পাহাড়ি ঢল ও মেঘ বিস্ফোরণে পাকিস্তানে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

Google Alert – পার্বত্য অঞ্চল

ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ। পানির তোড়ে প্রায় নিশ্চিহ্ন বুনের এলাকার বেশন্ত্রী গ্রাম। যেখানে মৃতের সংখ্যা এতোটাই বেশি যে, দাফনে শামিল হওয়ার মতো লোকও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় কাজ করছে পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকার উদ্ধারকারী দল।

সেখানকার পাহাড়ি ঢল তেড়েফুড়ে ছুটছে লোকালয়ের দিকে। সামনে যা পাচ্ছে তাই খড়কুটোর মতো ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পানির ভয়াবহ রূপ আতঙ্ক ছড়াচ্ছে চারদিকে। মেঘ বিস্ফোরণে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বহু অঞ্চলে তৈরি হয়েছে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি।

বন্যায় এ পর্যন্ত ৩শ’রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ২ শতাধিক পুরুষ। শিশু ও নারীর সংখ্যাও শতাধিক। বন্যায় প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বেশন্ত্রী গ্রাম। পরিস্থিতি এতোটাই খারাপ মৃতদের দাফনে শামিল হওয়ার মতো মানুষও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

অবস্থা এতোটাই খারাপ হয়েছে যে, এক বাড়িতে একসাথে ১৭ জন মানুষ মারা গেছে। ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৩ জন এখনও নিখোঁজ। আরেক পরিবারের একসাথে ৮ সদস্য মারা গেছে। অনেক মানুষের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা।

বন্যায় প্রায় বিলীন হয়ে গেছে খাইবার পাখতুনখোয়ার সোয়াত, বাজাউর, তোরঘর, মানসেহরা, শাংলাসহ বহু অঞ্চলের অন্তত ৭৪ বসতবাড়ি। এর মাঝে ৬৩ টি আংশিক একং ১১টি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়েছে।

স্থানীয় একজন বলেন, আমি প্রতিদিনের মতো কাজে যাচ্ছিলাম। পথে দেখি ধেয়ে আসছে পানি। চারদিক থেকে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার শুরু করেছে মানুষ। অনেকেই পাহাড় বেয়ে অন্যপাশে যাওয়ার চেষ্টা করছে। দেখলাম, মুহূর্তেই ৩-৪ টি বাড়িঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলো।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করছে ২ হাজারেরও বেশি উদ্ধারকারী। অবস্থা সামাল দিতে পাকিস্তানের অন্যান্য প্রদেশ থেকেও অংশ নিয়েছে নিরাপত্তা ও উদ্ধারকারী বাহিনীর সদস্যরা।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাচ্ছে জরুরি বিভাগের সদস্যরা। ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে চলছে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ। দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলোয় হেলিকপ্টারের সাহায্যে চলছে উদ্ধার কার্যক্রম। প্রতিকূল আবহাওয়ার কবলে পড়ে ৫ যাত্রীসহ বিধ্বস্ত হয়েছে একটি উদ্ধার-হেলিকপ্টারও।

সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, গেল এক মাসে পাকিস্তানে গড়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এজন্য দায়ী করা হচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতাকে।

উল্লেখ্য, আবহাওয়া বিভাগের সংজ্ঞা অনুসারে, যদি একটি ছোট এলাকায় (এক থেকে দশ কিলোমিটারের মধ্যে) এক ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার বা তার বেশি ভারী বৃষ্টিপাত হয়, তাহলে এই ঘটনাকে ‘মেঘের বিস্ফোরণ’ বা মেঘভঙা বৃষ্টি বলা হয়।

/এমএইচআর

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *