Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment
ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভাসমান ও অবৈধ দোকান এবং ভবঘুরেদের উচ্ছেদ করাকে কেন্দ্র করে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে শোকজের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই শিক্ষার্থীরা দোকানিদের মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে উত্তেজনার পর ডাকসু নেতাদের দাবির মুখে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম।
এর আগে কিছুদিন ধরে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়ের ও সদস্য সর্বমিত্র চাকমা এবং প্রক্টরিয়াল টিম যৌথভাবে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবৈধ ও ভাসমান দোকান উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন।
শনিবার রাতে অভিযান পরিচালনার সময় কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করলে বামপন্থী সংগঠনের নেতারা এর প্রতিবাদ করেন। পরে তারা উচ্ছেদ হওয়া দোকানি ও ভাসমানদের মিছিলে সংহতি জানিয়ে অংশ নেন।
এ বিষয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের একাংশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা উচ্ছেদ হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে মিছিলে সংহতি জানিয়ে অংশ নিয়েছি। বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিতের আগে তাদের এভাবে উচ্ছেদ করা ঠিক নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে যারা আছেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে বা অন্য কোথাও দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। কিন্তু আজ তাদের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। তাদের জিনিসপত্র ভেঙে ফেলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় তো শিক্ষার্থীদের অন্তত মানবিকতা শেখাবে।’
এদিকে দোকানিদের মিছিলে শিক্ষার্থীরা অংশ নেওয়ায় ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়ের, সদস্য সর্বমিত্র চাকমা, সূর্যসেন হলের ভিপি আজিজুল হকসহ কয়েকজন এর প্রতিবাদ জানিয়ে প্রক্টর অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তারা কয়েকজন সহকারী প্রক্টরের সঙ্গে বৈঠকে বসেন এবং মিছিলকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ কয়েকটি দাবি জানান।
বৈঠকে সর্বমিত্র চাকমা প্রশাসনের কাছে রোববার (২৬ অক্টোবর) বেলা সকাল সাড়ে ১১ টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। একইসঙ্গে যেসব শিক্ষার্থী মিছিলে অংশ নিয়েছেন, তাদের ভিডিও ফুটেজ প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করবেন বলেও জানান তিনি। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীদের যেসব দোকান রয়েছে, সেগুলো সচল রাখতে একটি বৈধ লাইসেন্স ব্যবস্থা রাখার বিষয়েও মত দেন ডাকসু নেতারা।
বৈঠক শেষে সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যারা মিছিলে অংশ নিয়েছেন, তাদের শোকজ করা হবে, এটা নিশ্চিত। আমাদের আইনের মধ্যে থেকে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় কী না, এটা আমরা প্রক্টরের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে কোনো অবৈধ দোকান আমরা অ্যালাউ করছি না। ফলে যেখানে দোকান আছে, তা আমরা সরিয়ে দিচ্ছি। খুব চাপে পড়ে আমরা গত তিনদিন ধরে অভিযান শুরু করেছি। যদিও কিছু শিক্ষার্থী এটার বিরোধিতা করেছে। যারা বামপন্থী ব্লকের বলে আমরা জেনেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘৩০-৩৫ হাজার ছেলেমেয়ের দাবির বিপরীতে যদি পাঁচজন ছেলেমেয়ে বা সাবেক শিক্ষার্থীর দাবি ভিন্ন হয় তাহলে আমার এত হাজার শিক্ষার্থীর দিকে তাকিয়ে দোকান রাখার দাবি বাদ দিতে হচ্ছে।’
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এই ক্যাম্পাসে ছেলেমেয়েদের নিরাপত্তার স্বার্থে অবৈধ দোকান থাকবে না। মিছিলে যদি বর্তমান শিক্ষার্থী থাকে, তাহলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আর প্রক্টরের সঙ্গে সভা করে আগামীকাল তাদের শোকজ করব, এই সিদ্ধান্ত কনফার্ম।’
