jagonews24.com | rss Feed
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ব্রহ্মপুত্র নদের নৌকাডুবিতে এক কিশোরী নিহত ও দুই শিশু নিখোঁজ হয়েছে। নিজের ভাইপোকে বাঁচাতে গিয়ে মারা যায় ওই কিশোরী।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালের দিকে উপজেলার চর আলগী গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত কিশোরী পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের চর আলগী গ্রামের মাইনুদ্দিনের মেয়ে শাপলা (১৫)। সে বিরইন নদীপাড় দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী।
এখনো নিখোঁজ রয়েছে নিহত শাপলার বড় ভাইয়ের ছেলে হাবিব মিয়ার ছেলে আবির (৭) এবং একই এলাকার মুমতাজ উদ্দিনের ছেলে জুবায়ের (৬)। তারাও একই মাদরাসায় পড়াশোনা করতো।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে প্রতিদিনের মতোই স্কুলগামী ৯ শিশু নৌকায় করে ব্রহ্মপুত্র নদ পার হচ্ছিল। আচমকা স্রোতে ভারসাম্য হারিয়ে উল্টে যায় নৌকাটি। এতে একের পর এক শিশু পানিতে পড়ে যায়।
এসময় নৌকায় থাকা ১৫ বছর বয়সী শাপলা প্রাণপণে সাঁতরে নিজেকে রক্ষা করছিল। হঠাৎ তার সাত বছর বয়সী ভাইপো আবির আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠে—‘ফুপু, আমাকে ধরো! আমি ডুবে যাচ্ছি!’
মুহূর্তকাল দেরি করেনি শাপলা। আত্মরক্ষার চিন্তা ভুলে ছুটে যায় আবিরের দিকে। কিন্তু ব্রহ্মপুত্রের প্রবল স্রোত দুজনকেই তলিয়ে নেয় অন্ধকারে।
দীর্ঘ তল্লাশির পর স্থানীয় জেলেরা শাপলার নিথর দেহ উদ্ধার করেন। কিন্তু ছোট্ট আবির ও তার সহপাঠী ছয় বছর বয়সী জুবায়েদ এখনো নিখোঁজ। তাদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন ফায়ার সার্ভিস, ডুবুরিদল ও স্থানীয় জেলেরা।
চর আলগী গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজ আশরাফ শান্ত বলেন, ‘প্রতিবছরই কেউ না কেউ নদীর স্রোতে হারিয়ে যান। কিন্তু স্থায়ী কোনো সমাধান পাই না। আর কত প্রাণ গেলে জাগবে প্রশাসন?’
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। নিখোঁজ দুই শিশুর সন্ধানে স্থানীয় জেলে ও ডুবুরিদলের সদস্যরা অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুল্লাহ খালিদ বলেন, ডুবুরিদল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। যতক্ষণ না নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করা যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত অভিযান চলবে।
এসকে রাসেল/এসআর/এএসএম