পাহাড়ে সশস্ত্র গোষ্ঠী নিষিদ্ধের দাবিতে চবিতে বিক্ষোভ

Google Alert – সশস্ত্র

খাগড়াছড়িতে সংঘটিত ধর্ষণের ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার ও পাহাড়ের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

 

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় চবির জিরো পয়েন্ট মোড়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের সচেতন ছাত্র সমাজ ব্যানারে এ কর্মসূচি আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা।

 

খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর উপর পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর গুলিবর্ষণ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির প্রতিবাদ জানান সমাবেশে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা। এসময় অবিলম্বে ইউপিডিএফসহ পাহাড়ের সকল সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধের দাবি করা হয়। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘোষিত অবরোধ চলাকালে পাহাড়ি সংগঠন ইউপিডিএফ সশস্ত্র হামলা চালায়। তারা নিরীহ জনতা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর গুলি ছুঁড়ে। পাশাপাশি একাধিক ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা চালায়, দোকান লুটপাট ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উসকে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। শিক্ষার্থীরা ইউপিডিএফসহ পাহাড়ের সকল সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। শিক্ষার্থীরা জানান, ধর্ষণসহ যে কোনো অপরাধের ঘটনাকে স্থানীয় জনগণ ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর মাধ্যমে সুন্দরভাবে সমাধান করা যায়। তবে সেখানে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এসব অপরাধের ঘটনাকে পুঁজি করে নিজেদের অনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য তীব্র সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টি করেছে।

 

বিক্ষোভ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মাসুদ বলেন,“সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে সংঘটিত ধর্ষণের ঘটনায় সারা দেশে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমরা সবাই চাই, ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হোক। তবে দুঃখজনকভাবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উসকে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের সচেতন শিক্ষার্থীরা বলতে চাই, ধর্ষণের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় সোচ্চার, একইসঙ্গে এসব সন্ত্রাসী সংগঠনকে অবিলম্বে নির্মুল ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।”

 

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়ব আহমেদ সিয়াম বলেন, “৫৬ হাজার বর্গমাইলে আমাদের বাংলাদেশ। আমরা এর মধ্যে কোন বিভেদ দেখতে চাই না। পাহাড় যেমন আমাদের, সমতলও আমাদের। পাহাড়-সমতল সব জায়গায় সমান আইন চলতে হবে। অপরাধী যেই হোক, অবশ্যই আইনগতভাবে তার শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”

 

তিনি আরও বলেন, “আমরা যারা এদেশে থাকি আমরা সবাই বাংলাদেশি। এর বাহিরে আমাদের আর কোন পরিচয় মুখ্য নয়। পাহাড়ে কিছুদিন পরপর বিভিন্ন অপরাধকে ইস্যু করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকে আমরা মেনে নেব না। পেছন থেকে যেসব সন্ত্রাসী-গোষ্ঠী এসব সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির কলকাঠি নাড়ছে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে জোর প্রতিবাদ জানাই।”

 

এর আগে, খাগড়াছড়ির সিঙ্গিনালা এলাকায় ২৩ সেপ্টেম্বর এক মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে উত্তেজনা ছড়ায়। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার হলেও বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে স্থানীয় ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী সংগঠনগুলো অবরোধ ডাক দেয়। অবরোধ চলাকালে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী ও স্থানীয় বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত তিনজন নিহত হওয়ার খবর মিলেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *