Google Alert – সেনা
পাঁচ মাসে গাজা দখলের পরিকল্পনা
সংগৃহীত ছবি
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা পুরোপুরি দখলে নেওয়ার একটি পরিকল্পনা আজ ইসরাইলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আশীর্বাদপুষ্ট এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হিসেবে গাজাকে হামাসমুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এই তথ্য জানিয়েছে ইসরাইলি গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট। এই পরিকল্পনার মূলে আছে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের পাঁচ ডিভিসন সেনা। আপাতত এই বিশেষ, সম্প্রসারিত সামরিক অভিযানের সময়সীমা ধরা হয়েছে পাঁচ মাস। অর্থাৎ পাঁচ ডিভিশন সেনা পাঁচ মাসে গাজাকে হামাসমুক্ত করবে। এবং এটা করতে পুরো ভূখণ্ডের দখল নিতে হবে আইডিএফকে।
যার ফলে গাজার প্রায় ১০ লাখ মানুষকে অন্য কোনো জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হবে, সংকটের মুখে পড়বে ২০ লাখ মানুষ। বিশ্লেষকদের মতে, আজই এই পরিকল্পনা ইসরাইলের যুদ্ধকালীন নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার সবুজ সংকেত পেতে চলেছে। মন্ত্রিসভার সদস্যরা বিষয়টি জেরুজালেম পোস্টকে নিশ্চিত করেন এবং জানান, ‘অনুমোদন পাওয়া নিয়ে কোনো সংশয় নেই। এখানে একমাত্র প্রশ্ন হলো, ওই পরিকল্পনার একাধিক সংস্করণের মধ্যে কোনটি অনুমোদন পেতে যাচ্ছে।’
ইতিমধ্যে গাজা দখলের এই পরিকল্পনার সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন আইডিএফের চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির। তা সত্ত্বেও, পদত্যাগের মতো কঠোর কোনো সিদ্ধান্তে যাচ্ছেন না তিনি।
মঙ্গলবার এক আলোচনায় জামির বলেন, ‘এই অভিযান একটি ভুল সিদ্ধান্ত। এতে জিম্মিদের জীবন বিপন্ন হবে।’
ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পরিকল্পনা আসলে সে অনুযায়ী ইসরাইলের অভিযানে রদবদল করা হবে এবং বিষয়টি আজকের মন্ত্রিসভা বৈঠকে আলোচনা করা হবে। জেরুজালেমকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই সূত্র এ কথা জানিয়েছে। অপরদিকে নেতানিয়াহু প্রশাসনের সদস্যরা গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনা অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে। এ বিষয়টি সম্পর্কে জানেন এমন এক সূত্র জেরুজালেম পোস্টকে বলে, ‘গাজায় মানবিক ত্রাণ বিতরণের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য আকারে বাড়াতে চায় প্রশাসন।’
বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি, ইসরাইল এ সহায়তা বিতরণে আমাদের সাহায্য করবে। অর্থের দিক থেকেও সাহায্য করবে। আমাদের সঙ্গে আরব দেশগুলোও আছে। তারাও অর্থ দিয়ে ও সম্ভবত বিতরণেও আমাদের সাহায্য করবে।’
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গাজা দখল করে নেওয়ার বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, তার নজর ‘গাজার ক্ষুধার্ত মানুষকে খাওয়ানোর’ দিকে। বাকি বিষয়গুলো নিয়ে আমার তেমন কিছু বলার নেই। সেটা মূলত ইসরাইলের (সিদ্ধান্তের) ব্যাপার, সাংবাদিকদের বলেন ট্রাম্প। বুধবার সন্ধ্যায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হামাস। গাজার শাসক হিসেবে বা অন্য কোনোভাবেও হামাসের অস্তিত্ব থাকতে পারবে না বলে মত দেন তিনি।
এদিকে গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত থাকায় ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। ব্লাড ব্যাংকগুলো অচল হয়ে যাচ্ছে। এতে রোগীদের জন্য রক্তের সংকট দেখা দিয়েছে। ইসরাইলি বাহিনী রোগী ও বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর আবাসনকেন্দ্র ও হাসপাতালগুলো পর্যন্ত হামলার নিশানা বানাচ্ছে। পাশাপাশি উপত্যকাটিতে ত্রাণ প্রবেশে বিধিনিষেধ অব্যাহত রেখেছে। বুধবার গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রক্তের তীব্র ঘাটতি তৈরি হয়েছে। কারণ ইসরাইলি অবরোধ ও খাদ্যসংকটে বহু সম্ভাব্য রক্তদাতা এতটাই অপুষ্টিতে ভুগছেন যে তারা রক্ত দেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে নেই। এ অবস্থায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ জনসহ এ পর্যন্ত অনাহারে অন্তত ১৯৩ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে।
আলজাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ গাজা সিটি থেকে জানিয়েছেন, গাজায় এখনও কার্যকর থাকা আল-শিফা হাসপাতাল, আল-আকসা হাসপাতাল ও নাসের হাসপাতালে রক্তের তীব্র চাহিদা আছে। আমরা ব্লাড ব্যাংকে এমন অনেককে দেখেছি, যারা চিকিৎসকের কাছে অনুরোধ করছিলেন, প্রিয়জনের জীবন বাঁচাতে রক্ত নেওয়ার জন্য; কিন্তু তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ তারা তীব্র পানিশূন্যতা ও অনাহারে রক্ত দেওয়ার উপযোগী ছিলেন না।’
আল-শিফা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের প্রধান আমানি আবু ওউদা বলেন, রক্ত দিতে আসা অধিকাংশ মানুষই অপুষ্টিতে ভুগছেন, যা রক্তের গুণমান ও নিরাপত্তা প্রভাবিত করছে। আমানি আবু ওউদা বলেন, ‘এ অবস্থায় তারা রক্ত দিলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে চেতনা হারাতে পারেন। এটি তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলবে এবং একই সঙ্গে একটি মূল্যবান রক্ত ইউনিটও নষ্ট হয়ে যাবে।’
ইতিমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস সতর্ক করে বলেন, গাজায় এখনও ১৪ হাজার ৮০০-এর বেশি রোগীর বিশেষায়িত চিকিৎসা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, ‘আমরা আরও দেশকে রোগীদের গ্রহণ করার জন্য এগিয়ে আসার ও সম্ভাব্য সব পথে রোগী স্থানান্তরের কাজটি দ্রুত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
এদিকে গাজায় ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯৮ ফিলিস্তিনি ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে। অবরুদ্ধ এই উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরাইলি হামলায় ৫১ জন ত্রাণপ্রার্থীসহ কমপক্ষে ৯৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৬০৩ জন আহত হয়েছেন। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা ১৯৭ জনে দাঁড়াল, যার মধ্যে ৯৬ জনই শিশু।
টেলিগ্রামে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরাইলি হামলার পর ধ্বংসস্তূপ থেকে দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলের হামলায় মোট ৬১ হাজার ২৫৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৫২ হাজার ৪৫ জন আহত হয়েছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৭ মে ইসরাইল বিতর্কিত জিএইচএফের মাধ্যমে একটি নতুন ত্রাণবিতরণ ব্যবস্থা চালু করে।
কিন্তু সেখান থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে বহু ফিলিস্তিনি প্রাণ হারাচ্ছে। সে সময় থেকে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৭০৬ জন ত্রাণপ্রার্থী নিহত এবং ১২ হাজার ৩০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
আলজাজিরা জানায়, গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান এলাকায় রাতভর চালানো হামলায় ডজনখানেক মানুষ আহত হন। এ হামলায় শেখ রাদওয়ান স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিশানা করা হয়েছিল। এ স্বাস্থ্যকেন্দ্র আগে ফিলিস্তিনিদের জন্য জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হতো। বাস্তুচ্যুত স্থানীয় ফিলিস্তিনি গালেব তাফেশ বলেন, ‘গত রাতে আমরা যখন রাতের খাবার খাচ্ছিলাম, হঠাৎ চিৎকার শুনতে পেলাম। লোকজন চিৎকার করে সবাইকে পালাতে বলছিল। কিছু নেওয়ার সুযোগ ছিল না। খাবার-জামাকাপড় কিছু নেওয়ার সময় ছিল না। শুধু দৌড়ে পালিয়েছি।’
গত মে মাসের শেষ দিকে জিএইচএফ কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে ত্রাণ নেওয়ার চেষ্টাকালে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৬০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে মানবাধিকার বিশেষজ্ঞের একটি দল ও জাতিসংঘের বিশেষ দূত জিএইচএফকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা জানান, এটি মানবিক ত্রাণকে গোপন সামরিক ও ভূরাজনৈতিক এজেন্ডায় ব্যবহার করার এক চরম উদ্বেগজনক উদাহরণ, যা আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।
ইসরাইলের বিমান ও স্থল অভিযান গাজার প্রায় পুরো খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থাও ধ্বংস করে দিয়েছে। এ কারণে মানুষ এখন পুরোপুরি ত্রাণের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এবং জাতিসংঘ স্যাটেলাইট কেন্দ্রের এক নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার ফসলি জমির মাত্র ৮ দশমিক ৬ শতাংশ এখনও ব্যবহারযোগ্য এবং ১ দশমিক ৫ শতাংশ অক্ষত রয়েছে। গাজায় ইসরাইলের অবরোধ ওষুধ ও জ্বালানির ক্ষেত্রেও প্রসারিত হয়েছে। এ কারণে অনেক হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্র গত কয়েক মাসে কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
অন্যদিকে গাজার দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, ‘আমরা শুক্র, শনি, রোববার ও পরবর্তী প্রতিটি দিন শহরগুলো, রাজধানী এবং চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদের মাধ্যমে জনগণের চাপ অব্যাহত রাখা ও আরও জোরদার করার আহ্বান জানাই, বিশেষ করে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসগুলোর সামনে।’
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক বলেন, গাজায় জ্বালানি প্রবেশের ওপর ইসরাইলের অব্যাহত অবরোধ ‘জীবন রক্ষাকারী’ কার্যক্রমকে হুমকিতে ফেলেছে। ফারহান হক বলেন, গত দুই দিনে জাতিসংঘ কারেম আবু সালেম ক্রসিং থেকে মাত্র তিন লাখ লিটার জ্বালানি সংগ্রহ করেছে, যা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। উদাহরণস্বরূপ, স্বাস্থ্য খাতে কাজ করা আমাদের সহযোগীরা জানিয়েছেন, জ্বালানির অভাবে ১০০টির বেশি অকালে জন্ম নেওয়া শিশুর জীবন হুমকিতে আছে। ফারহান হক আরও বলেন, গত মার্চ থেকে সার্জন, বিশেষজ্ঞ কর্মীসহ ১০০ জনের বেশি স্বাস্থ্যকর্মীকে গাজায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
এমন মৃত্যু ও সংকটের মধ্যেই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নতুন সামরিক পদক্ষেপ, বিশেষ করে গাজা পুরোপুরি দখলের পরিকল্পনার বিষয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইলের চলমান হামলা ও অবরোধ ইতিমধ্যে প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনিকে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। জাতিসংঘ বলেছে, ইসরাইলের সম্ভাব্য ওই সামরিক অভিযানের খবর যদি সত্য হয়, তা হলে তারা ‘গভীরভাবে উদ্বিগ্ন’।
আন্তর্জাতিক চাপ থাকা সত্ত্বেও ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা ভেস্তে গেছে। জনবহুল এলাকায় সামরিক অভিযান বাড়লে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেইর আল-বালা শহরের প্রান্তে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি তামের আল-বুরাই বলেন, ‘আমরা যাব কোথায়? যদি ট্যাঙ্ক ঢুকে পড়ে, তা হলে কি মানুষ সাগরে ঝাঁপ দেবে, নাকি বাড়ির নিচে চাপা পড়ে মরবে? আমরা এ যুদ্ধের অবসান চাই। যথেষ্ট হয়েছে, যথেষ্ট হয়েছে।’
গাজায় মানবিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে বলে সতর্ক করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। একটি বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থা পরিস্থিতিকে একটি ‘দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি’ বলে উল্লেখ করেছে। শিশুদের মধ্যে অপুষ্টিজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, এবং এখনও পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয় সংস্থা জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর গাজায় খাদ্য গ্রহণের হার বর্তমানে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। চলতি সপ্তাহে তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার ৮১ শতাংশ পরিবারের খাদ্য গ্রহণ অত্যন্ত দুর্বল পর্যায়ে রয়েছে-যা এপ্রিলের ৩৩ শতাংশের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, কিছু অগ্রগতি হয়েছে- যেমন জ্বালানির পরিমাণ বেড়েছে, রুট খুলেছে, এবং অবকাঠামো মেরামত হয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, মাটিতে নিরাপদ পরিবেশ না থাকায় এখনও বড় পরিসরে ত্রাণ বিতরণ কঠিন হচ্ছে। আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ক্রমশ বাড়লেও, একদিকে সামরিক অভিযান আরও জোরালো হচ্ছে, আর অন্যদিকে মানবিক সংকট মারাত্মক রূপ নিচ্ছে-সংঘাতের সমাপ্তির কোনো ইঙ্গিত এখনও দেখা যাচ্ছে না।
এমএইচ