পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং সেনাপ্রধানের প্রশংসা ট্রাম্পের

Google Alert – সেনাপ্রধান

গাজা যুদ্ধ সমাপ্তির লক্ষ্যে প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনায় পাকিস্তানের পূর্ণ সমর্থনের প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে “অসাধারণ মানুষ” হিসেবেও আখ্যা দেন। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা শান্তি পরিকল্পনায় সমর্থনের জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং দেশটির সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের প্রশংসা করেছেন। সোমবার হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প তাদেরকে “অসাধারণ” মানুষ আখ্যা দিয়ে বলেন, ওয়াশিংটনের প্রস্তাবিত ২০ দফা পরিকল্পনার শুরু থেকেই ইসলামাবাদ পাশে ছিল। ট্রাম্প বলেন, “পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও ফিল্ড মার্শাল শুরু থেকেই আমাদের সঙ্গে ছিলেন। তারা অসাধারণ। তারা এখন একটি বিবৃতি দিয়েছে যেখানে তারা এই চুক্তির প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেছে। তারা শতভাগ সমর্থন জানিয়েছে এবং পুরোপুরি এই পরিকল্পনার পক্ষে।” এ সময় তিনি গাজা যুদ্ধের অবসানে প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় সমর্থন দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মুসলিম ও আরব দেশের নেতাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান। ট্রাম্প বলেন, “আমি বহু আরব ও মুসলিম দেশের নেতাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই তাদের অসাধারণ সহযোগিতার জন্য… আমার সৌদি আরব, কাতারের আমির, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডানের বাদশাহ, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান এবং ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক ও আলোচনা হয়েছে। আমরা একসঙ্গেই ছিলাম।” সোমবার ঘোষিত ট্রাম্পের ‘গাজা সংঘাত সমাপ্তির সার্বিক পরিকল্পনা’ অনুযায়ী, গাজাকে সন্ত্রাসমুক্ত, নিরস্ত্রীকরণ ও প্রতিবেশীদের জন্য হুমকি সৃষ্টি করে না এমন একটি অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা হবে এবং এর পুনর্গঠন করা হবে।

পরিকল্পনায় বলা হয়, উভয় পক্ষ প্রস্তাবে সম্মত হলে সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ হবে। ইসরাইলি বাহিনী নির্ধারিত সীমারেখায় সরে যাবে এবং বন্দি বিনিময়ের প্রস্তুতি শুরু হবে। এই সময় সব ধরনের সামরিক অভিযানÑ যেমন বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ বন্ধ থাকবে এবং যুদ্ধের লাইন অপরিবর্তিত থাকবে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইসরাইলকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব বন্দিকে (জীবিত বা মৃত) ফিরিয়ে দিতে হবে। বন্দিদের মুক্তির পর ইসরাইল যাবজ্জীবন দÐপ্রাপ্ত ২৫০ বন্দি এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর আটককৃত ১৭০০ গাজাবাসী Í যার মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছেÑ মুক্তি দেবে। এছাড়া প্রতিটি ইসরাইলি বন্দির মৃতদেহ ফেরত দিলে ইসরাইল ১৫ জন মৃত ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দেবে। এদিকে এই প্রস্তাব ঘোষণার পর সৌদি আরব, জর্ডান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, তুরস্ক, কাতার ও মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে ট্রাম্পের “নেতৃত্ব” ও গাজা যুদ্ধ শেষ করার “সত্যিকার প্রয়াসকে” স্বাগত জানান। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ওভাল অফিসে শেহবাজ শরিফ ও আসিম মুনিরের সঙ্গে বৈঠক করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই বৈঠকের কয়েকদিন পরই ট্রাম্প এই মন্তব্য করলেন। এছাড়া ওই বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তি হয়। এর কয়েক দিন আগে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ফাঁকে ট্রাম্প শেহবাজ শরিফের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেছিলেন এবং সেখানে আরবসহ বিভিন্ন দেশের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকে ট্রাম্পের অধীনে ইসলামাবাদ-ওয়াশিংটন সম্পর্ক উষ্ণ হতে শুরু করেছে। গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও রেয়ার আর্থ উপাদান সরবরাহে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এছাড়া একটি মার্কিন কোম্পানি পাকিস্তানের খনিজ খাতে ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে। এর আগে গত জুলাই মাসে ট্রাম্প পাকিস্তানের বিশাল তেলসম্পদ উন্নয়নে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অন্যদিকে বাণিজ্য চুক্তি অনুযায়ী, পাকিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য আমদানিতে ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে এবং ওয়াশিংটন পাকিস্তানের তেলসম্পদ উন্নয়নে সহযোগিতা করবে। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তানের পণ্য ও সেবা বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ১০.১ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৬.৩ শতাংশ (৫২৩ মিলিয়ন ডলার) বেশি। এনডিটিভি।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *