নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় অধিবেশন কক্ষে ছিলেন না ড. ইউনূসসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধিরা

Google Alert – ইউনূস

ফিলিস্তিনে চলমান আগ্রাসনের জন্য বিশ্বব্যাপী নিন্দা ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানার মধ্যে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এ সময় অনেক দেশের প্রতিনিধি প্রতিবাদ জানিয়ে অধিবেশন কক্ষ বর্জন (ওয়াকআউট) করেন। নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধিরাও অধিবেশন কক্ষে ছিলেন না। এছাড়া ড. ইউনূস তার ভাষণে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের চতুর্থ দিন ভাষণের জন্য নেতানিয়াহুর নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করতে আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ান। একপর্যায়ে তারা অধিবেশন কক্ষ ত্যাগ করেন। প্রতিনিধিরা যখন অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে যাচ্ছিলেন, তখন সেখানে উপস্থিত অনেকে হাততালি দেন। শিস বাজাতেও শোনা যায়। পরিষদের সভাপতি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বললেও তাতে কাজ হয়নি।

নেতানিয়াহু যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন তার সামনের আসনগুলো ফাঁকা দেখা যায়। প্রায় সব আরব ও মুসলিম দেশ, আফ্রিকার বেশ কিছু দেশ এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা অধিবেশন বর্জন করেছিলেন। জাতিসংঘের ভিডিওতে নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের আসনগুলো ফাঁকা দেখা যায়। পরে বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস উইং অধিবেশন কক্ষে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদের উপস্থিত না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে। 



শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদারও জানান, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ভাষণ দেওয়ার পর বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল প্রবেশ করেছে। তিনি লিখেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল— এমন প্রচারণা পতিত শক্তির অপপ্রচার ছাড়া কিছুই নয়। মিথ্যাই এখন তাদের একমাত্র অবলম্বন।

তিনি লিখেন, নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার দুটি পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। প্রথম কর্মসূচি ছিল বিভিন্ন দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীদের সমন্বয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম নিজামী গাঞ্জাভি ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক, যা সকাল ৯টায় হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় কর্মসূচি ছিল ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক, যা অনুষ্ঠিত হয় জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সকাল সাড়ে ১০টায়।

আজাদ মজুমদার আরও লিখেন, কর্মসূচি শেষে প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল যখন সাধারণ পরিষদের হলরুমে প্রবেশ করে, তখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন সেন্ট ভিনসেন্টের প্রধানমন্ত্রী রালফ গনজালভেস। এর আগে ইসরায়েল, পাকিস্তান ও চীনের প্রধানমন্ত্রীরা তাদের বক্তব্য শেষ করেন।

এদিকে, গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার কথা উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস তার ভাষণে বলেন, শিশুরা না খেয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করছে, বেসামরিক জনগোষ্ঠীকে নির্বিচার হত্যা করা হচ্ছে। হাসপাতাল, স্কুলসহ একটি গোটা জনপদ নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হচ্ছে। জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কমিশনের সঙ্গে একমত যে সবার চোখের সামনেই একটি নির্বিচার গণহত্যা সংঘটিত হচ্ছে। দুর্ভাগ্য যে মানবজাতির পক্ষ থেকে এর অবসানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে না। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও ইতিহাস ক্ষমা করবে না।

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য বাংলাদেশের জনগণ ও বিশ্বের বিবেকবান নাগরিকদের পক্ষ থেকে জোরালো দাবি জানিয়ে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান বলেন, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এ সমস্যার দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান এখনই বাস্তবায়ন করতে হবে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *