Google Alert – পার্বত্য চট্টগ্রাম
পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি সমস্যা সমাধানে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশনকে সক্রিয় করাসহ ৩ দফা দাবি ও ৫ দফা সুপারিশ জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলন।
সোমবার (১৮ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শরিফুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি সমস্যা নিরসনের লক্ষে ভূমি কমিশন সক্রিয়করণ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ দাবি ও সুপারিশ জানানো হয়।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভূমি কমিশনের বিধিমালা প্রণয়ণ, ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ, পর্যাপ্ত জনবল, তহবিল ও পরিসম্পদ বরাদ্দকরণ এবং এই কমিশনের আইন সম্পর্কে জনগণকে যথাযথ ধারণা দেওয়া, পাহাড়ের প্রচলিত রীতি, নীতি, পদ্ধতি সম্পর্কে প্রথাগত প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি সংক্ষুব্দ ব্যক্তিদের সচেতন করা।
ভূমি কমিশনের কার্যক্রমকে যথাযথভাবে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আন্দোলনের সুপারিশগুলো হচ্ছে-পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সম্পর্কে জনগণকে যথাযথ ধারণা দেওয়া, ভূমি বিরোধের নিষ্পত্তি চেয়ে আবেদনপত্র লেখা ও দাখিল করার ক্ষেত্রে সহায়তা দেওয়া, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন, রীতি ও পদ্ধতি সম্পর্কে প্রথাগত প্রতিষ্ঠান, জনপ্রতিনিধি ও সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের সচেতন করা, সংক্ষুব্ধ, ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের আইনি, কারিগরি ও লজিস্টিক সহায়তা দেওয়া এবং ভূমি কমিশনের কার্যাবলি সম্পর্কে কায়েমী স্বার্থান্বেষী মহলের নানা অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা।
সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হচ্ছে ভূমি। পাহাড়ে আবাদযোগ্য ভূমির পরিমাণ এমনিতেই কম। আর পাহাড়ে ১৯৭৯ সাল থেকে দেশের সমতল জেলাগুলো থেকে কমপক্ষে চার লক্ষাধিক বহিরাগত লোক নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের জুম্মদের ভোগ-দখলীয় ও রেকর্ডি জমির ওপর বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। নানা ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতার মাধ্যমে জুম্মদের উচ্ছেদ করে জমিগুলো বেদখল করে নেওয়া হয় প্রচলিত আইন ও প্রথা লঙ্ঘন করে। তাই পাহাড়ের ভূমি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে একটি জলন্ত অগ্নিকাণ্ড।’
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক বজলুল রশীদ ফিরোজ, ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ তারেক, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার শামসুল হুদা।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী খায়রুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা বিচ্ছিন্ন কোনও সমস্যা নয়। এটা একটি রাজনৈতিক সমস্যা। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পার্বত্য চট্টগ্রামের সংকট যদি এই সরকার আমলে না নেয় তবে আগামীর যে সংকট আসবে সেটা কেউই ঠেকাতে পারবেন না। কাজেই এ সংকট সমাধানে রাজনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া ছাড়া কোনও বিকল্প নেই।’