Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment
সিলেট: কোম্পানীগঞ্জে লুট হয়েছে কেবল সাদাপাথর নয়, লুট হয়েছে বিশ্বাস, দায়িত্ব ও রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা। দিনভর সরকারি কক্ষে বসে থাকা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাই পাথরচোরদের রক্ষাকবচ ছিলেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রাথমিক এক তদন্তে এ সব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রশাসনের ছত্রচ্ছায়ায় লুটের উৎসব
দুদকের উপপরিচালক রাফি মো. নাজমুস সাদাতের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত দল গত ১৩ আগস্ট কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর উত্তোলন এলাকা পরিদর্শন করে। এরপর ১৬ আগস্ট জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— সেখানে বৈধ কোনো ইজারা না থাকা সত্ত্বেও মাসের পর মাস অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন চলেছে, যা একপ্রকার প্রশাসনের কারণেই সম্ভব হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাথর লুটের সঙ্গে কেউ কমিশন নিয়েছেন, কেউ আবার দায়িত্বে থেকেও নিশ্চুপ থেকেছেন। ফলে লুটপাট হয়েছে চোখের সামনেই। এ সময় কারও কোনো বাধা আসেনি।
কে কীভাবে জড়িত
- বিভাগীয় কমিশনার
দুদকের প্রতিবেদনে বিভাগীয় কমিশনারকে দায়ী করে বলা হয়, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী ৮ জুলাই তার কার্যালয়ে পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, পরিবহণ শ্রমিক ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘সারা দেশে পাথর উত্তোলন করা গেলে সিলেটে যাবে না কেন?’ এর সঙ্গে মানুষের জীবন ও জীবিকা জড়িত। তার এ বক্তব্যটি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারিত হলে সাদা পাথর লুটপাটে ব্যাপক উৎসাহ জুগিয়েছে। সরকারিভাবে পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ থাকলেও তার এ ধরনের বক্তব্যের মাধ্যমে পাথর লুটপাটকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে তিনি রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, পরিবহণ শ্রমিক ও রাজনৈতিক নেতাদের অবৈধ স্বার্থরক্ষায় ভূমিকা রেখেছেন।
- জেলা প্রশাসক
জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদকে দায়ী করে দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিলেট জেলায় অবস্থিত সাদাপাথর, জাফলং, বিছনাকান্দি ও উৎমাছড়া পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃত। এ স্থান থেকে পাথর, বালু ও অন্যান্য খনিজসম্পদ উত্তোলন সরকারিভাবে নিষিদ্ধ। সরকারি বিধি অনুযায়ী বিদ্যমান পর্যটন স্পটগুলোর নান্দনিক সৌন্দর্য বজায় রাখাসহ পরিবেশ সংরক্ষণে যথাযথ উদ্যোগ বা কার্যক্রম গ্রহণ করা জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব। পাথর লুটপাট ঠেকাতে সিলেটে কর্মরত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের সদিচ্ছার অভাব, অবহেলা, ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা স্পষ্ট। তিনি তার অধীন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনকে সাদাপাথর পর্যটন স্পট রক্ষায় সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। সাদাপাথর পর্যটন স্পটের বর্তমান অবস্থা একদিনে হয়নি। এটি বিগত ৭-৮ মাস ধরে চললেও জেলা প্রশাসক ও তার অধীন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতে চরম ব্যর্থ হয়েছেন।
- পুলিশ সুপার
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ২৭ এপ্রিল অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও পরিবহণ বন্ধের জন্য পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিলেও সিলেট জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান আলোচ্য সাদাপাথর লুটপাটের বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। উল্টো তিনি কোম্পানিগঞ্জ থানার ওসি উজায়েরকে সিলেট রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নির্বাচিত করে পুরুস্কার দিয়েছেন।
- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও)
প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থেকে বর্তমানে কর্মরত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চারজন ইউএনওকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাথরকাণ্ডের জন্য দায়ী করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত এক বছরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বিশেষ করে সাদাপাথর পর্যটন এলাকায় দৃশ্যমানভাবে দিনে দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের গোচরেই ওই পাথর লুটপাট হয়েছে। ওই সময়ে কোম্পানীগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে আজিজুন্নাহার, মোহাম্মদ আবুল হাছনাত, ঊর্মি রায় ও আবিদা সুলতানা কর্মরত ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা নামমাত্র ও লোক দেখানো কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া পাথর লুট বন্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
- অফিসার ইনচার্জ (ওসি)
কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ উজায়ের আল মাহমুদ আদনান সম্পর্কে দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনিসহ সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সদস্যরা অবৈধ পাথর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের কমিশন গ্রহণ করে সাদাপাথর লুটপাটে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথরপ্রতি ট্রাকে প্রায় ৫০০ ঘনফুট করে লোড করা হয়। পরিবহণ ভাড়া ছাড়া প্রতি ট্রাকের পাথরের দাম ধরা হয় ৯১ হাজার টাকা। এর মধ্যে প্রতি ট্রাক থেকে ১০ হাজার টাকা পুলিশ ও প্রশাসনের জন্য আলাদা করা হয়। বাকি ৮১ হাজার টাকা অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারীরা নিজেদের মাঝে বণ্টন করে নেয়। এছাড়া প্রতি ট্রাক থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে পুলিশের জন্য পাঁচ হাজার টাকা এবং উপজেলা প্রশাসনের জন্য পাঁচ হাজার টাকা বণ্টন হতো। এছাড়াও অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত প্রতিটি বারকি নৌকা হতে এক হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। যার মধ্যে পুলিশ বিভাগ পায় ৫০০ টাকা এবং প্রশাসন (ডিসি ও ইউএনও) পায় ৫০০ টাকা। পুলিশ নির্দিষ্ট সোর্সের মাধ্যমে প্রত্যেক ট্রাক ও নৌকা থেকে এসব চাঁদা বা অবৈধ অর্থ সংগ্রহ করে।
- লুটের সময় বিজিবি কী করছিল
প্রতিবেদনে সাদাপাথর লুটে বর্ডার গার্ড বিজিবিকেও দায়ী করা হয়েছে। এতে বলা হয়, সাদা পাথর এলাকায় তিনটি বিজিবি পোস্ট রয়েছে। এগুলো হতে লুটের ঘটনাস্থলের দূরত্ব ৫০০ মিটার থেকেও কম। এত কম দূরত্ব থাকা সত্ত্বেও কোম্পানি কমান্ডার ইকবাল হোসেনসহ বিজিবি সদস্যদের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ ও নিষ্ক্রিদ্ধয়তার কারণে অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীরা খুব সহজেই পাথর লুটপাট করতে পেরেছে। বিজিবি সদস্যরা প্রতি নৌকা ৫০০ টাকার বিনিময়ে এলাকায় প্রবেশের অনুমতি দেয় এবং পাথর উত্তোলনের সময় বাধা দেয়নি।
- বিএনপির যে ২০ নেতাকর্মী জড়িত
সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিন, সদস্য হাজি কামাল (পাথর ব্যবসায়ী), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান লাল মিয়া (পাথর ব্যবসায়ী), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে দুদু (পাথর ব্যবসায়ী), সিলেট জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক রুবেল আহমেদ বাহার (পাথর ব্যবসায়ী), সহসাংগঠনিক সম্পাদক মুসতাকিন আহমদ ফরহাদ (পাথর ব্যবসায়ী), কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মো. দুলাল মিয়া ওরফে দুলা, যুগ্ম আহ্বায়ক রজন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদল নেতা জসিম উদ্দিন, সাজন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কর্মী জাকির হোসেন, সদস্য মোজাফর আলী, মানিক মিয়া, সিলেটি জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মকসুদ আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ওরফে শাহপরান, কোষাধ্যক্ষ (বহিষ্কৃত) শাহ আলম ওরফে স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম এবং পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ বক্স।
- জড়িত আওয়ামী লীগেরও সাত নেতাকর্মী
কার্যক্রম নিষিদ্ধ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কর্মী বিলাল মিয়া (পাথর ব্যবসায়ী), শাহাবুদ্দিন (পাথর ব্যবসায়ী), গিয়াস উদ্দিন (পাথর ব্যবসায়ী), কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল ওদুদ আলফু, কর্মী মনির মিয়া, হাবিল মিয়া ও সাইদুর রহমান।
- জামায়াতের দুই নেতাও পাথরকাণ্ডের সঙ্গী
সিলেট মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. ফকরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন।
- রয়েছেন এনসিপির দুই নেতা
সিলেট জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন ও মহানগর প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাদেক মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম চৌধুরী।
- এদের বাইরেও আছেন ১১ জন
অনুসন্ধানে সাদাপাথর চুরির সঙ্গে আরও যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে তারা হলেন– কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জের আনর আলী, উসমান খাঁ, ইকবাল হোসেন আরিফ, দেলোয়ার হোসেন জীবন, আরজান মিয়া, মো. জাকির, আলী আকবর, আলী আব্বাস, মো. জুয়েল, আলমগীর আলম ও মুকাররিম আহমেদ।
দুদকের বক্তব্য
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত সিলেট জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রাফি মো. নাজমুস সাদাৎ বলেন, ‘সাদাপাথর লুটের পর এনফোর্সমেন্ট টিম নিয়ে আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করি। সেসময় আমরা বেশ তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করি। বেশকিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এর তালিকাসহ আমরা একটি প্রতিবেদন সদর দফতরে পাঠিয়েছি। অনুমতি পেলে প্রত্যেকের বিষয়ে আলাদা তদন্ত করে বিস্তারিত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’
সামগ্রিকভাবে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও দুর্বলতাকেই লুটের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুদক। এমনকি খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)-ও তাদের আইনগত এখতিয়ার থাকা সত্ত্বেও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি, যা দায়িত্বহীনতা ও অবহেলারই স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি। দুদক সূত্রে জানা গেছে, এই পাঁচ কর্মকর্তাসহ জড়িত সবার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগও এ ঘটনায় একটি পাঁচ সদস্যের উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি কেবল কোম্পানীগঞ্জ নয়, পুরো দেশের প্রশাসনিক দুর্বলতা ও জবাবদিহির অভাবের একনগ্ন চিত্র। রাষ্ট্রীয় সম্পদের এমন লুটপাটে যারা যুক্ত, তারা যদি শাস্তির বাইরে থাকে— তবে বার্তা যাবে, ‘পদে থাকলে দায়মুক্তি মেলে।’ আর তাই প্রশ্ন একটাই—যাদের দায়িত্ব ছিল প্রকৃতিকে রক্ষা করা, তারাই যখন ভাগাভাগির খেলায় মেতে ওঠে, তখন প্রকৃতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের নিরাপত্তা কে দেবে?
বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির পৃথক সংবাদ সম্মেলন
এদিকে সিলেটের সাদাপাথর লুটের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে ৪২ জনের তালিকায় বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির নেতাদের নাম আসায় বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে সিলেটে দলগুলো পৃথক সংবাদ সম্মেলন করেছে।
জামায়াতের সংবাদ সম্মেলন: ‘দুদককে প্রমাণ করতে হবে, না হয় ক্ষমা চাইতে হবে’
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর মহানগর আমির ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘ভোলাগঞ্জের পাথর লুটের ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো নেতাকর্মী বা সমর্থকের ন্যূনতম সম্পর্ক নেই। তিনি অভিযোগ করেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের নেতাদের নাম এই ঘটনার সঙ্গে জড়ানো হয়েছে।’
দুদকের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তালিকায় তার এবং জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ কাল্পনিক বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, ‘সিলেট জামায়াতের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। তিনি দুদককে তাদের এই প্রতিবেদন প্রমাণ করতে বলেন, অন্যথায় তাদের ক্ষমা চাইতে হবে।’
বিএনপির সংবাদ সম্মেলন: ‘চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি’
বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেলে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, কোনো প্রকার তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই তাদের নাম পাথর লুটেরাদের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। এতে তারা রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন।
কয়েস লোদী বলেন, ‘আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, কোনোভাবেই এই অপকর্মের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। যারা এই মিথ্যা তথ্যটি পরিবেশন করেছেন, তাদের এটি প্রমাণ করতে হবে অথবা নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।’
তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছর ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে এই এলাকায় লুটপাট চলছে। তারা এই ধরনের ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক সংবাদ প্রকাশের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
এনসিপির সংবাদ সম্মেলন: ‘বিশ্বাসযোগ্য তথ্য নেই’
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার পক্ষ থেকেও এক সংবাদ সম্মেলনে এর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এতে জেলার প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন সাহান এবং মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাদেক মোহাম্মদ খায়রুল ইসলামের নাম আসায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে নাজিম উদ্দিন সাহান বলেন, ‘প্রকাশিত প্রতিবেদনে দুদকের কথিত রেফারেন্সের উল্লেখ থাকলেও, কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ, তদন্ত প্রতিবেদন কিংবা বিশ্বাসযোগ্য তথ্য নেই।’ তিনি এই ধরনের বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশের নিন্দা জানান।