নারীদের জন্য ১০০ সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচন দাবি

Google Alert – পার্বত্য চট্টগ্রাম

নারীর রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে ১০০ সংরক্ষিত আসনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের দাবি করেছে নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম নামে একটি সংগঠন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলো থেকে অন্তত ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নের বাধ্যবাধকতার বিষয়ে দাবি তোলেন তারা। রোববার (৩১ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ এসব দাবি তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত সব আন্দোলনে নারীর অবদান ছিল অসামান্য। কিন্তু সংসদে তাদের প্রতিনিধিত্ব এখনো প্রান্তিক পর্যায়ে রয়ে গেছে। বর্তমান ৫০ সংরক্ষিত আসন কার্যত নারীদের অর্থবহ ক্ষমতা দেয় না, কারণ সেগুলো সরাসরি ভোটে নয় বরং দলীয় অনুপাতে বণ্টিত হয়। এমন মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, গণতন্ত্র চর্চার নতুন যাত্রায় নারী নেতৃত্বের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব ছাড়া টেকসই উন্নয়ন ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ সম্ভব নয়।

ফোরামের নেতৃবৃন্দ জানান, ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে নারীদের সংরক্ষিত আসনে সরাসরি ভোটের ব্যবস্থা চালু ছিল। তাই ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে একই ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে না পারার কোনো কারণ নেই। তারা আরো বলেন, এই প্রক্রিয়ায় ৩০০ সাধারণ আসনের পাশাপাশি ১০০ সংরক্ষিত আসনের জন্য আলাদা ব্যালটে ভোটগ্রহণ করলে নির্বাচনী এলাকায় নতুন কোনো জটিলতা তৈরি হবে না।

এসময় নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরামের পক্ষ থেকে যে সাতটি মূল দাবি উত্থাপন করা হয়। সেগুলো হলো— দেশের মোট জনসংখ্যার অনুপাতে নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা; ২০২৬ সালের নির্বাচনে ১০০ সংরক্ষিত আসনে নারীদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত করা; প্রত্যেক রাজনৈতিক দলে অন্তত ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন বাধ্যতামূলক করা এবং ধাপে ধাপে তা ৫০ শতাংশে উন্নীত করা; সংসদ সদস্যদের কাজকে আইন প্রণয়ন ও সংসদীয় কার্যাবলীর মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে দুর্নীতি হ্রাস ও যোগ্য নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো; নারী প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ভার সামলাতে রাষ্ট্রীয় অনুদান চালু করা এবং নারীর নিরাপদ অংশগ্রহণ নিশ্চিতে শারীরিক ও অনলাইন সহিংসতা প্রতিরোধে নির্বাচন কমিশনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে নারী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনার পরিবেশ তৈরি।

সংবাদ সম্মেলনে প্রস্তাবিত কাঠামো তুলে ধরা হয়। সংগঠনটি ১০০ সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য একটি কাঠামোগত প্রস্তাবও দেয়। এর মধ্যে রয়েছে— ৬৪ জেলা থেকে ৬৪ আসন, ৮ বিভাগের সদর দপ্তরে অতিরিক্ত ১৬ আসন (প্রতিটিতে ২টি করে), সিটি করপোরেশনভিত্তিক আসন (ঢাকা দক্ষিণ-উত্তরে অতিরিক্ত আসন প্রস্তাব), পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩ জেলায় পৃথক ৩ আসন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য ৬ আসন, জাতীয় পর্যায়ে দলিত নারী প্রার্থীদের জন্য ৪ আসন এবং প্রতিবন্ধী নারী প্রার্থীদের জন্য ৩ আসন।

তাসলিমা আখতারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সামিনা লুৎফা, মাহিন সুলতান, সাদাফ সাজ সিদ্দিকী, সামিনা সিলতা, তাসনিম আক্তার, সিমা দাস, সিমা দত্ত, মোশরেফা মিশু, অমিতা দেব, সুষ্মিতা, সাদিয়া রহমান, পপি রানি সরকার, বিলকিস, ইফফাত আরা ও নাজিয়া আফরিন প্রমুখ।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *