Google Alert – প্রধান উপদেষ্টা
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে মব সন্ত্রাস বা গণপিটুনির ঘটনা ভয়াবহভাবে বেড়ে চলেছে। সম্প্রতি কুমিল্লার মুরাদনগরে এক মা, ছেলে ও মেয়েকে চুরির অভিযোগে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
গাজীপুরে হৃদয় নামের এক যুবক, ঢাকায় আল আমিন, লালমনিরহাটে এক সেলুন কর্মী এবং সিরাজগঞ্জে এক মানসিক প্রতিবন্ধীসহ গত ছয় দিনে অন্তত ছয়জন মানুষ এই সহিংসতার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গত জুন পর্যন্ত ২৫৩টি মব সন্ত্রাসে নিহত হয়েছেন ১৬৩ জন, আহত হয়েছেন ৩১২ জন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আশ্বাস সত্ত্বেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক প্রভাব, বিচারহীনতা ও আইনের শাসনের অভাবে সাধারণ মানুষ নিজেরাই আইন হাতে তুলে নিচ্ছে। সরকারের উপদেষ্টা, মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক দল ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা একে অপরকে দায়ী করলেও কার্যকর ব্যবস্থা এখনো চোখে পড়ছে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাজনৈতিক পরিচয়ধারীদের অপরাধে জড়িত থাকার বিষয়টি উপেক্ষা করায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।
এ অবস্থায় বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং বলছে, মব সন্ত্রাস বন্ধ না হলে বাংলাদেশ একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে।
জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্ব হলেও বাস্তবতা বলছে, মানুষ এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম, ‘বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী, আছে করোনাও‘
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে বর্তমানে ডেঙ্গু, করোনা ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ বাড়ছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
অনেকেই জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, আবার কেউ কেউ বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ঢাকার ডিএনসিসি কোভিড-১৯ হাসপাতালে দেখা গেছে, আইসিইউতে বেশ কয়েকজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি আছেন।
প্লাটিলেট কমে যাওয়ায় অনেক রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে উঠছে। চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু এখন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে এবং পরবর্তী দুই মাসে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ২০৪ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং এ বছর এখন পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, যার মধ্যে বরিশাল বিভাগে আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি।
এছাড়া কিছু রোগীর করোনা এবং চিকুনগুনিয়ার উপসর্গও দেখা যাচ্ছে, যদিও পরীক্ষায় সেগুলো প্রমাণিত না হলেও চিকিৎসকরা লক্ষণ দেখে চিকিৎসা দিচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। বর্তমানে এডিস মশার বিস্তার শহর ছাড়িয়ে গ্রামেও ছড়িয়ে পড়ছে।
তাই ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকার, স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্যখাতের সমন্বয়ে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান শিরোনাম, ‘Life-saving care hampered in 25 govt hospitals‘ অর্থাৎ, ‘২৫টি সরকারি হাসপাতালে জীবন রক্ষাকারী সেবা ব্যাহত হচ্ছে’
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের ২৫টি সরকারি হাসপাতালে স্থাপিত আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) গত কয়েক মাস ধরে পুরোপুরি বা আংশিক অকার্যকর হয়ে আছে।
এর মূল কারণ হচ্ছে জনবল সংকট। এসব হাসপাতাল কোভিড-১৯ এর সময় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ২০২০ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বিভিন্ন জেলায় স্থাপন করা হয়।
কিন্তু নিয়োগপ্রাপ্ত এক হাজার ১৫৪ জন চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানের চুক্তি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়ে যায়, এবং সরকার তাদের আর নিয়োগ দেয়নি। ফলে বহু জেলায় জরুরি চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যায়।
সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ সংকটে ভোগার পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালে উচ্চ খরচ অনেক রোগীর নাগালের বাইরে।
কোভিড সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকায় নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দেশে বর্তমানে এক হাজার ৩৭২টি সরকারি আইসিইউ বেড আছে, যার অর্ধেকই ঢাকায়। ফলে বহু জেলা এখনো আইসিইউবিহীন।
অনেক হাসপাতালে আইসিইউ চালু হলেও তা ঠিকভাবে চলছে না। কোনো কোনো হাসপাতালে কর্মী সংকটে সম্পূর্ণ বন্ধ।
সরকারের পরিকল্পনা ছিল আরও ৩৩টি হাসপাতালে আইসিইউ, ১৬টি হাসপাতালে শিশু আইসিইউ, ১৫টি হাসপাতালে গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষ আইসিইউ চালু করা, কিন্তু বিশ্বব্যাংক মেয়াদ বাড়াতে রাজি না হওয়ায় এইসব কাজ ঝুলে আছে।
সরকার এখন একটি ‘ক্লাস্টার’ পদ্ধতির চিন্তা করছে, যেখানে কয়েকটি জেলার জন্য একটি আইসিইউ চালু রাখা হবে এবং আশপাশের জেলা থেকে রোগী সেখানে পাঠানো হবে। তবে প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত।
দেশ রূপান্তরের প্রধান শিরোনাম, ‘আন্তর্জাতিক মহলে ধরনা’
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্তর্জাতিক মহলের সহায়তা চাইছে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।
তারা চাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ভারত ও চীন, এই বড় শক্তিগুলো সরকারের ওপর চাপ তৈরি করুক যেন অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত নির্বাচন দেয়।
এ নিয়ে দলগুলো বিদেশি কূটনীতিক ও মানবাধিকার সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে ফোন করেছেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারও দ্রুত নির্বাচন চেয়েছেন।
বিএনপি ও তার সহযোগী দলগুলো দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও আলোচনা করছে, যাতে তারা নির্বাচন ইস্যুকে গুরুত্ব দেন।
ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রাখতে অবাধ নির্বাচনের প্রয়োজন, এই বার্তাও দেওয়া হচ্ছে। দলগুলো মনে করে, সরকার শুধু দেশীয় নয়, আন্তর্জাতিক চাপেও সাড়া দেবে।
তারা বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী ও সুশীল সমাজকে নির্বাচন ইস্যুতে আরও সোচ্চার হতে বলছে।
বিএনপি বলছে, নির্বাচন আদায়ের বিকল্প পথ নেই। সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে কৌশলগতভাবে এগোতে হবে।
মার্কো রুবিও ও ড. ইউনূসের কথোপকথনে জানানো হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশে একটি অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রত্যাশা করছে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী জুলাইয়ের শেষে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে, যেখানে আইএমএফ-এর শর্ত নয়, দেশের মানুষের চাওয়া-পাওয়াকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
গত তিন অর্থবছর ধরে কড়াকড়িভাবে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি চালু ছিল, যার ফলে ঋণের সুদ বেড়েছে, বাজারে টাকার প্রবাহ কমেছে, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান দুই-ই বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
এর ফলে সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী ও নতুন প্রজন্মের চাকরিপ্রত্যাশীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই বাস্তবতায় এবার মুদ্রানীতিকে কিছুটা শিথিল করার পরিকল্পনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চায় কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে কম সুদে ঋণ বাড়িয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে।
এজন্য এনজিও ও পিকেএসএফের মাধ্যমে ঋণের জোগান বাড়ানো হচ্ছে এবং ব্যাংকগুলোকে বাধ্য করা হবে এসব খাতকে অর্থায়ন করতে।
মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে, তাই এখন বিনিয়োগ বাড়াতে ঝুঁকি নিতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আইএমএফ আপত্তি করলেও তা উপেক্ষা করে মানুষের চাহিদাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
রাজশাহী, সিলেট ও ঢাকায় জনমত সংগ্রহ করে মুদ্রানীতির খসড়া তৈরি হবে। দেশের ভেতর থেকে বড় বড় ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরাও সুদের হার কমানোর পক্ষে।
ফলে এবার মুদ্রানীতির লক্ষ্য হবে বিনিয়োগ বাড়িয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশের অর্থনীতিকে সচল করা।
ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম, ‘যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়া তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ৩৭ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে, যা কার্যকর হবে ৯ই জুলাই।
এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হলেও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে তৈরি পোশাক খাত নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
এই খাতে দেশের ৯০ শতাংশ রপ্তানি নির্ভর হওয়ায় শুল্ক কার্যকর হলে রপ্তানি কমে যাবে এবং শ্রমিকদের জীবিকাও হুমকিতে পড়বে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে আঞ্চলিক মূল্য সংযোজন থাকতে হবে, নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান অনুসরণ করতে হবে এবং শুল্কছাড়ের ক্ষেত্রে এককভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
বাংলাদেশ বলছে, এসব শর্ত বাস্তবসম্মত নয় এবং বিশ্ব বাণিজ্য নিয়মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
বাংলাদেশ এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং পরবর্তী বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করছে।
বিজিএমইএ এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্র বাস্তবতা বুঝবে এবং শুল্ক আরোপ না করে সময়সীমা বাড়াতে পারে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তি করেছে যেখানে ভিয়েতনামের পণ্যে ২০ শতাংশ শুল্ক থাকবে।
বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে বছরে প্রায় আট দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে, যার বেশিরভাগই তৈরি পোশাক।
সমকালের প্রধান শিরোনাম, ‘কৃষকের গোলা খালি হওয়ার পর চড়ছে চালের দাম‘
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, চালের দাম বাড়ছে এমন এক সময়, যখন তা কমে যাওয়ার কথা ছিল।
বোরো মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ চাল উৎপাদিত হলেও রাজধানীসহ সারা দেশে কেজিপ্রতি চালের দাম চার থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে।
এতে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন, আর কৃষকরা হতাশ। তারা মনে করছেন, কম দামে ধান বিক্রি করে তারা ঠকে গেছেন।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, কৃষকের ধান যখন মিলারদের হাতে যায়, তখনই সিন্ডিকেট চালের দাম বাড়িয়ে দেয়।
এ বছর বোরোতে দুই কোটি ১৪ লাখ টন চাল উৎপাদন হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ১৫ লাখ টন বেশি। তা সত্ত্বেও মিনিকেট, ব্রি-২৮ ও মোটা চালের দাম ৫৫ থেকে ৮৫ টাকায় পৌঁছেছে।
টিসিবির তথ্য বলছে, এক মাসে চালের দাম ৫ থেকে ৯ শতাংশ বেড়েছে। সরকারের গুদামে মজুতও বেশি, তবু দাম নিয়ন্ত্রণে নেই।
মিলাররা বলছে পরিবহন খরচ, ধানের দাম বৃদ্ধি ও করপোরেট মজুদের কারণেই এই দাম বেড়েছে। অনেকে বলছেন, করপোরেট চালকলগুলো কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। বাজারে মিল পর্যায়ে নজরদারির অভাবও উল্লেখযোগ্য।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিন্ডিকেট ও দুর্নীতি বন্ধ না হলে বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে না। খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে নিম্নআয়ের মানুষের জন্য। সরকারের হস্তক্ষেপ জরুরি।
নিউ এইজের প্রধান শিরোনাম, ‘Gas distributors doing ‘crafty’ business‘ অর্থাৎ “গ্যাস বিতরণকারীরা ‘চালাকির’ ব্যবসা করছে”।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের গ্যাস বিতরণ খাতে ‘সিস্টেম লস’ ও ‘সিস্টেম গেইন’ নামে যে হিসাব দেখানো হয়, তা বিশেষজ্ঞদের মতে কারচুপি ও দুর্নীতির ইঙ্গিত দেয়।
আন্তর্জাতিকভাবে গ্যাস সিস্টেম লস দুই শতাংশের মধ্যে থাকলেও বাংলাদেশের সরকারি গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর মধ্যে কেউ কেউ নয় থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতির তথ্য দেখাচ্ছে, আবার কেউ কেউ বিপরীতভাবে ‘গেইন’ বা অতিরিক্ত গ্যাস বিক্রির দাবি করছে।
যেমন পেট্রোবাংলার তথ্য মতে ফেব্রুয়ারিতে গড় সিস্টেম লস ছিল ছয় দশমিক ৬৮ শতাংশ, যা এখনো অনেক বেশি।
তিতাস গ্যাস ফেব্রুয়ারিতে নয় দশমিক ২১ শতাংশ সিস্টেম লস দেখিয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস ও সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি যথাক্রমে এক দশমিক ৪০ শতাংশ ও এক দশমিক ৪৪ শতাংশ গেইনের দাবি করেছে, যা বাস্তবসম্মত নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি মূলত মিটারিং ত্রুটি, চাপ কমিয়ে গ্যাসের আয়তন বাড়ানো ও খরচ অনুমান করে বিল দেওয়ার পুরনো পদ্ধতির কারণে হচ্ছে।
অনেক জায়গায় এখনও প্রিপেইড মিটার নেই, ফলে গ্রাহকরা অতিরিক্ত বিল দিচ্ছেন বা কম গ্যাস পাচ্ছেন।
এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির মিটার রিডিংয়ে গড়মিল হচ্ছে। পুরনো ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে সরকারও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না।
সব মিলিয়ে, গ্যাস বিতরণ খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে, যা ভোক্তা, অর্থনীতি এবং দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র খুব শিগগিরই চালু হতে যাচ্ছে। রাশিয়ার সহায়তায় নির্মিত এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ চালু হলে জাতীয় গ্রিডে ২,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে।
প্রথমে ১,২০০ মেগাওয়াট উৎপাদনে আসবে। এতে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা বাড়বে এবং ভারতের ওপর নির্ভরতা অনেকটাই কমে যাবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে প্রায় ২,৭৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করে, যা দেশের মোট চাহিদার ১৭ শতাংশের বেশি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রূপপুরের বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলে ভারতীয় বিদ্যুৎ আমদানির ৯০ শতাংশ কমে যেতে পারে।
রূপপুর কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ উত্তরাঞ্চলে সরবরাহ করা হবে, যেখানে বর্তমানে ব্যয়বহুল তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চলে। এতে উৎপাদন খরচও কমবে।
রূপপুরের বিদ্যুৎ নিতে গ্রিড ও সঞ্চালন লাইন ইতোমধ্যে প্রস্তুত এবং চারটি বড় গ্রিড লাইনের নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। সরকার আশা করছে, এতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হবে।
তবে বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তি এখনো চূড়ান্ত হয়নি এবং রূপপুর প্রকল্পে অর্থ ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
তারপরও রূপপুর চালু হলে দেশের বিদ্যুৎ খাতে একটি বড় পরিবর্তন আসবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় এই প্রকল্পকে গুরুত্বপূর্ণ ধাপে দেখা হচ্ছে।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের, ‘Customs bureaucracy: Luxury cars rot at Ctg port‘ অর্থাৎ ‘কাস্টমস আমলাতন্ত্র: চট্টগ্রাম বন্দরে বিলাসবহুল গাড়ি নষ্ট হচ্ছে’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, চট্টগ্রাম বন্দরে শত শত বিলাসবহুল গাড়ি বছরের পর বছর পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কাস্টমসের জটিল নিয়ম ও দায়িত্বহীনতার কারণে।
১৯৯৫ সালে আমদানি করা একটি সুজুকি গাড়ি ৩০ বছর পড়ে থেকে অবশেষে স্ক্র্যাপ হিসেবে কেজি প্রতি মাত্র ২৪ দশমিক ২৫ টাকায় বিক্রি হয়।
এমনভাবে গত ফেব্রুয়ারিতেই ৭৪টি গাড়ি স্ক্র্যাপ হিসেবে বিক্রি হয়, যেগুলোর মোট মূল্য প্রায় ৭০ কোটি টাকা হলেও বিক্রি হয় মাত্র ৪২ দশমিক ৮০ লাখ টাকায়।
মূল সমস্যা হচ্ছে অযৌক্তিকভাবে বেশি রিজার্ভ প্রাইস নির্ধারণ। অনেক গাড়ি আট বার পর্যন্ত নিলামে উঠলেও বিক্রি হয়নি, কারণ দাম ছিল চার কোটি টাকার গাড়ির জন্য নয় কোটি টাকার বেশি।
এমনকি সংসদ সদস্যদের আমদানি করা বিলাসবহুল এসইউভি গাড়িগুলোর জন্য কেউ তিন দশমিক এক কোটি টাকার বিড দিলেও ৬০ শতাংশ রিজার্ভ মূল্যে না ওঠায় সেটিও বাতিল করা হয়।
কাস্টমস কর্মকর্তারা বিডার সিন্ডিকেটের ভয় দেখালেও এ ধরনের কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি।
এদিকে বন্দরে জমে থাকা অবিক্রিত পণ্যের কারণে তীব্র জট তৈরি হয়েছে, যার ফলে বন্দরের ১৯ শতাংশ ধারণক্ষমতা এখন আটকে আছে।
কাস্টমস বন্দরকে ১৪২ কোটি টাকা পাওনা পরিশোধও করছে না। বিশেষজ্ঞরা দ্রুত আইনি সংস্কার ও নিলাম প্রক্রিয়া সহজ করার দাবি জানিয়েছেন যাতে জাতীয় সম্পদ আর ক্ষয় না হয়।