Google Alert – সেনাপ্রধান
আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত মিলল ইসলামাবাদে। গত মঙ্গলবার পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্রর মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যকলাপ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক শেষে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে স্বীকার করল, সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তান যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, পাকিস্তান শুধু দেশের অভ্যন্তরেই নয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রুখতে সক্ষম হয়েছে। একইসঙ্গে জাফর এক্সপ্রেসে হামলা ও খুজদারের স্কুলে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় হতাহতের জন্য পাকিস্তানের প্রতি সমবেদনা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা। কারণ, পহেলগাঁও হামলার পর থেকেই ভারত-পাক সম্পর্ক কার্যত তলানিতে ঠেকেছে। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মাধ্যমে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে একাধিক জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংসের দাবি করেছে ভারত।
দিল্লির অবস্থান পরিষ্কার-পাকিস্তানের মাটিতে জঙ্গি সংগঠনগুলোর নিরাপদ আশ্রয় রয়েছে এবং পাক প্রশাসনের মদতেই তারা সক্রিয়। অন্যদিকে ইসলামাবাদ বরাবরই এই অভিযোগ নস্যাৎ করে জানিয়ে আসছে, সন্ত্রাসবাদে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত এবং জঙ্গিদমনে সক্রিয় অভিযান চালাচ্ছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রর এই প্রশংসা ভারতের জন্য কূটনৈতিক চাপ তৈরি করছে। কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্যচুক্তি ও শুল্কসংক্রান্ত ইস্যুতে দিল্লি ওয়াশিংটনের সম্পর্কেও অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির কারণে ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প, অন্যদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে খনিজ তেল চুক্তি করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করছে যুক্তরাষ্ট্র। এই সময়েই পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের পরমাণু হুমকি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রর মাটিতে দাঁড়িয়ে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, পাকিস্তান পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র এবং যদি তারা ধ্বংসের পথে যায়, তবে অর্ধেক বিশ্বকে সঙ্গী করে ধ্বংস হবে। যদিও ওয়াশিংটন এই মন্তব্যে সরাসরি প্রতিক্রিয়া জানায়নি, ভারত তীব্র নিন্দা করেছে এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় সব পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে। এদিকে, মার্কিন প্রশাসন সম্প্রতি বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি ও তার সহযোগী মজিদ ব্রিগেডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এই প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের প্রশংসা কেবল দ্বিপাক্ষিক নয়, বৃহত্তর কৌশলগত প্রেক্ষাপটেও তাৎপর্যপূর্ণ। আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রর ঘনিষ্ঠতা কি নয়া পরীক্ষার মুখে? নাকি পাকিস্তান এই সুযোগে নিজেকে নতুন করে বিশ্বমঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে? পরিস্থিতি কোনো দিকে মোড় নেবে, তা এখনই বলা মুশকিল, তবে কূটনৈতিক সমীকরণ বদলের ইঙ্গিত স্পষ্ট।