নিরস্ত্রীকরণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হিজবুল্লাহর

Bangla Tribune

লেবাননের ইরানপন্থি শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর উপনেতা নাঈম কাসেম বলেছেন, তারা অস্ত্র পরিত্যাগ করবে না। এই দাবি শুধু ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষা করবে। বুধবার টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে তিনি এই মন্তব্য করেন। যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে লেবানন সরকার হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বিবেচনা করলেও হিজবুল্লাহর নেতৃত্ব তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করলো। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজরিা এ খবর জানিয়েছে।

ভাষণে কাসেম বলেন, যারা আমাদের অস্ত্র জমা দিতে বলে, তারা মূলত ইসরায়েলের কাছে তা আত্মসমর্পণ করতে বলে। আমরা ইসরায়েলের কাছে মাথা নত করব না।

হিজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার ফুয়াদ শুকরের ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়ার এক বছর পূর্তিতে এ ভাষণ দেন তিনি। 

গত বছর ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে হিজবুল্লাহর বেশিরভাগ নেতৃত্ব নিহত হয়েছেন, হাজারো যোদ্ধা প্রাণ হারিয়েছেন এবং লাখো সমর্থক তাদের ধ্বংস হওয়া বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে।

লেবাননের সূত্র জানিয়েছে, লেবানন সরকারকে হিজবুল্লাহর নিরস্ত্রীকরণের জন্য মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী, হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের লিতানি নদীর উত্তরে সরে যেতে হবে। এটি ইসরায়েলি সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে। তবে হিজবুল্লাহ প্রকাশ্যে তাদের অস্ত্রভাণ্ডার হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানালেও গোপনে তা কমিয়ে আনার চিন্তা করছে বলে জানা গেছে। 

কাসেম বলেন, যারা দেশীয়, আন্তর্জাতিক বা আরব পর্যায়ে আমাদের নিরস্ত্রীকরণের কথা বলে, তারা ইসরায়েলের এজেন্ডাকে এগিয়ে নিচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত টম ব্যারাক লেবাননের নিরাপত্তার কথা ভেবে নয়, ইসরায়েলের স্বার্থে হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন সরানোর দাবি করছেন। । 

গত জুলাইয়ে বৈরুতে লেবাননি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে ব্যারাক হিজবুল্লাহর পুরোপুরি নিরস্ত্রীকরণের প্রস্তাব দেন। এর বিনিময়ে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও বিমান হামলা বন্ধের কথা বলা হয়েছে। তবে হিজবুল্লাহর নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছে, ইসরায়েল প্রথমে হামলা বন্ধ করুক ও দখলকৃত এলাকা ছাড়ুক। তবেই অস্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হতে পারে। 

হিজবুল্লাহর দাবি, ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধই এখন সবচেয়ে জরুরি। কাসেম বলেন, রাজনৈতিক আলোচনা ইসরায়েলি আক্রমণ বন্ধের দিকে হওয়া উচিত, অস্ত্র ইসরায়েলের হাতে তুলে দেওয়ার দিকে নয়। 

লেবাননের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক চাপের মুখে হিজবুল্লাহর অস্ত্র ত্যাগে সরকারি প্রতিশ্রুতি চাওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম আগামী সপ্তাহে মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন। বৈঠকে সরকারি বাহিনীর মাধ্যমে লেবাননের সার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা হবে। 

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *