Google Alert – সামরিক
পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি কেবলমাত্র জাতীয় প্রতিরক্ষার জন্য বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তিনি বলেছেন, এর পেছনে কোনও প্রকার ব্ল্যাকমেইল বা বল প্রয়োগের উদ্দেশ্য নেই। শুক্রবার তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, আমরা আমাদের পারমাণবিক সক্ষমতা দিয়ে কাউকে হুমকি দিই না। এটি শুধুমাত্র আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য প্রস্তুত করা। এসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, মোদি এখন পাকিস্তান ও এর সামরিক বাহিনীকে স্বপ্নেও দেখেন। তার কাছে যুদ্ধের ধারণাটি দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। খাজা আসিফ বলেছেন, পাকিস্তান আত্মরক্ষায় যুদ্ধ করেছে এবং জয়লাভও করেছে। যেখানে মোদি খোদ ভারতেই এক ভিন্ন ধরনের সংঘাতের মুখোমুখি। ভারতের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ভিন্নমত রয়েছে। যেখানে দেশটির নাগরিক এবং বিরোধীদলীয় নেতারাও এই বিষয়ে একমত প্রকাশ করেছেন যে, মোদির মনোভাবই এই অঞ্চলকে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। চলতি বছরের মে মাসে সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে ভারত ও পাকিস্তান। এপ্রিলে ভারতের পেহেলগাঁওয়ে হামলাকে কেন্দ্র করে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে প্রতিবেশী এই দুই দেশ। এর প্রেক্ষিতে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। এর জবাবে বৃহৎ পরিসরের সামরিক অভিযান পরিচালনা করে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। যার নাম দেওয়া হয় বুনিয়ান-উম-মারসুস। এর মাধ্যমে একাধিক ভারতীয় সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়। ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে পাকিস্তান। এর মধ্যে রাফাল ও কয়েক ডজন ড্র্রোন ছিল। ৮৭ ঘণ্টার যুদ্ধের পর ১০ মে দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে প্রথম ঘোষণা দেন। তবে ভারত ট্রাম্পের মধ্যস্তায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দিয়েছে এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছে। এদিকে মোদির নেতৃত্বের সমালোচনা করে খাজা আসিফ বলেছেন, মোদির ব্যর্থতা ভারতের বিরোধী দলের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। বিরোধীরা এখন মোদির ভুলকে কাজে লাগাচ্ছে। নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এনে খাজা আসিফ ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ও আন্তর্জাতিক মহলে সন্ত্রাসবাদে মদতের অভিযোগ এনেছেন। অপর এক খবরে বলা হয়, উত্তর পাকিস্তানে টানা ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২১ জনে দাঁড়িয়েছে। জানা গেছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় অন্তত ৩২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ১৫ জন নারী ও ১৩ জন শিশু রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ২৩ জন। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ৯ জন এবং উত্তরাঞ্চলীয় গিলগিত-বালতিস্তানে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া খারাপ আবহাওয়ার কারণে শুক্রবার একটি সরকারি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে দুই পাইলটসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়, শুধু খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে ৩০৭ জন মারা গেছেন। তাদের অধিকাংশই আকস্মিক বন্যা ও বাড়িঘর ধসে প্রাণ হারিয়েছেন বলে এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রায় দুই হাজার উদ্ধারকর্মী ৯টি জেলায় উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন বলে প্রাদেশিক উদ্ধার সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে। কিন্তু এখনো বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় কাজ ব্যাহত হচ্ছে। উদ্ধার সংস্থার মুখপাত্র বিলাল আহমেদ ফয়েজি বলেন, ত্রাণ সরবরাহ অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠেছে। ভারি বৃষ্টিপাত, বিভিন্ন স্থানে ভূমিধস ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার কারণে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ভারী যন্ত্রপাতি ও অ্যাম্বুল্যান্স পরিবহন করা যাচ্ছে না। অধিকাংশ জায়গায় সড়ক বন্ধ থাকায় উদ্ধারকর্মীরা হেঁটে দুর্গম এলাকায় পৌঁছচ্ছেন। জীবিতদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টার করলেও অনেকেই যেতে চাইছেন না। তাদের স্বজনরা এখনো ধ্বংসস্তূপে আটকে রয়েছেন। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রাদেশিক সরকার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ছয়টি পাহাড়ি জেলা— বুনের, বাজউর, সোয়াত, শাংলা, মানসেহরা ও বাত্তাগ্রামকে দুর্যোগাক্রান্ত এলাকা ঘোষণা করেছে। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে আরো ভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে। এ ছাড়া জনগণকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার প্রতিনিধি সৈয়দ মুহাম্মদ তায়্যব শাহ বলেন, ‘এ বছরের বর্ষা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় আগে শুরু হয়েছে এবং দেরিতে শেষ হবে। আগামী ১৫ দিনে বর্ষার তীব্রতা আরো বেড়ে যাবে।’ বুনের জেলার বাসিন্দা আজিজুল্লাহ এএফপিকে বলেন, ‘আমি হঠাৎ পাহাড় ধসে পড়ার মতো শব্দ শুনলাম। বাইরে গিয়ে দেখি পুরো এলাকা কাঁপছে। মনে হচ্ছিল পৃথিবীর শেষ দিন এসে গেছে। পানি এত জোরে প্রবাহিত হচ্ছিল যে মাটি কেঁপে উঠছিল। তখন মনে হচ্ছিল মৃত্যুই সামনে দাঁড়িয়ে আছে।’ জিও টিভি, পাকিস্তান টুডে, এএফপি।