম জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান সাদামাটির পাহাড়। জিআই সনদ প্রাপ্ত স্থানটিকে ঘিরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান পর্যটকরা। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা আর থাকা খাওয়ার পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না থাকায় তাও গড়ে ওঠেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা মোজাম্মেল হক জানান, চন্দ্রডিঙ্গাসহ পাঁচগাওয়ের পাহাড় দেখতে প্রতিদিনই অনেক পর্যটক ঘুরতে আসেন। আমরা স্থানীয়রা পর্যটকদের সার্বিক সহযোগিতা করে থাকি যেন তারা সকল কিছু ঘুরে দেখতে পারেন এবং ভুল করে যেন ভারতীয় সীমান্তে চলে না যায়। তবে পাঁচগাও এলাকা যে ঝর্ণাগুলো পড়েছে সবগুলোই একেবারে সীমান্ত শূন্য রেখায়। তাই অনেক পর্যটক ওইগুলো দেখতে ভারতীয় সীমান্ত এলাকার কাছাকাছি চলে যায়। আমরা তাদের সতর্ক করছি এবং সীমান্তে না যেতেও পরামর্শ দিয়ে থাকি। তবুও অনেকেই চলে যায়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান জানান, আমি যোগদানের পর থেকেই পর্যটনকে কিভাবে বিকশিত করা যায় সে ব্যাপারে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। বিশেষ করে আমাদের সীমান্তবর্তী দুটি উপজেলা দুর্গাপুর এবং কলমাকান্দা এ এলাকার পর্যটন সম্ভাবনা অত্যন্ত প্রবল।
তিনি জানান,পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য এবং পর্যটকদের সুবিধার্থে দুই উপজেলায় যতগুলো রেস্ট হাউস হয়েছে সবগুলো সংস্কার এবং পর্যটকদের বসবাসের উপযোগী করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর যে রেস্ট হাউস বন্ধ রয়েছে সেগুলো দ্রুত চালু করা হবে। তবে পাঁচগাও এলাকায় অনেক পর্যটক ভুল করে জিরো পয়েন্টে চলে যায়। ইতোমধ্যে বিজিবির পক্ষ থেকে একটি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সতর্কমূলক সাইনবোর্ডসহ পর্যটকদের নিরাপত্তায় আরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।