ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই, খুলে দেওয়া হয়েছে ৪৪টি স্লুইসগেট

Google Alert – পার্বত্য অঞ্চল

উজানের ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে নীলফামারীর ডিমলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা থেকে বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ৬টা পর্যন্ত এই পরিস্থিতি বিরাজ করে। তবে আজ সকাল ৯টায় তা কমে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে ব্যারাজের বিপদসীমা ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। ডালিয়া ডিভিশনের গেজ পাঠক (পানি পরিমাপক) নূরুল ইসলাম পানি পরিস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এদিকে, তিস্তার বন্যায় জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখাড়বাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ী ও জলঢাকার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় চর গ্রামের ৮ হাজার পরিবারে বন্যার পানি প্রবেশের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

এ ছাড়াও ব্যারাজের পূর্ব দিকে (ভাটি অঞ্চল) লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা, কালিগঞ্জ উপজেলার নদীবেষ্টিত চর ও চরের গ্রামগুলো প্লাবিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বাসিন্দারা। এলাকার বানভাসি লোকজন বন্যা আতঙ্কে রয়েছে।

উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, চড় গ্রামের লোকজন আতঙ্কে দিনযাপন করছেন। কখন যে বাড়িঘর সরাতে হবে ঠিক নেই। নিম্নাঞ্চল ও বিস্তীর্ণ এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। যেকোনও সময় বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করতে পারে। উজানের পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পেলে সন্ধ্যা নাগাদ ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।

এদিকে, পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সুবাস চন্দ্র বলেন, ‘ঝাড়সিংশ্বরসহ অন্যান্য চর গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। এ পর্যন্ত ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’

ডালিয়া ডিভিশনের উপসহকারী প্রকৌশলী (পানি শাখা) তহিদুল ইসলাম বলেন, ‘উজানের ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির ফলে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, বন্যা হতে পারে। ইতোমধ্যেই নিম্নাঞ্চলগুলো তলিয়ে গেছে।’

ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, উজানের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীতে বন্যা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সকাল ৯টার দিকে বিপদসীমার (৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। উজানের ঢল বন্ধ হলে সন্ধ্যা নাগাদ তিস্তার পানি আরও কমার আশা করা হচ্ছে। বন্যার পানি সামাল দিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। এদিকে ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে রাখা হয়েছে।’

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান বলেন, ‘উজানের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি আজ সকাল ৬টায় (৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার) বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করেছে। সকাল ৯টায় তা কমে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বন্যাকবলিত এলাকায় নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *